অল্প বয়সী তরুণীদের দুবাই নিয়ে দেহব্যবসায় বাধ্য করত আজম

আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের হোতা মোহাম্মদ আজম খান এবং তার দুই সহযোগী আনোয়ার হোসেন ময়না ও আলামিন হোসেন ওরফে ডায়মন্ডকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

দুবাই ড্যান্স ক্লাবে আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের হোতা মোহাম্মদ আজম খান এবং তার দুই সহযোগী আনোয়ার হোসেন ময়না ও আলামিন হোসেন ওরফে ডায়মন্ডকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শনিবার রাতে সিআইডির অরগানাইজড ক্রাইম শাখার একটি টিম বিশেষ অভিযান চালিয়ে রাজধানী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।

সিআইডির অরগানাইজড ক্রাইম শাখার ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ রবিবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয় সংবাদ সম্মেলন এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, আজম খান গত আট বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে অল্প বয়সী তরুণীদের দুবাইয়ের হোটেলে মোটা অংকের টাকা বেতনে কাজের লোভ দেখিয়ে নিয়ে যেতো।

জানা গেছে, দুবাইয়ে আজম খানের চারটি হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি চার তারকা হোটেল ও একটি তিন তারকা হোটেল।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আজম খান জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে যে, সে ওই সব হোটেলে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে সহস্রাধিক তরুণীকে নিয়ে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করেছে।

ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, এই চক্রের বাংলাদেশে অন্তত ৫০ জন রয়েছে যারা বিভিন্ন এলাকা থেকে তরুণীদের সংগ্রহ করতো।

সম্প্রতি দুবাই সরকার আজম খানকে দেহব্যবসা করানোর অপরাধে আটক করে। সেখানে এক মাস জেল খেটে বের হওয়ার পর দুবাইয়ের বাংলাদেশ দূতাবাসে থেকে আজম খানের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

দেশে এসে আজম খান নতুন পাসপোর্ট করে অন্য কোনো দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলে জানান ইমতিয়াজ আহমেদ।

তিনি আরও বলেন, অল্প বয়সী তরুণীদের হোটেলে ৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিনা খরচে তাদের দুবাই নিয়ে যেতো আজম খান। এক্ষেত্রে তরুণীদের অগ্রিম ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দিতো।

দুবাই যাওয়ার পর প্রথমে তাদের ডান্স বারে নাচতে বাধ্য করতো আজম খান। পরবর্তীতে জোর করে দেহব্যবসা করাতো।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আজম খানের মোবাইলে এমন অনেক ভুক্তভোগী তরুণীর কান্নাকাটি ও আহাজারির অডিও রেকর্ড পাওয়া গেছে যা খুবই মর্মস্পর্শী।

আজম খানের দুই ভাই এখনো দুবাইয়ে রয়েছে। তারা তার এই অবৈধ ব্যবসার সহযোগী।

পুরো বিষয়টি সিআইডি তদন্ত করছে। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, রাজধানীর লালবাগ থানায় গত ২ জুলাই সিআইডি বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। দেশের বিভিন্ন থানায় আজম খানের বিরুদ্ধে ছয়টি হত্যা মামলাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।

পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত হয়ে দেশে এসে কীভাবে আজম খান ঘুরে বেড়ালেন এবং নতুন পাসপোর্ট করলেন- এমন প্রশ্নে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, দুবাইয়ের দূতাবাস থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আজম খানের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে দেশে পাঠানোর বিষয়টি জানানো হয়নি।

দেশদর্পণ/আক/কাক/এমএআর