নবীনগরে চেয়ারম্যানের দুর্নীতির তদন্তে গড়িমসির অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু মুছার নামে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে টাকা না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শ্রমিকের মোবাইলে টাকা উত্তোলনের মেসেজ যাবার পর টাকা চাইতে গিয়ে দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছে শ্রমিকরা। শ্রমিকের তালিকায় নাম ভুক্তদের মাঝে প্রবাসীদরের নাম আছে এমন অভিযোগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের ইউপি চেয়ারম্যান আবু মুছার বিরোদ্ধে উঠার পর তদন্ত কমিটি তৈরী করা হয়। এবার অভিযোগ উঠেছে তদন্ত কমিটির তদন্ত নিয়ে গড়িমসি করা হচ্ছে, নানা অজুহাতে তদন্ত প্রতিবেদন দিচ্ছেনা কমিটি।

নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু মুছার বিরুদ্ধে গত ২ জুন জেলা প্রশাসক বরাবর হতদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্যে সরকারের গৃহিত ৪০ দিনের কর্মসূচির টাকা আত্বসাতের লিখিত অভিযোগ হয়। কর্মসূচিভূক্ত পাঁচ শ্রমিক জাফরপুর গ্রামের আলাউদ্দিন, আক্তার, রেজাউল করিম, আবুল হোসেন এবং এরশাদ এই অভিযোগটি দাখিল করেন।

জেলা প্রশাসক অভিযোগের তদন্ত করে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ৯ জুন নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দেন, এক মাস পেড়িয়ে গেলেও জমা হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু মাসুদকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করেন, কমিটির অন্য দু’সদস্য হচ্ছেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকাররম হোসেন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু বক্কর।

অভিযোগ মিলেছে, “তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ২১ জুন অভিযোগকারীদের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে তদন্ত করতে যান ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদে, সেখানে গিয়ে অভিযোগকারীদের ডেকে পাঠান কিন্তু চেয়ারম্যান তার সন্ত্রাসী দলবলসহ কয়েক’শ লোক নিয়ে তদন্তস্থলে অবস্থান নেয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় তদন্ত কমিটির সামনে আসতে পারেননি অভিযোগকারীরা। ”
পরে ২৩ জুন গ্রামের সুফিয়াবাদ শাহ সুফি সাইয়্যেদ আজমত উল্লাহ (রহ.) সিনিয়র মাদরাসায় তদন্তের স্থান নির্ধারণ করে তদন্ত সম্পন্ন করা হয় কিন্তু গত দুই সপ্তাহেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি তদন্ত কমিটি।

চেয়ারম্যান আবু মুছার বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগে বলা হয় “হতদরিদ্রদের সহায়তায় সরকার টাকা দেবে বলে অভিযোগকারী পাঁচজনসহ ৯৪ জনের নামে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের ইব্রাহিমপুর এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় হিসাব (অ্যাকাউন্ট) খোলা হয়,” গত ৬ এপ্রিল তাদের প্রত্যেকের হিসাবে আট হাজার টাকা করে জমা হওয়ার ম্যাসেজ আসে তাদের মোবাইলে, পরদিন সকালে চেয়ারম্যানে ব্যাংক কর্মচারীসহ তাদের বাড়িতে এসে মেশিনে তাদের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে যান এবং কয়েকদিনের মধ্যে টাকা পাওয়ার আশ্বাস দেন, কিন্তু টাকা পাননি এখনও কেও।
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আবু মুসার সাথে একাধিক বার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি।

কর্মসূচিভূক্ত একজন শ্রমিক প্রতিদিন ২০০ টাকা করে পান। এ হিসেবে ৪০ দিনে একজনের মোট পাওনা হয় আট হাজার টাকা, নভেম্বর – ডিসেম্বর ও এপ্রিল – মে মাসে এই কর্মসূচি হয়।

তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু মাসুদ আজ ১১ই জুলাই দেশ দর্পণ কে জানান, “১৬ জুন তাদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, তিন কার্য দিবসের মধ্যে আমাদেরকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল, জুন ক্লোজিং এবং অফিসে কর্মচারী না থাকায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারিনি।”

দেশদর্পণ/আক/কাক/এমএআর