সাগর উপকূলীয় রাঙ্গাবালীর সড়কে নেই উন্নয়নের ছোঁয়া

পটুয়াখালীর সাগর উপকূলীয় রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নে অধিকাংশ সড়কই কাঁচা। দীর্ঘ দিনেও সড়কে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া পরেনি। যার ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই কাঁদা মাটিতে একাকার হয়ে যায় মাটির রাস্তাগুলো। আর এ কারণে ভোগান্তিতে রয়েছে ওই ইউনিয়নের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ।

রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর থেকে কলাপাড়া উপজেলায় যেতে বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের গাইয়াপাড়া লঞ্চঘাট পর্যন্ত একটি মাত্র রাস্তা। খালগোড়া বাজার খেয়াঘাট থেকে চরগঙ্গা ক্লোজারের উপর দিয়ে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে গাইয়াপাড়া লঞ্চঘাটে গিয়ে রাস্তাটি শেষ হয়। অপর দিকে ক্লোজারের পশ্চিম পার দিয়ে এই রাস্তা থেকে অপর একটি রাস্তা কাটাখালী গ্রাম হয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে বড়বাইশদিয়া এ হাকিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত পৌছেছে। এই দুটি রাস্তাই ইউনিয়নের ব্যস্ততম রাস্তা। প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এই রাস্তায় চলাচল করে। দীর্ঘ কয়েক যুগ আগে নির্মিত এই মাটির রাস্তা কখনো সংস্কার হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

তবে চলতি বছর রাঙ্গাবালী সরকারী কলেজ সংলগ্ন সাইক্লোন সেল্টার নির্মিত হওয়ায় ঐ প্রকল্পের অংশ হিসেবে খালগোড়া খেয়াঘাট থেকে শুরু করে ২ কিলোমিটার কানেকটিং রোড হিসেবে পাকা করা হয়। বাকি প্রায় ৬ কিলোমিটার এখোনো বেহাল অবস্থার মধ্যেই পড়ে আছে।

স্থাণীয়রা জানান, শুকনো মৌসুমে যাতায়াত ব্যবস্থা ভাড়ায় চালিত মটরসাইকেল ও টমটম ব্যবহার হয়। অনেক কষ্টে ভাঙ্গাচুড়া রাস্তায় বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করে এলাকার মানুষ। বর্ষা শুরু হলে বন্ধ হয়ে যায় ওই সব বাহন। মানুষকে চলাচল করতে হয় পায়ে হেঁটে। সামান্য বৃষ্টির হলে কাঁদা মাটিতে একাকার হয়ে যাতায়াত অযোগ্য হয়ে পরে রাস্তাগুলো। ইউনিয়নের চারিদিকে ওয়াপদার বেরিবাধ থাকলেও মেরামতের অভাবে মাঝেমাঝে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে বৃষ্টির পানি জমে থাকে। উচ্চতার দিক দিয়েও তা যথেষ্ট নয়। মাঝেমাঝে এতো নিচু যে, প্রাকৃতিক যে কোন দুর্যোগে, স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি একটু বেশি হলে তলিয়ে যায় বেরিবাঁধ। লোনা পানি ঢুকে যায় ফসলি জমিতে। যেমনটা ঘটেছিল ঘুর্নিঝর আম্ফানেও। চরগঙ্গা বাজারের রাস্তায় নির্মিত সুইস গেটের দু’পাশে অন্তত ৩০০ মিটারের মতো রাস্তা তলিয়ে পানি ঢুকে যায় গোটা এলাকায়।

স্থানীয় সমাজ সেবক তোতা মিয়া জানান, দীর্ঘ দিনেও রাস্তা উন্নয়ন বা সংস্কার করা হয়নি। বৃষ্টি হলে রাস্তার অবস্থা নদীর মতো হয়ে যায়। দুর থেকে তাকালে নদী মনে হয়। রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে মানুষ চলাই কঠিন। রাস্তার বেহাল দশার কারণে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের চরম কষ্টে প্রতিষ্ঠানে যেতে হচ্ছে। এ যেন ভোগান্তির শেষ নেই। রাস্তাটি উন্নয়ন বা সংস্কার হলে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষার্থী সহ সর্বস্তরের মানুষ চলাচলের পথ সুগম হবে। অপর দিকে লোনা পানি থেকে রক্ষা পাবে ফসলি জমি।

বড়বাইশদিয়া ইউপি সদস্য মো.সোনা মিয়া জানান, রাঙ্গাবালী এবং কলপাড়া উপজেলায় যাতায়াত করতে হয় বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে। এখানের রাস্তাঘাট অনুন্নত থাকায় এই উপজেলার মানুষকে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা ও সোনারচর যেতে হয় এই পথ দিয়ে। এদিকে বড়বাইশদিয়ার অপর পাশেই পায়রা সমুদ্র বন্দর। সেখানে যেতে হলেও এই পথ পারাতে হয়। সব দিক বিবেচনায় এই সড়কগুলো অতিদ্রুত সড়ক উন্নয়ন করা দরকার।