‘লুটপাটকারী-ধনী-আমলা স্বার্থরক্ষার’ বাজেট প্রত্যাখ্যান বিএনপির

চলতি অর্থবছরের বাজেট লুটপাটকারী, ধনিকশ্রেণি ও আমলাতন্ত্র-নির্ভর অর্থনৈতিক দর্শনের আলোকে প্রস্তুত এবং এতে তাদেরই স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে অভিযোগ করে এই বাজেট প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার অনলাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাজেট বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে, বুধবার বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্যরা জাতীয় সংসদের সামনে বাজেটের কপি ছিঁড়ে ফেলে প্রতিবাদ করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জনগণের কাছে ন্যূনতম জবাবদিহিতাহীন, আমলাচালিত, ক্রোনি ক্যাপিটালিস্ট সরকারের কাছে এমন বাজেটই প্রত্যাশিত। এই বাজেট আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।’ তার মতে, এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য, কৃষি, এসএমই, গ্রামীণ অর্থনীতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জীবন-জীবিকা রক্ষায় প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছে। ফলে এদেশের জনগণের মাঝে সীমাহীন হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এবারের বাজেট করোনার সময়ে বীভৎস স্বাস্থ্য সংকটে পড়া মানুষের নাভিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দেওয়ার বাজেট। এই বাজেট করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া কোটি কোটি অনাহারী মানুষকে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ঠেলে দেওয়ার বাজেট।’

তিনি বলেন, ‘এই সরকার বাংলাদেশকে একটি লুটেরা আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চলেছে। এ বাজেট লুটপাটকারী, ধনিকশ্রেণি ও আমলাতন্ত্র-নির্ভর অর্থনৈতিক দর্শনের আলোকে প্রস্তুত হয়েছে এবং এতে তাদেরই স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খসড়া বাজেট পেশের পর ১২ জুন আমরা এ বিষয়ে আমাদের অভিমত জানিয়েছিলাম। কিন্তু অর্থমন্ত্রী পাসকৃত বাজেটে সাধারণ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা, চাওয়া-পাওয়া এবং আমাদের সুপারিশের কোনো মূল্যায়ন করেনি।’

করোনা চিকিৎসার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার বলেছিল কভিড-১৯ আক্রান্ত হলে সে একজন সরকারি রোগী। ধনী-গরিব নির্বিশেষে প্রত্যেককে বিনামূল্যে করোনা টেস্ট করা হবে। বেসরকারি ল্যাবরেটরিগুলোতে বিনামূল্যে পিসিআর পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে এ শর্তে যে তারা রোগীদের কাছ থেকে কোনো ফি নেবে না।’

‘অথচ সংক্রমণ যখন বৃদ্ধি পেল এমন এক মোক্ষম সময়ে এসে সরকার করোনা টেস্ট ফি ২০০ ও ৫০০ টাকা নির্ধারণ করেছে। সরকার পরিচালনাধীন ল্যাবরেটরিতে এ জাতীয় ফি আদায় সারা বিশ্বেই বিরল। দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশই সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে করোনা পরীক্ষার জন্য কোনো ফি নেয় না। এমনকি নেপালে সরকারিভাবে পরীক্ষার ব্যয় বহন করা হচ্ছে’ যোগ করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শুধু তাই নয়, বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিটি করোনা টেস্টের জন্য নেপাল সরকারই ৫,৫০০ টাকা পরিশোধ করছে। অথচ আমাদের দেশে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা টেস্ট ব্যয় জনপ্রতি ৩৫০০ টাকা; বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে ৪,৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়। কি অমানবিক সরকার এটি তার একটি উদাহরণ মাত্র।’

জুলাই ০২, ২০২০ at ১৪:৪৬:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেরু/এমএআর