পাটকল বন্ধের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ

পাটকল বন্ধ ও শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে পাটকল বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাহার করে এই শিল্পকে বাঁচাতে পাটকলগুলোর আধুনিকায়নে বিনিয়োগ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার (১ জুলাই) নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি এডভোকেট আবু হানিফ, সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, আমিন পাটকল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, ছাত্রমৈত্রী কেন্দ্রীয় সভাপতি ফারুক আহমেদ রুবেল, হাফিজ জুটমিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন সভাপতি নূর মোহাম্মদ মিলন প্রমুখ।

সমাবেশে ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যুদয় সংগ্রামের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ পাট ও পাটকল। নির্বাচনী ঘোষণায় বন্ধ পাটকল চালুর কথা বলা হয়েছিল। সেই ওয়াদা থেকে সরে এসে পাটকল বন্ধ করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের নামে যে প্রহসনের কথা বলা হচ্ছে তা আদমজীসহ কোথাও অতীতে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমান বৈশ্বিক মহামারীকালে শ্রমিকদের ছাটাই করার সিদ্ধান্ত অমানবকি। পাটকলগুলোতে লসের জন্য যেসব কর্মকর্তারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুন করে বিনিয়োগের মাধ্যমে পাটকলগুলোতে আধুনিকায়ন করা হলে সবগুলোই লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।’

ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান বলেন, ‘জাতীয়করণ করা পাটকলগুলোর বিপুল সম্পদ ও জমিতে অনেকের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে। এসব রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করতে লুটপাটকারীরা মুখিয়ে আছে। পিপিপি’র নামে এ সম্পদ লুটের চক্রান্ত চলছে।’

জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘পাট ক্রয়ে দুর্নীতি, মৌসুমে পাট সরবরাহে অনিয়ম, অসময়ে বেশি দামে পাট ক্রয়, উৎপাদিত পাটপণ্য বিক্রয়ে ব্যার্থতা বিজেএমসির মাথাভারী প্রশাসনের। পাটকল শ্রমিক ছাটাই নয়, বিজেএমসির মাথাভারী প্রশাসন ছাটাই করা জরুরী। দুর্নীতি লুটপাট ও ভুল নীতির দায় পাটকল শ্রমিকরা নিবে না। উন্নত আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজনের জন্য ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলে পাটশিল্প আবার বিকশিত হবে।’

জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘যখন মৌসুমে ১২০০ টাকা মণ দরে কাঁচা পাট কেনার কথা তখন বিজেএমসির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা পাট কেনে না। যখন মণ ৩০০০ টাকা হয় তখন তারা পাট কেনে। তাদের লুটপাটের দায় শ্রমিকরা কেন নেবে? যাদের জন্য পাটশিল্প লোকসানি খাতে পরিণত হলো তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে পাটকল বন্ধ করে কথিত গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের নামে শ্রমিকদের বিদায় করা অন্যায়।’

বক্তারা বলেন, ‘২৫টি পাটকল বন্ধ ও শ্রমিক ছাটাইয়ের সিদ্ধান্ত বেসরকারি মালিকদের উৎসাহিত করবে। তারাও স্থায়ী শ্রমিকদের ছাটাই করে অস্থায়ী শ্রমিকদের নিয়োগ করবে। যা এই শিল্প খাতে অস্থির অবস্থার সৃষ্টি করবে এবং শ্রমিকদের মনে ক্ষোভ-বিক্ষোভের জন্ম দিবে।’

বক্তব্য রাখেন, ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি আবু হানিফ, সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জসিম উদ্দিন, আমিন পাটকল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, ছাত্রমৈত্রী কেন্দ্রীয় সভাপতি ফারুক আহমেদ রুবেল ও হাফিজ জুটমিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন সভাপতি নূর মোহাম্মদ মিলন।