ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান মারা গেছেন

দেশ প্রতিবেদক: দেশের অন্যতম বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ ট্রান্সকমের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বার্ধক্যজনিত রোগে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার তানভীর সোহেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুকালে বিশিষ্ট এ ব্যবসায়ী স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, লতিফুর রহমানের মরদেহ ঢাকায় আনা হবে। গুলশানের আজাদ মসজিদে বাদ এশা তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রাতেই বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

মিডিয়াস্টার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক লতিফুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তথ্যমন্ত্রী।

লতিফুর রহমান দুই বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন বলে জানা গেছে। আর বেশিরভাগ সময়ই তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাড়িতে থাকতেন।

তিনি এমন দিনে মারা গেলেন, যেদিন তার নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারাজ হোসেন ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত হন।

লতিফুর রহমান প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার অন্যতম মালিক। এছাড়া আন্তর্জাতিক ফুড চেইন পিৎজা হাট ও কেএফসি, পেপসি এবং ফিলিপসের বাংলাদেশে ফ্রাঞ্চাইজির মালিক ছিলেন তিনি।

লতিফুর রহমান ১৯৪৫ সালের ২৮ আগস্ট বর্তমান ভারতের জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকায় গেন্ডারিয়ায় থাকতেন।

তিনি পড়াশোনার শুরু করেন সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। সেখান থেকে ১৯৫৬ সালে শিলংয়ের সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে। তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। ১৯৬৫ সালে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান।

ঢাকায় এসে ১৯৬৬ সালে ডব্লিউ রহমান জুট মিল ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন। দেড় বছর কাজ শেখার পর নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। এভাবে কাজ করেন ১৯৭১ সাল পর্যন্ত।

পরে ১৯৭২ সালে তিনি সবকিছু নতুন করে শুরু করেছিলেন প্রায় শূন্য হাতে। নিজের হাতে তৈরি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রুপ ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন।

ট্রান্সকম গ্রুপে এখন কাজ করছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা, সুনাম আর সততার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে তিনি পান বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে নোবেল বলে খ্যাত।