আদা জল খেয়ে লাগা; সে আরেক কলংক!

আদা জল খেয়ে লাগা মানে উঠে পড়ে লাগা। গাঁট বোকছা বেঁধে আঁটি শাটি করে লাগা।পৃথিবীর অপরিচিত লোক কখনও কারো শত্রু হয় না।অপরিচিত লোক হয়ত সুযোগ পেলে অন্যের জিনিস চুরি,ছিনতাই করে।মানে সম্পত্তি ভোগ করতে কেড়ে নেয়।কিন্তু তারা সম্পদ নষ্ট করে না।অভাব বা প্রলোভনে অন্যের ক্ষতি করে।

প্রতিটা মানুষের শত্রুর পরিসংখ্যান গুনে দেখা যায় তাদের মধ্যে ৯৯জন ই পুর্বে বন্ধু ছিল। তথাকথিত বন্ধুরাই নিজের চেয়ে অন্যের যোগ্যতা বেশি দেখলে বিভিন্ন ভাবে তার পিছনে লাগে।দেখাতে চায় যে চাঁদের ও কলংক আছে।আর নিজেকে শান্তনা দেয় সমকক্ষ ভেবে। নিজের মাথায় কিছু নেই কিন্তু সম মানের বন্ধু বড় অফিসার হল,উপর পদে গেল ,পুরস্কার পেল এস নিয়ে তার ঘুম নেই।

নিজে অযোগ্য, কিছু করতে পারে না, বড় বড় কথা বলবে, পাশে কেউ সাফল্য পেলে, হিংসায় মরিয়া হয়ে ওঠে। যোগ্য লোকটির নাম, ধাম, A B CD ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এমন ভাবে ভাইরাল করে শেষ পর্যন্ত লাভ হয় অনেক ডাটা ব্যবসায়ী ও ফেসবুক মালিকের।

আমি আজ সকালে আদা জল খাব বলে চিন্তা করলাম। আদা খেয়ে দেখি ঝাল লাগল তারপর পানি পান করলাম। কিন্তু কোন অনুভূতির পরিবর্তন পেলাম না। কারো বিরুদ্ধে লাগতে ইচ্ছা হল না বা নিজের কাজগুলো উঠে পড়ে করতে পারিনি ।

আরও পড়ুন :
পথ্য আমাদের বৈদ্য
ক্ষুধা মেটাতে মৃত্যু, মৃত্যু ঠেকাতে ক্ষুধার্ত ?
তানপুরা কি বাজায় ?

আদার মসলা গুণবিচারে মধু বা গরম পানি দিয়ে বা আদা চা খেলে নাকি কাসি কমে বা হার্ট ভাল থাকে। কিন্তু বলা হয়েছে আদাজল খেয়ে লাগা। আদার ভাল গুন পানির সাথে আছে বলে মনে হল না। এর নেগেটিভ গুন হল আদা খেলে ঝাল লাগে তাই মানুষের বিরুদ্ধে লাগা যায়। এজন্যই নাকি জন্মের সময় আদা না দিয়ে মধু মুখে দেয়। জানি না

কতজন মানুষ জন্মের সময় মধু মুখে পেয়েছে। তবে মধু না দিলেও আদা দেওয়ার রীতি তো নাই। এখন জেনে শুনে আদা খেলে তো পানি পান করতে হয় আর পানি যদি না পাওয়া যায় তখন তো বিপদ। আর তখন যদি কেউ নিম রস খাইয়ে দেয় তার নাকি পেট খারাপ হয়।

বাসুদেব নাকি একা একা আদা জল খেতে যেয়ে আদা নিম খেয়েছে ১০বছর হলো তার নাকি দিনে ২৪বার নিয়মিত বাথ রুমে যেতে হয় বলে আদাজল খেয়ে লাগতে পারে না।

তো যারা আদাজল খেয়ে পিছনে লাগে তাদের একটু নিম রসের ব্যবস্থা করা উচিত। ঐ বন্ধুদের যারা শত্রু হয়ে গেছে। আর বাগধারার আদাজল সত্যি সত্যি খাবেন না তাহলে বাংলা ব্যাকরণেই থেকে যাবে। কাজীর গরু কিতাবে থাকবে, গোয়ালে পাওয়া যাবে না। মুখে ঝাল ধরবে। মিষ্টি মুখ আর দেখা লাগবে না।

মেধা,অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা,দিয়ে অর্জন কখনো অকাল কুমান্ডদের রোশানলে বিসর্জন হতে পারে না।যে কাজের সুযোগ পাবে না, ভাল করার যোগ্যতা নেই, চর্চা নেই, ইচ্ছা নেই, উদ্যোগ নেই, উদ্যম নেই ।আছে শুধু “”আংগুর ফল টক”” ।সমালোচনা ও নিন্দা র ঝড় । এই করল সেই করল,। আমি হলে পারতাম ।

তেল মেখে কলাগাছে তুলে দেওয়া বা পা ধরে হা ডু ডু খেলার মত আটকানো স্বভাব হলে সামনে যে যাবে তার আহত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। আর নিন্দুকেরা শুধু উল্লাসে মত্ত হবে।

সম্ভাবনার দরজার দ্বার এমনি করে বন্ধ ই রয়ে যাবে।এ কেমন উঠে পড়ে লাগা?নিচে পড়ে থাকা নিজেকে না তুলে উপরে উঠে যাওয়া যোগ্য দের টেনে হিঁচড়ে নিচে নামানোর কলংকের দ্বায় নিয়ে সমাজ নাচানো খেলা কবে বন্ধ হবে?

লেখক: পুলিশ পরির্দশক (পিপিএম)

জুন ৩০, ২০২০ at ১১:৩৭:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ইইউ/এমএআর