যশোরেই মিলবে করোনায় গুরুতরদের ভেন্টিলেশন সুবিধা

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় আরেক ধাপ অগ্রগতি হতে যাচ্ছে। এখন থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে মিলবে ভেন্টিলেশনের সুবিধা। রোববার থেকে শুরু হয়েছে ভেন্টিলেটর স্থাপনরে কাজ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ আহম্মেদ।

এর ফলে জেলার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ফুসফুস যদি কাজ না করে তাহলে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের কাজটা ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে করানো সম্ভব হবে। রোগীদের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে এবং সুস্থ করে তুলতে সহায়ক হবে।
হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্র মতে, যশোরে গেলো ১২ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর বাড়তে থাকে রোগী। জেলার করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভায় রোগীদের চিকিৎসা সুবিধার্থে ভেন্টিলেটর আনার ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা বিষয়ে আলোচনা হয়। এর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

আরও পড়ুন :
যশোরে করোনা রোগী ৫০০ ছাড়াল
যশোরে দশদিনে দ্বিগুণ শনাক্ত
বাঘারপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনায় প্রাইভেট কারচালক খুন
করোনা পরীক্ষা করাতে যত টাকা লাগবে

সেই চিঠির প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের অনুকূলে ছয়টি ভেন্টিলেটর বরাদ্দ দিয়েছে; যা গতকাল যশোরে এসেছে। হাসপাতালের ভেন্টিলেটর স্থাপন কমেটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. আহসান হাবিবসহ কমিটির বাকি সদস্যরা মেশিনটি রিসিভ করেছেন। মেশিনটি যাচাই-বাচাই শেষ করে ছয় নম্বর মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে মেশিনটি বসানো হবে। ইতিমধ্যে ভেন্টিলেটরগুলো স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছেন, মেশিনারিজ পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত জনবল নেই প্রতিষ্ঠানটির। করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনেক রোগী পেয়েছেন, যাদের ভেন্টিলেটর সাপোর্টের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সে সুবিধা না থাকায় রোগীদের খুলনা ও ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন :
ঠাণ্ডা বা ফ্লু থেকে নিস্তার মিলবে এক কোয়া রসুনেই!
মধ্যরাতে আচমকা মাটির নিচে ঢুকে গেল ৫ বাড়ি
শিশুর করোনার লক্ষণ দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ যা করবেন
কৃমির যন্ত্রণায় ভুগছেন? সহজেই মুক্তি মিলবে আট ঘরোয়া উপায়ে
মাস্ক না ফেস শিল্ড, করোনা প্রতিরোধে কোনটি কার্যকর?

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরিফ আহমেদ বলেন, যশোরের জন্য দশটি আইসিইউ ভেন্টিলেটরের চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে। তার প্রেক্ষিতে ঢাকার নাক, কান ও গলা ইনস্টিটিউটের মেরামতকৃত ছয়টি ভেন্টিলেটর বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা আজ রোববার থেকে স্থাপনের কাজ শুরু হবে। এটি স্থাপনের পরে মেশিনটি রোগীর বাতাসের চাপ নির্ণয় করবে। কার্বন ডাই অক্সাইড রোগীর দেহ থেকে বের করতে সাহায্য করবে। প্রয়োজনে রোগীর গলায় শ্বাস নালিতে টিউব স্থাপন করে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সহযোগিতা করবে।

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, ভেন্টিলেটর ও আইসিইউ না থাকায় প্রায়ই যশোর থেকে গুরুতর রোগীদের খুলনা ও ঢাকায় রেফার করা হচ্ছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে বরাদ্দ এসেছে তাতে এ অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসায় নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে হাসপাতালের সিসিইউ এ কর্মরত চিকিৎসক, সেবিকা যারা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত তাদের মাধ্যমে ভেন্টিলেটর পরিচালনা করা হবে। এছাড়াও পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জনবল চাওয়া হবে।

জুন ২৯, ২০২০ at ১০:৪৯:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসকে/এমএআর