যশোরে দশদিনে দ্বিগুণ শনাক্ত

যশোর জেলায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১০ জন। এরমধ্যে সর্বশেষ ১০ দিনেই ২৪৬ জন শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন অন্তত ৭ জন। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সংক্রমণরোধে ইতোমধ্যে জেলার ২৪টি এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে যশোরের জেলা প্রশাসক ও করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল জানান, গত ঈদের আগে কড়াকড়ি শিথিল করায় বিপুলসংখ্যক মানুষ গ্রামে আসেন। তাদের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। সুনির্দিষ্ট এলাকা লকডাউন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আক্রান্ত ব্যক্তিকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছি। অভয়নগরে এই বিষয়ে কড়াকড়ি করায় ফল পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন :
যশোরে কঠোর লকডাউন কার্যকরের সিদ্ধান্ত
যশোরে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে দুইজনের মৃত্যু
চারলেন হচ্ছে যশোরের পালবাড়ি-মুড়লি মহাসড়ক

জানা যায়, গত ১৭ জুন যশোর জেলায় কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের সংখ্যা ছিল ২৬৮ জন। দশদিন পর সর্বশেষ ২৭ জুন জেলায় করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১০ জনে। আর গত ২৪ ঘন্টায় ৪৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। বেশিরভাগ রোগীকে বাড়িতে রেখেই চলছে চিকিৎসা। বর্তমানে ২৮ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারের পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. শিরিন নিগার বলেন, শনিবার যশোরের ১২৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৮ জনের নমুনাতে কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে।

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, যবিপ্রবি ল্যাবের ফলাফলে যশোরে ৪৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এসব রোগীর বর্তমান বাসস্থান লকডাউন করার পাশাপাশি তাদের আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যশোরের ২৪টি এলাকায় রেড জোন ও লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে। নতুন আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, এখনো পর্যন্ত যত নমুনা পজিটিভ ফল দিচ্ছে, বাস্তবে তার চেয়ে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। পর্যাপ্ত পরীক্ষার অভাবে জানা যাচ্ছে না, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আসলে কত লোক। এছাড়া নমুনা যেভাবে সংরক্ষণ, পরিবহন ও পরীক্ষা করা হচ্ছে, তার মধ্যেও গলদ রয়েছে। ফলে ‘ফলস নেগেটিভ’ রেজাল্টের সংখ্যাও কম না। আবার, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ৭০ থেকে ৮০ ভাগের মধ্যে কোনো শারীরিক উপসর্গ দেখা যায় না। উপসর্গবিহীন এই সব মানুষ মূলত নমুনা পরীক্ষা কার্যক্রমের বাইরেই থেকে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের কাছ থেকে অন্যরা সংক্রমিত হচ্ছেন ঠিকই।

জুন ২৮, ২০২০ at ১০:৩৪:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/পিকে/এমএআর