এমপি আনারের মন্ত্রীত্ব চেয়ে ফেসবুকে নেটিজেনদের ঝড়

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। উপজেলা আওয়ামীলীগের বাবার নির্বাচিত সাধার সম্পাদক, একজন ক্রীড়া সংগঠক এবং এক সময়ের জনপ্রিয় ফুটবল খেলোয়ার। ছাত্র জীবনে আন্তঃস্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগীতার ফুটবলে তার নেতৃতাধীন দল কালীগঞ্জ সরকারী ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয় চ্যম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। তার হাত ধরেই কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রী কলেজ ও ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারী করণ হয়।

ছাত্রজীবন থেকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শে নিয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন। স্থানীয় পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচন দিয়ে ভোটের রাজনীতি শুরু করেন। এর আগে বিশাল ভোটের ব্যবধানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে দ্বায়িত্ব পালন করেন। এত বেশি ব্যবধানে এর আগে কখনো কেউ জয়ী হয়নি। জাতীয় নির্বাচন গুলোতেও তিনি জয়ের ব্যবধান দিয়ে একই জনপ্রিয়তার স্বাক্ষর রাখেন।

চলতি বছরের শুরুতে করোনার মহাসংকটে অনেক জনপ্রতিনিধিরা যখন ঘরবন্ধি, তখন আনোয়ারুল আজিম আনার রাতদিন গ্রাম থেকে গ্রামের ত্রাণ নিয়ে নিরন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌছে দিয়েছেন। এখনো চলছে তার ত্রাণ বিতরণের কাজ। করোনাকালে তার নিজস্ব একটি মোবাইল নাম্বার বিতরণ করেন। যে নিরন্ন যে কেউ ফোন করলেই তার বাড়িতে খাবার পৌছে দেন। এছাড়া নিয়ম করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে নিয়মিত তার নির্বাচনী এলাকার মানুষের কথা শুনেন।

সম্প্রতি সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নেটিজেনরা এই তরুণ সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনারকে আওয়ামীলীগ সরকারের মন্ত্রীসভায় স্থান দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে ঝড় তুলেছে। তারা তার নানা উন্নয়ন কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরে পোষ্ট দিচ্ছে। রীতি মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মন্ত্রীত্ব চেয়ে ঝড় তুলেছে নির্বাচনী এলকার দল মত নির্বিশেষে বিভিন্ন সংগঠন পোশাজীবি মানুষ। পিছিয়ে ছাত্র শিক্ষকসহ সাধারন মানুষও। তাদের দাবি ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলা ঝিনাইদহের এ তরুণ এমপিকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা নেতৃতাধীন মন্ত্রীসভায় দেখতে চাই।

এছাড়াও আরো কিছু বিশেষ বৈশিষ্টের জন্য এমপি আনার এলাকার ভোটারদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় একজন নেতা। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার এলাকায় কখনো তাকে পুলিশি প্রটোকল ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। তিনি নিজেই মোটরসাইকেল চালিয়ে দিন অথবা রাত যখন প্রয়োজন তখনই নির্বাচনী এলাকার প্রত্যান্ত অঞ্চলের যে কোন গ্রামে পৌছে যান। কেউ ফোন করলেই দিন-রাত যে কোন সময় তিনি তার বাড়িতে পৌছে যান। এছাড়া তিনি কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকার প্রত্যান্ত অঞ্চলের গ্রামের পর গ্রাম চষে বেড়ান। তার নির্বাচিত এলাকার যে কোন গ্রামে মৃত্যু সংবাদ পেলেই ছুটে যান তার বাড়িতে। তাদের সাথে কথা বলেন। শোকাহত পরিবারের সদস্যদের শাস্তনা দেন। একই দিনে ১০ জন মৃত ব্যক্তির জানাযায় অংশ গ্রহন করারও রেকর্ড রয়েছে তার। এ পর্যন্ত তরুণ এই সাংসদ ১৫ হাজার মৃত্যু মানুষের দোয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।

কাদাপথে লাশবাহি এ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে জনগণের সেবক পরিচয় দিয়েছেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। তার নির্বাচনী এলাকা কালীগঞ্জ উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের ভিটেখোলা গ্রামে রফিকুল ইসলাম মালোয়েশিয়াতে ডেঙ্গু জ¦রে মারা যায়। শনিবার ভোরে বিমান যোগে তার মৃতদেহ ঢাকায় আনা হয়। সেখান থেকে একটি এ্যাম্বুলেন্স করে মৃত রফিকুলকে গ্রামে নিয়ে আসে। গ্রামের পাকা রাস্তার মোড়ে এলে বৃষ্টিতে ভেজা কাদার রাস্তা দেখে চালক যেতে অসিকার করে। এসময় সেখানে উপস্থিত সাংসদ আনার নিজেই জীবনের ঝুকি নিয়ে কর্দমাক্ত দেড় কিলোমিটার পথে গাড়ি চালিয়ে মৃতদেহ বাড়ি পৌছে দেয়।

এরআগে কালীগঞ্জে একটি সড়ক দূর্ঘটনায় আহতদের নিয়ে নিজে এ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে যশোর হাসপাতালে পৌছে দিয়ে আলোচনায় আসেন।

মালিয়াট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক সংগ্রাম বলেন, ভিটেখোলা গ্রামের রফিকুল ইসলাম মালোয়েশিতে থাকতো। গত বুধবার সেখানে ডেঙ্গু জ¦রে মারা যায় রফিকুল। সেখান থেকে বিমান যোগে শনিবার ভোরে তার মৃতদেহ দেশে আনা হয়। এরপর এদিন দুপুরে মালিকানাধিন একটি এ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়িতে নিয়ে আসে। কিন্তু গ্রামে আসার পর তার বাড়ি যেতে প্রায় দেড় কিলোমিটার কাচা রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে যায়। যেটা গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ভিজে এমন হয়েছে। ফলে এ্যাম্বুলেন্স চালক ঝুকিপূর্ণ এই রাস্তায় যেতে অসিকার করে। এসময় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার দুই ব্যক্তির জানাযার নামাজ শেষে আরো একটি জানাজার উদ্দেশ্যে ওই পথে যাচ্ছিলেন। সংসদ আনার ঘটনার জানার পর নিজেই এ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে রফিকুলের মৃতদেহ বাড়িতে পৌছে দেয়।

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার জানান, জনগন আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে তাদের সেবা করার জন্য। আমি এখন জনগনের কাছে দ্বায়বদ্ধ, আমি এখন তাদের সেবক। দেশনেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি করোনাকালে জনগনের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি, এখনো আছি। আমার নেত্রী চাইলে আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের জন্য জীবন দিয়ে হলেও সেবার কাজ করে যেতে চাই, বলছিলেন তরুণ এই সংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার।