অসহায় মানবের মাঝেও দানব

ধন, জন, নাম-ধাম বাবুয়ানা, বাড়ি-গাড়ি টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকার, বিত্ত বৈভব, প্রভাব-প্রতিপত্তি, শান- শওকত, জমিদারি সবই যাদের একসময় ছিল। মানে খুব ভালোভাবেই ছিল। এক সময় নেতৃত্ব ছিল।

রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি ছিল। বিরাশি সালের কাছাকাছি সময়ে সেটি বাতিল হয়ে যায়। শুরু হয় হারানোর পালা। পেয়ে হারানোর যন্ত্রণা কি তা তারাই বুঝে যাদের চলে যায়। একটি দেশের নাগরিকত্ব বা নাগরিকের স্বীকৃতি যে কি জিনিস যার নেই সেই বোঝে। যার রাষ্ট্র নেই তার সমাজ নেই, তার জাতিসত্তা দুর্ভেদ্য ,তার সঙ্গ একেবারেই একাকিত্ব, তার চিন্তা চেতনা একেবারেই অংশগ্রহণমূলক হয় না,ধ্যানধারণা ব্যক্তি পার হয়ে সমষ্টি পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে না। আমরা দেশের মধ্যে যেমন বলি অমক বিভাগ, অমক জেলায় বাড়ি ঠিকানা বলে দেই। এ বলার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় শিকড় যে কত শক্ত তা প্রকাশ পেয়ে যায়।

কিন্তু মায়ানমার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকগণ আশ্রয়হীন সহায় সম্বলহীন এদেশে এসেছে। মায়ানমারে যারা ঐশ্বর্য আর প্রাচুর্যের মধ্যে জীবন কাটাতো। তারাও আশ্রিত বাংলাদেশ।

সবাই UN এর বিভিন্ন সংস্থার রিলিফ পেয়ে থাকে। নিজেদের ব্যক্তিগত কোনো ইনকাম নেই বা থাকার কথা নয়। এই অসহায়দের রিলিফের টাকা ত্রানের টাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে একশ্রেণীর অপরাধী চাঁদাবাজির মত নিয়ে নেয়। অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। নিজের কথা না শুনলে খুন পর্যন্ত করে। পাহাড়ের চূড়ায় যেয়ে আত্মগোপন করে এ সকল অপরাধীরা থাকে। নিজে শরণার্থী হয়ে অন্য শরণার্থীর এই ক্ষতি গুলো করে থাকে। তাহলে সেই শরনার্থীদের দেশে ফেরার সম্ভাবনা কতটুকু থাকবে। দেশে ফেরার প্রত্যয় ও একতাই বা কোথায় থাকবে। অসহায় আশ্রিত শরণার্থীদের মধ্যেই এজন্য মানবে র দানব হয়ে ওঠা। বিশ্বের অন্য কোন দেশে থাকা শরণার্থীদের মধ্যে এরকম ঘটনা খুব কম।

বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে দুর্গম পাহাড় এলাকায়। অসমতল ভূমি এবং বন জঙ্গলের কাছে আশ্রয় নিয়েছিল তারা। পাহাড়ের গায়ে পিঠে পাদদেশে ,চূড়ায় অবস্থান করছে একটি তাঁবুর মধ্যে। বিভিন্ন ক্যানাল এবং বিভিন্ন পাহাড় বা খালের আড়ালে এই অপরাধ গুলি করে থাকে। সবচেয়ে বড় কথা নিজ দেশের একটি বাহিনী কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে যারা একই ভেলায় চলে এসেছে একই জায়গায়। যারা একই রিলিফের অনুদান পেয়ে জীবন যাপন করে।

সেই তারাই গুটিকয়েক ব্যক্তি অসহায় মানব হতে দানব সৃষ্টি হয়েছে।দানবের মত নিজের মত আরেকজন শরণার্থীর কাঙালের ধন চুরির মত আহারের টাকাও ছিনিয়ে নিচ্ছে। নিজেদের মধ্যে কতটুকু সচেতনতা ও মনুষত্ববোধ না থাকলে তারা এ ধরনের অপরাধ ঘটায়। এ ধরনের জাতি বা সমষ্টি গোষ্ঠী নিজ দেশে ফিরে গিয়ে কিভাবে অধিকার আদায় করবে সেটি নিয়ে তাদের আচরণে সংশয় দেখা দিয়েছে। তাদেরকে অপরাধ মনোবৃত্তি থেকে সরে এসে নিজ দেশ মায়ানমার ফিরে যাওয়ার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।