মাতৃভক্তি যেন, মাতৃভূমি’ র রূপকার!

দেশ নেই, নাগরিকত্ব নেই । ঘর নেই ,বাড়ী নেই।সম্পত্তি নেই, সম্বল নেই। নেই কোন স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুবিধা। যা আছে তা হল প্রতি দিনের খাবার এর রিলিফ।

ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি কালচার সংস্কৃতি, সব কিছুই বিপক্ষে তাদের।দেশ থেকে তাদের ই দেশ রক্ষা কারী বাহিনী দুর দুর করে মেরে পিঠে বের করে দিয়েছে। পিতার সামনে, পুত্র কে ।পুত্রের সামনে পিতাকে। স্বামী র সামনে স্ত্রী কে, ভাইয়ের সামনে বোনকে, বাবার সামনে মাকে, হত্যা ধর্ষণ, করে টুকরো টুকরো করেছে। জীবিত থাকা অবস্থায় এর চেয়ে অসহায় আর কি আছে? হতাশার নিম্ন পর্যায়ের হতাশ। এ গুলো দেখে দেখে সেমি সাইকো হওয়া স্বাভাবিক।

কেউ না কেউ কোন না কোন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ই।তাদের বেশির ভাগই ই শান্ত, হত দরিদ্র। অল্প কিছু সন্ত্রাসী বা মাদক ব্যবসায়ী। তাদের সাথে বাংলাদেশের ও কিছু পন্ডিত আছে।

সে হিসেব বাদ দিলে বাঁকি সবাই আকাশের দিকে চেয়ে থাকে। UNHCR, IOM ই তাদের ভরসা। আর বাংলাদেশের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা। যাদের সামাজিকতা আছে। বোধ আছে তারা ধার্মিক ও বটে। অসহিষ্ণুতা ও আছে। পারিবারিক বন্ধন আছে বলেই আট দশ ফিটের তাঁবু খাটিয়ে এক ঘরে আট দশ জন থাকে।

ছেলে মেয়ে কে বড় করে লেখা পড়া করিয়ে জজ ব্যারিস্টার, বানানো র চিন্তা নেই।এমন কি যারা ত্রিশ বছর এদেশে তাদের বয়স ও 60/65 তারা আর কি ই বা করবে।

তবে নেই নেই এর মধ্যে নিজের পরিবারের প্রতি অনেক দায়িত্বশীল ।নিজেদের অধিকার নেই এ কথা নিশ্চিত জানলেও তা যে বোঝে না তা নয়।

পারিবারিক বন্ধন, একে অপরের প্রতি আবেগ অনুভূতি কাজ করে যা অনুকরণীয়। পেটে খাবার না থাকতে পারে। অন্যের দেশে আশ্রিত হতে পারে ।নিজের মায়ের প্রতি দায়িত্ব বোধ শিক্ষণীয় ।চিকিৎসা পাবে কিনা? ডাক্তার আছে কিনা? সে চিন্তা না করে মাকে বাস দিয়ে খাটনি তে উঠায়ে দুই ভাই রওনা। জ্বর, সর্দি, কাশি, জেনেও গর্ভ ধারনকারী মায়ের প্রতি রোহিংগাদের এমন উদাহরণ অবশ্যই শেখার মত।যেখানে আমরা অসুস্থ মাকে ভাওয়াল বনে ফেলে যাই।করোনা আক্রান্ত বাবাকে বৃষ্টি র মধ্যে আল মারকাজের হাতে তুলে দেই।

আশ্রিত দের কাজে আশ্রয় দাঁতার শেখার আছে বৈকি। চমত্কার মাতৃভক্তি বড় করে তুলেছে রোহিংগা শরণার্থী দের। এ দীক্ষা বিশ্ব ধরেই ছড়িয়ে পড়বে। আর এ ধরনের কিছু না কিছু নিয়ে বেঁচে আছে তারা।মাতৃভক্তি র কারনে যেন মাতৃভূমি ফেরত পায় এই কামনা করি।

লেখক: পুলিশ পরির্দশক (পিপিএম)

জুন ১৭, ২০২০ at ১৭:৫৬:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ইএইচ/এমএআর