যাঁদের মৃত্যু নেই, তাঁদের একজন

২০১২ সালে বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম সিরাজগঞ্জ। সে ছাত্র লীগের নেতা ছিল। তার সাথে দাওয়াত খেতে গেলাম।খাবার দিল পারিবারিক ডাইনিং এ। টেবিলের সাইডের চেয়ারে আমার বন্ধু। অন্য সাইডে জেলা ছাত্রলীগের নেতা, পাশে আমি ।

আমার ডান পাশে একজন মুরব্বী, ভদ্রলোক। চেহারা আর ডাইনিং টেবিলে বসা দেখে বুঝতে দেরী হল না উচ্চ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন লোক তিনি এবং সম্ভ্রান্ত পরিবারের মানুষ। ডান দিকে তাকাতেই তিনি আমার নাম বাড়ী পেশা বলে দিলেন। হাত দেখে বলেন নি। আগেই আমার বন্ধুর নিকট থেকে জেনে নিয়েছেনকে তার বাসায় মেহমান এবং কে তার ডান পাশে বসে খাবেন।

আমিও ডান দিকে তাকিয়ে চিনে ফেললাম। কৌশলে মেহমান এর নাম বলে সম্মোধন দেখে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম। মনে হল অনেক দিনের চেনা, পরিচিত, স্বজন, আপনজন, প্রতিবেশী, শুভাকাঙ্ক্ষী। খাবার সময় ভদ্রলোক এক টুকরো করে মাংস উঠায়ে দিলেন তিন জনকে । আমি তো আরো অবাক। মানে আশ্চর্য।

অনেক পরিচিত মনে হল। কিন্তু শুধু টিভিতে দেখেছি। এক বার নিকট থেকে দেখেছিলাম তাড়াশের নওগাঁ বাজার পলাশ ডাংগা যুবশিবির এর আলোচনা অনুষ্ঠান এ।

খাবার শেষ ।চা খেয়ে দোয়া নিয়ে চলে আসব ।তখন আমার বন্ধু কথায় কথায় বলল যে আমি পুলিশ। সংগে সংগে আমার ইউনিট প্রধান কে ফোন করে বলে দিলেন আমি সেদিন তার দুপুরে র মেহমান ছিলাম। আমকে যেন কড়াভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন।

সেই দিন প্রথম ও শেষ দেখা।মনে রেখেছি আজও ।ভবিষ্যতে ও মনে থাকবে।মুল কথা হল এই মাপের মানুষ গুলি চিরদিন বাঁচে।তাঁদের জন্মদিন আছে মৃত্যু দিবস নেই।তাঁরা মরে না চির অমর।আমাদের মত মানুষের মাঝে, এমনই সব আচরনে বেঁচে থাকে যুগান্তরে ।

তাঁরা দেশের, মাতৃভূমি র জন্য ই আসে ।তাঁরা আসলে চলে যায় না ।তাদের শুধু বাস্তব মৃত্যু হয়।

কিন্তু আচরনে বেঁচে থাকে এখনও আছে।

তাঁর বাবাও দেশের সম্পদ ছিলেন। তিনিও সেটি প্রমান করলেন। দেশ ও তাঁকে সম্মান দিয়েছে।

আমি সেই সম্মানিত মানুষ বাংলাদেশের অন্যতম জাতীয় নেতা মোহাম্মদ নাসিম এর মৃত্যু যে শোক প্রকাশ করছি।মরহুমের মাগফিরাত কামনা করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

লেখক :

ইমাউল হক, পিপিএমইন্টেলিজেন্স এন্ড মিডিয়া সেল
১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন
কক্সবাজার।