ভারত থেকে ট্রেনযোগে দেশে আসলো ১৬শ মেট্রিক টন পেঁয়াজ

এবার বেশ আগেভাগেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে বাংলাদেশে। ফলে এই বছর সংকট নাও হতে পারে নিত্যপণ্যটির। সোমবার (৮ জুন) দর্শনা হয়ে এক হাজার ৬০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ঢুকেছে। দেশি জাতের মতো স্বাদ ও ঝাঁজযুক্ত এই পেঁয়াজ এনেছেন যশোরের একজন আমদানিকারক।

গেল বছরের শেষার্ধ্ব থেকে চলতি বছরের প্রথমার্ধ্ব প্রায় ছয় মাস বাংলাদেশে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম ছিল। মূলত ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় দাম আকাশ ছোঁয়। চীন, তুরস্ক, মিশর, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেও দামের নাগাল টেনে ধরা যায়নি।

আরও পড়ুন:
ধান ক্রয় প্রক্রিয়ার শুরুতেই প্রশাসনের উদাসীনতা
হচ্ছে না লকডাউন, সরিয়ে ফেলা হল সব তথ্য
অক্সিজেনের পেছনে ছুটছে মানুষ

বাংলাদেশে পেঁয়াজের যে উৎপাদন হয়, তা দিয়ে পুরো চাহিদা মেটে না। ঘাটতি মূলত পূরণ করা হয় ভারত, চীন ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করে। এর মধ্যে ভারতই প্রধান রপ্তানিকারক। সেদেশে পেঁয়াজের উৎপাদন কম হলে রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। ফলে সংকটে পড়ে বাংলাদেশ।

পরিস্থিতি বুঝে এবার ব্যবসায়ীরা আগেভাগেই পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছেন ভারত থেকে। গেল মে মাসের ১৩ তারিখে পেঁয়াজের প্রথম চালানটি রেলযোগে ঢোকে বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায়। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে স্থলবন্দর বন্ধ থাকায় রেলপথই হয়ে ওঠে মূল ভরসা।

ভারতে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় মহারাষ্ট্রের নাসিক অঞ্চলে। বাংলাদেশের আমদানিকারকরা মূলত ওই এলাকা থেকেই পেঁয়াজ আনেন।

সোমবার এক হাজার ৬০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজের বড় একটি চালান রেলযোগে ঢুকলো দর্শনায়। যশোরের আমদানিকারক ‘মেসার্স আহাদ আয়রন স্টোর’ মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে এই চালানটি এনেছে।

আমদানিকারী প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী এজাজ উদ্দিন টিপু জানিয়েছেন, পেঁয়াজ আনার জন্য গত মাসের ১৯ তারিখে তিনি এলসি খোলেন। ৪১টি ওয়াগনভর্তি ট্রেনটি মহারাষ্ট্র থেকে পশ্চিমবঙ্গের গেদে এসে পৌঁছায় গতকাল রোববার। আজ সোমবার বাংলাদেশের ইঞ্জিন গিয়ে ট্রেনটি দর্শনা স্টেশনে আনার পর পেঁয়াজ আনলোড করা হচ্ছে।

টিপু জানান, মহারাষ্ট্রের নাসিক অঞ্চলে উৎপাদিত সবচেয়ে ভালো জাতের পেঁয়াজ হলো গোল্টি ও গোল্টা। তিনি এই জাতের পেঁয়াজই আমদানি করেছেন, যার স্বাদ ও ঝাঁঝ আমাদের দেশি জাতের মতো।

বাংলাদেশে বাইরে থেকে আমদানি হওয়া পেঁয়াজ সচরাচর বড় আকারের হয়। কম দামি এই পেঁয়াজ মূলত রেস্তোরাঁয় ব্যবহৃত হয়। বাসাবাড়িতে রান্নার জন্য ঝাঁঝযুক্ত ছোট আকারের পেঁয়াজের চাহিদা বেশি।

বাংলাদেশের বাজারে এখন পর্যন্ত পেঁয়াজের সংকট নেই। যশোরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী স্বপন সাহা জানান, খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম এখনো প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ২২ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

আমদানিকারক টিপু বলছেন, তার পেঁয়াজ বাজারে ঢুকলে দাম আরো কমবে। এতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের গাঁটের পয়সা বাঁচবে; আর দেশি স্বাদ ও ঝাঁঝের হওয়ায় রান্না করা খাবারের স্বাদ কমবে না মোটেই।

আমদানি করা এই পেঁয়াজ আজ-কালের মধ্যেই দর্শনার গুদাম থেকে পাইকাররা নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট যমুনা ট্রেডিং করপোরেশনের সত্বাধিকারী এনামুল হক।

জুন ০৮, ২০২০ at ২৩:৫২:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসজে/তআ