ঝুঁকিপূর্ণ জীবন যাত্রা, শুরুতেই অশুভ বার্তা

দেশে করোনা ভাইরাস আবির্ভাবের পর থেকে গত দুই মাসে দফায় দফায় সরকারি ছুটি বাড়ানো তথা অঘোষিত লকডাউনের কারণে সীমিত আকারে, স্বল্প পরিসরে, শর্ত সাপেক্ষে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে- এই যুগলবন্দী শব্দগুলো সবার কাছে অতিপরিচিত হয়ে উঠেছে। অনেকের কাছে পরিচিত হবার পাশাপাশি শব্দগুলো এক রকমের হাস্যকরও হয়ে উঠেছে। এর সঙ্গে ‘সামাজিক দূরত্ব’ ও ‘সাময়িক শিথিল’ নামে আরো দুটি শব্দ যুগলও রয়েছে। শনিবার (৩০ মে) দুই মাসেরও বেশি সময়ের (৬৬ দিন) সরকারি ছুটি শেষ হয়েছে। আলোচনা সমালোচনার মাঝেই অবশেষে রোববার (৩১ মে) থেকে বেশকিছু শর্ত জুড়ে সারাদেশে সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে। ঘোষণা আসার পরপরই গত কয়েকদিন ধরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা পরিবহনগুলোর ট্রায়াল কাজ চলেছে। সবকিছু ধুয়ে মুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জীবন যাত্রার প্রথম দিন অতিবাহিত হয়েছে। দেশের সব জায়গা সরগরম হয়ে উঠেছে। আলোচিত ‘সামাজিক দূরত্ব’ মেনে চলার বালাই নাই কোথাও।

সংক্রমণের হার ভয়াবহ আকার ধারণের ঝুঁকি থাকা সত্বেও উভয় সংকট মোকাবিলায় সরকার মে মাসের শেষ দিন থেকে ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে বাধ্য হয়েছে। আপত্তি থাকলেও সরকারের এই ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত অনেকের মতো সমর্থন করতে হচ্ছে। কারণটা হলো- শর্ত সাপেক্ষে আর সীমিত পরিসরের আবরণে দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো, কখনো কঠোরতা আবার কখনো উদারতার ঘটনায় এবং কিছু মানুষের পারিপার্শ্বিকতায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যা ছড়ানোর তা এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন আর রাখঢাক করেই বা লাভ কী?। তারচে দেখা যাক সরকারের এই চ্যালেঞ্জিং পলিসি শেষ পর্যন্ত কোন দিকে গড়ায়। যদিও পরিস্থিতি বলছে, আশাবাদের জায়গা অনেকটাই ক্ষীণ। ফলে হতাশায় পর্যবসিত হবার সম্ভবনাই বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে বিকল্প অপশন হিসাবে পুনরায় কঠোর লকডাউন দেবে সরকার।

গত ২৫ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এই সাধারণ ছুটিই অঘোষিত লকডাউনে পরিণত হয়। ওই দিন দেশে নতুন করে কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। ২৫ মার্চ যে ব্রিফিং করেছিল আইইডিসিআর সেখানে বলা হয়েছিল, ২৫ মার্চ কেউ করোনা আক্রান্ত হয়নি। তবে আগে আক্রান্ত একজন মারা গেছেন। ওই দিন পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৯ জন। এখন সবকিছু খুলে দেয়ার আগের দুদিন অর্থাৎ ২৯ মে দেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক দুই হাজার ৫২৯ জন এবং ৩০ মে দেশে ১ হাজার ৭৬৪ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হন। ৩০ মে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৮ জন মারা গেছেন।

আগের দুই দিনের রেকর্ড আক্রান্ত আর রেকর্ড মৃত্যুর মধ্যেই পূর্বঘোষণা অনুসারে সব কিছু খুলে দেয়া হলো রোববার (৩১ মে) ছুটি প্রত্যাহরের প্রথম দিনেই অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। এ দিন নিয়মিত প্রেসব্রিফিংয়ে আইইডিসিআর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত ২ হাজার ৫৪৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যু। এটা ২৪ ঘণ্টার হিসাব হলেও ‘লকডাউন’ প্রত্যাহারের প্রথম দিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যুর অশুভ বার্তাই পেল দেশবাসী। আইইডিসিআর বলছে, জুনে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়বে। লকডাউন কঠিনভাবে না মানলে পরিস্থিতির অবনতি হবে।

করোনার প্রভাবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়া দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঠেকাতে এবং কর্মহীন হয়ে পড়া দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের জীবিকার বিষয় দুটোকে মাথায় রেখে সরকার সাধারণ ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। যদিও এই ছুটি বাতিলকে পরীক্ষামূলক বলা হচ্ছে। তবে ঘোষণা পর্যন্তই সার মনে হচ্ছে! কারণ, এর আগেও ‘সীমিত আকার’ টাইপের ঘোষণায় বাস্তবচিত্র পুরো বিপরীত হয়েই সামনে এসেছে বারবার। বলা বাহুল্য, শুধুমাত্র করোনা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়াদের দাফন কাজে এবং দেশের মসজিদগুলোতে নামাজের বেলায় সরকারি বিধিনিষেধ মানা হলেও অন্য কোথাও তা মানতে দেখা যায়নি।

করোনায় গঠিত চিকিৎসক সেলের প্রধান সমন্বয়কারী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ড. এবিএম আব্দুল্লাহ বর্তমান করোনার সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমকে বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সরকারকে সিরিয়াসলি ভাবতে হবে। এভাবে যদি রোগী বাড়তে থাকে তাহলে লকডাউনের বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেন, সিম্পল লকডাউন মানুষ আর মানবে না। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী নামাতে হবে। কারফিউ দিয়ে জনগণকে লকডাউন মানাতে বাধ্য করতে হবে। অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই তার এই কথাগুলো শুনে থাকবেন, বিবেচনা করবেন।

শনিবার (৩০মে) প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে দশ দফা নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবকিছু খুলে দিয়েছি, তার মানে এই নয় যে সবকিছু এইভাবে চলতে থাকবে। যদি পরিস্থিতি খারাপ হয়, যদি জনস্বাস্থ্যের জন্য নতুন করে হুমকি সৃষ্টি হয় তাহলে অবশ্যই আবার কঠোর লকডাউন দেয়া হবে এবং সেই পদক্ষেপ সরকার যে কোনো সময় নিতে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, আগে যে সাধারণ ছুটি দেয়া হয়েছিল, সেই ছুটিতে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানেনি এবং সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার ব্যাপারে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব ছিল।

জীবন ও জীবিকা দুটোই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারো কাছে আগে জীবন রক্ষা, আবার কারো কাছে আগে জীবিকার প্রয়োজনই অনিবার্য হয়ে দেখা দিয়েছে। ঘরে বসে খাওয়ার মতো সামর্থ্যবানরা সঙ্গত কারণে নিজেদের জীবনকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিচ্ছেন। অন্যদিকে খাদ্যভাবে থাকা বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কাছে জীবনের আগে জীবিকাই প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘরে বসে না খেয়ে মরার চেয়ে জীবিকার তাগিদে বাইরে গিয়ে কাজ করাটাই তাদের কাছে মুখ্য হয়ে উঠেছে। তবে সব কিছু ছাপিয়ে সরকার যদি ভারতের মতো আর একটা মাস লকডাউন সিস্টেম চালু রেখে মানুষকে ঘরে রাখার মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে সক্ষম হতো, একই সঙ্গে ভুক্তভোগী মানুষও যদি কষ্ট শিকার করে ঘরে থাকতে পারতো তাহলে মহামারি থেকে অনেকটাই রক্ষা পাওয়া যেত। ছুটি বাতিলের পর ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশে সার্বিক করোনা পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে যেদিন করোনা ভাইরাসকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে লকডাউন নামের ‘সাধারণ ছুটি’ শেষ হয়েছে, ঠিক সেদিনই পাশের দেশ ভারতে আরো এক মাস লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, তারা লকডাউন জারি রাখবে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত। শনিবার একদিনে প্রায় আড়াইশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে ভারতে। কাজেই কোনো রকম ঝুঁকি নেয়ার পথে যায়নি ভারত সরকার। তবে ৮ জুন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মন্দির-মসজিদ এবং শপিংমল খুলবে ভারত। অথচ আমরা এই কাজ করেছি আরো অন্তত মাসখানেক আগে। কমবেশি সবকিছুতেই ভারতকে অনুকরণ করা আমরা এই জায়গায় ভারতকে পেছনে ফেলেছি বেশ বড়সড় ব্যবধানেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) লকডাউন তুলে নেয়ার ক্ষেত্রে যেসব শর্ত পূরণের কথা বলেছিল তার একটিও পূরণ করার আগেই সবকিছু খুলে দেয়াতে শঙ্কা আরো বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে মানুষকে অবশ্যই ব্যক্তিগত সুরক্ষার কথা চিন্তা করতে হবে। যেহেতু ঘরের বাইরে যেতে হচ্ছে তাই আক্রান্ত হলেই ভড়কে গেলে চলবে না। মনোবল বৃদ্ধি করতে হবে। শরীরে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে ভিটামিন সি খেতে হবে। যাতে করে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণের পাশাপাশি সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরে বাইরে আসতে বলা হয়েছে। তবে বয়স্ক, অসুস্থ ও সন্তান সম্ভবাদের বাইরে না আসাই সমীচীন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, অফিস-আদালত খুলে যাওয়ার পাশাপাশি গণপরিবহন খুলে দেয়ায় মানুষের যাতায়াত বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা মানুষের যাতায়াত আর সীমিত রাখা যাবে না। এটাই করোনা বিস্তারের সব থেকে বড় মাধ্যম। করোনার ভাইরাস বিস্তার রোধে মানুষের যোগাযোগ সীমিত রাখার ওপর সব থেকে বেশি জোর দেয়া হয়। তবে সরকার বলছে স্বাস্থ্যবিধি ঠিক রেখে চলবে গণপরিবহন। কিন্তু সীমিত সাধ্যের মধ্যে অতিরিক্ত মানুষের ভিড় সামাল দেয়া খুব সহজ বিষয় হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভ, অসন্তোষের শেষ নাই। এদিকে ছুটি প্রত্যাহারের প্রথম দিনে অফিস-আদালত, রেল ও নৌপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি মোটামুটি সন্তোষজনক দেখা গেলেও এই পরিস্থিতি কতদিন ধরে রাখা যায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণপরিবহন কখনোই সীমিত আকারে চালানো সম্ভব নয়। করোনা সংক্রমণের দিক থেকে নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে এভাবে সব খোলার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী। আপত্তি এসেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকেও। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অর্থনীতি সচলের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এসব খোলা হয়েছে। আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে ততদিনে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার অবস্থায় থাকবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। কেননা, দেশে অঘোষিত লকডাউনও ঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়নি, যে কারণে ভাইরাস এখন ৬৪ জেলায়ই ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা না এলে চরম মূল্য দেয়া লাগতে পারে। এ ছাড়া লকডাউন সঠিকভাবে কার্যকর না হওয়ায় সারাদেশে সামাজিক সংক্রমণ ঘটায় জুন মাসে দেশে করোনায় ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা করেছে ডক্টরস প্লাটফর্ম ফর পিপলস হেলথ। তারা মনে করছেন, সবকিছু খুলে দেয়ার ফলে নিয়ন্ত্রণহীন পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির প্রকোপ।

আগামীকাল সোমবার থেকে গণপরিবহন চলতে শুরু করবে। যদিও ইতোমধ্যেই কিছু গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে। আগেরদিন শনিবার চালু হওয়া চট্টগ্রামের সিইপিজেডের একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মী পরিবহনের ৫২ সিটের একটি বাসে স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে যাত্রী থাকার কথা ২৬ জন। অথচ ওই বাসে যাত্রী ছিল ৫৭ জন। এদের মধ্যে পাঁচজন দাঁড়ানো ছিল, যা সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার নির্দেশনার সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। এ রকম ঠাসাঠাসি করে বাসে চড়া যাত্রীদের জন্যও স্বাস্থ্য ঝুঁকির। যদিও ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই প্রতিষ্ঠান এবং বাসযাত্রীদের আর্থিক জরিমানা করেছেন। গণপরিবহনে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মোটা টাকা জরিমানার বিষয়টি অব্যাহত রাখতে হবে সবখানে।

সরকার যখন যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে দেশের নাগরিক হিসাবে তা আমাদের মানতে হবে। যথাযথ নিয়মনীতি মেনে সবাইকে নিজ নিজ কাজে যুক্ত হতে হবে। সামর্থ্যবান ও সচেতন মানুষজন ঘর ছাড়বেন না বলেই ধরে নেয়া হচ্ছে। কেননা, এখন প্রতিদিনই ব্যাপকহারে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে, বাড়বে। তবে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার মাঝেও ছুটি পরবর্তী এই সময়টাতে জীবিকার প্রয়োজনে বেশির ভাগ মানুষ বাইরে বেরিয়ে আসবেন। এর ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর প্রবণতাও বেড়ে যাবে আশঙ্কাজনকহারে। সুতরাং একেবারেই প্রয়োজন ছাড়া শুধুমাত্র ‘মুক্ত বাতাস’ খাওয়ার জন্য উৎসুক মানুষজনের বাড়ির বাইরে না বেরোনো কিংবা অযথা ঘোরাঘুরি না করাই ভালো।

করোনা সংক্রমণের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামনে আরো ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে। সব জেনে বুঝেই আমরা বিপদের পথে পা বাড়াচ্ছি। রোববার থেকে উঠে গেছে ‘লকডাউন’। খুলেছে অফিস আদালত। শঙ্কার মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে মানুষ। সরকার অবশ্য স্বাস্থ্যবিধি ঠিক করে দিয়েছে। কিন্তু এতেই শেষ রক্ষা হবে কিনা সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন নিজের সুরক্ষার দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও সহজেই করোনার ভাইরাস বিদায় হচ্ছে না, আরো অনেকদিন এই অদৃশ্য শক্তিকে সঙ্গে করেই আমাদের চলতে হবে এটা নিশ্চিতই বলা যায়। তাই সচেতনতা ও সতর্কতার বিকল্প পথ নাই। এদিকটা লক্ষ্য রেখেই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ভালো থাকুক সবাই, ভালো থাকুক প্রিয় দেশ।

লেখক : এস আর সেলিম, সংবাদকর্মী।