মহামারি করোনাভাইরাসের জন্য সাধারণ ছুটির শেষদিনে বসানো হলো পদ্মা সেতুর ৩০তম স্প্যান। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে সেতুর জাজিরা প্রান্তের ২৬ ও ২৭ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। ফলে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দৃশ্যমান হলো সেতুটির। সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের এ খবর নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, “৩০ টি স্প্যান বসানোর পর সেতুর সাড়ে চার কিলোমিটার দৃশ্যমান হলো। এই ৩০ টি স্প্যানের মধ্যে মাওয়া প্রান্তে স্থাপন করা হয়েছে ১০টি, মাঝের স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে ১ টি ও জাজিরা প্রান্তে স্থাপন করা হয়েছে ১৯ টি। বৈশ্বিক মহামারির মধ্যেও সেতুর চারটি স্প্যান বসানো হয়েছে। অবশ্য এই সময়কালে চারটি স্প্যান বসানোর লক্ষ্যমাত্রা ছিলো।”
তিনি আরও বলেন, “ইতোমধ্যে মূল সেতুর ২৯১৭ টি রোডওয়ে স্ল্যাব এর মধ্যে ৫৯৪ টি এবং ২৯৫৯ টি রেলওয়ে স্ল্যাব এর মধ্যে ১১০৫ টি স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপার টি- গার্ডার এর মধ্যে ১৪৮ টি স্থাপন করা হয়েছে।”
ফলে ৩০ মে পর্যন্ত মূল সেতুর অগ্রগতি-৮৭.০০%, নদীশাসন কাজের অগ্রগতি- ৭১.০০% এবং সার্বিক অগ্রগতি-৭৯.০০% বলে জানা গেছে।পুরো প্রকল্পটিই আইসোলেটেট হওয়ায় পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল দেশি-বিদেশি কর্মীরা অনেকটাই নিরাপদ। এখানে নিরাপদ দূরত্ব বজায়ে রেখে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে না। বাইরের কাউকেই এখানে এখন প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভেতরে করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্যবিধি সবই মেনে চলছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। মূলসেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি দ্বিতল হবে। যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। সেতুর এক পিলার থেকে আরেক পিলারের দূরত্ব প্রায় ১৫০ মিটার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
৪২টি পিলারের ওপর মোট ৪১টি স্প্যান জোড়া দেয়া সম্পন্ন হলে পদ্মা সেতু পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদী শাসনের কাজ করছে চীনের সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড।
মে ৩০, ২০২০ at ১১:৫৯:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ডাটি/এসএস