তানপুরা কি বাজায় ?

এই কর না, সেই কর না, সরকারী নিষেধ যা তা কর না, করলে হবে করোনা। নিরাপদ দুরত্ব কে অমান্য করো না, করলে সরকার করুনা করলেও করোনা কোন করুনা করবে না।

সর্ব প্রথম মাননীয় সরকার বিদেশ হতে সম্মানিত ভাইদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বললেও তা তান পুরায় বাজল না।বাজনায় উঠল আমারা প্রবাসী, আমাদের এই অবস্থায় নোংরা পরিবেশে রাখা যাবে না।

যাক করোনায় আক্রান্ত সনাক্ত হওয়ার সাথে সাথে অনেক পূর্বাহ্নে ই সচেতন সরকার ছুটি দিলেন।ছুটির তাল লয় আর বাজনায় বাঁজে না। অনেকেই কক্সবাজার বেড়াতে গেলেন। অনেকেই বাড়ী গেলে করোনা আক্রান্ত শরীর নিয়ে। অনেকেই আপনজনদের করোনা দিতে গেলেন। সুর তাল বাজনায় কোন মিল হল না।

আবার ছুটি শেষ হওয়ার আগেই বাড়ী থেকে আসলেন। হেঁটে আসার, ড্রামের মধ্যে আসার করুন চিত্র!আবার ছুটি, ছুটির উপর ছুটি।

এবার ও তানপুরায় সুর ছন্দময় হয়নি।দীর্ঘ ছুটি র জন্য না খেয়ে আছে অনেকেই। সরকার বাড়ী বাড়ী বাজার করে দিলেন। অনেক এই সুযোগে সিগারেট পর্যন্ত বাসায় দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।

তার পর মহা খুশি। ঈদ মোবারক। ভাল।যানবাহন বন্ধ। রিক্সা, টেম্পু, হাইজ ভাড়া দিয়ে বাড়ী যাচ্ছে ন।আর বলে বেড়াচ্ছেন আমার গাড়ি নেই ,বাড়ী যাওয়া নেই।দোকানের মধ্যেই দরজা লাগিয়ে জামা কাপড় কেনা।

আচ্ছা দীর্ঘদিন এই ছুটি তে এই নেই সেই নেই,নেই নেই।কিন্তু সামাজিক দুরত্ব ই হোক আর ব্যক্তিগত দুরত্ব হোক কয়জন মেনে চলেছেন তা করোনার সনাক্ত রেট দেখলে বোঝা যায়।

কিন্তু বাবা মা র জানাজা অনেকেই ছুটি পেয়ে করেন নি।অন্য সময় সংবাদ শোনার সাথে সাথে বাড়ী এসে যেটা সবাই করে।নিজের রোগ আপন জনদের ঠিক ই দিয়েছেন ।সরকারের ভুল ধরে মা কে ঠিক ছুটি র অবসরে জংগলে দিল অনেকেই।

এই কানুন না মানার কারনে তার হয়ত কিছু হয়নি কিন্তু রাজুর মেয়ে ঠিকই ইতিম হয়েছেন। বাড়ীতে চৌদ্দবার গেলেন আপনার কিছু হয়ত হয়নি কিন্তু সিলেটের একজন ডাক্তার ঠিক ই বিধবা হলেন ।

সুলতানের মায়ের বুক খালি হল।আরো কত করুন সুর।মৃত্যু যাত্রা র মহামারী।

তিন মাস ছুটি। সরকারী সাহায্য। থানা পুলিশ বাজার করে দিল ।ডাক্তার জীবন দিল ।কিন্তু আপনি আমি পারিনি চা সিগারেটের তুচ্ছ আড্ডা বন্ধ করতে।

এখন ছুটি যখন খুলে যাচ্ছে আবার ঐ উল্টো বাজনা। কেন আপনি স্বাস্থ্য বিধি মেনে এক বার অন্তত দেখান। আমরা শুধু মেশিনে উঠে ওজন মাপা জানি ।কিন্তু কেউ ই জানি না হাতের ওজন কত,পেটের ওজন কত,নারী ভূরির ওজন কত,মাথার ওজন কত।শুধু মোট ওজন সেটাও মেশিনে ওঠে বলে বলতে পারি।

আর সে কারনেই যে কোন পর্যায়ে র নাগরিক ই সরকারের সমালোচনায় পঞ্চমুখ ।অনেকেই নিজের সুবিধা র জন্য কথায় কথায় সচিব, ডিসি,এসপি,জজ,ব্যারিস্টার, ডাক্তার, নার্স যাকে তাকে যখন তখন সমালোচনা করি।কিন্তু সরকার যে গানের ছন্দে থাকে তানপুরায় সে সুর তোলা নাগরিক কত জন আছে তা করোনা সনাক্ত রেট দেখলে ই বোঝা যায়।

সবাই সবার ভুল ধরে ।যারা ভুল ধরে তারা ঠিক হলে সবাই ভূল ?আবার তারা সবাই ঠিক না হলে অন্য রা সবাই তো ভুল।তাহলে সবাই ভুল?

আমার জানা মতে আমার দেশের সরকার ই একমাত্র করোনায় সরাসরি তার নাগরিকদের সাহায্য করেছে।

কিন্তু সরকার কি নির্দেশনা দিল আর অনেক অনেক জন তা কি মেনে চললাম। আমাদের অনেকের ই উল্টো চলা ই আভিজাত্য আর এরাও এক ধরনের করোনা ভাইরাস।

সরকার ঠিক ই করছে ।শতভাগ করছে।কিন্তু তানপুরা? তানপুরা কি তা বাজায়?