গোপনে ঈদের কেনাকাটা করলেই, পেতে হচ্ছে শাস্তি, গুণতে হচ্ছে জরিমানা !

রাজশাহী জেলা ও মহানগরে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ঝুঁকি এড়াতে মার্কেট-দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রশাসনের। কিন্তু সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে এখনও কিছু কিছু ব্যবসায়ী কৌশলে দোকান খুলছেন। তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকছেন। ক্রেতা ধরে দোকান থেকে মালামাল এনে দিচ্ছেন।

এভাবে তাদের কাছ থেকে গোপনে যারা ঈদের কেনাকাটা করছেন তাদেরও ধরে ধরে জরিমানা করছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গতকাল শুক্রবার রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার এলাকায় এভাবে বেশ কয়েজনককে জরিমানা করতে দেখা যায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত আমান আজিজকে। দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় তার অভিযান অব্যাহত ছিলো।

হাতে শপিং ব্যাগ দেখে সকালে সাহেববাজার এলাকায় এক তরুণের পথ আটকায় পুলিশ। এ সময় তার ব্যাগে পাওয়া যায় একটি নতুন প্যান্ট। ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত আমান ওই তরুণের কাছে জানতে চান কোন দোকান থেকে কিনে আনলেন। কিন্তু ওই তরুণ বলেন, স্যার, দোকানটা বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি ঠিকানা জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তাই তাকে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

একই সময় সাহেববাজার এলাকায় দুই নারীকে হেঁটে যেতে দেখে তাদের আটকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত আমানের কাছে স্বীকার করেন তারা ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। কিন্তু এটি তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপারে বলে মন্তব্য করেন। তখন ম্যাজিস্ট্রেট তাদের ৩০০ করে ৬০০ টাকা জরিমানা করেন।

এছাড়া সাহেববাজার ওভারব্রিজ সংলগ্ন একটি কাপড়ের দোকান থেকে পোশাক বিক্রির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত এক ব্যবসায়ীকে এক হাজার টাকা জরিমানা করেন। এভাবে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। তবে সকালে নিউমার্কেটের ভেতর থেকে ব্যবসায়ীদের মালামাল এনে দিতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা নিউমার্কেটের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকছেন। কেউ সেদিকে গেলে জানতে চাইছেন কী লাগবে। এরপর দোকান থেকে এনে দিচ্ছেন।

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে আগেই সারাদেশের মার্কেট-দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু গত ১০ মে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত আসে। এরপর রাজশাহীর দোকানীরা সামাজিক দূরত্ব না মেনেই ব্যবসা করছিলেন। এ অবস্থায় গত সোমবার জেলা আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভায় ওষুধ, জরুরি সেবা, খাবার ও কাঁচাবাজার ছাড়া রাজশাহীর সব দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর গত মঙ্গলবার থেকে নগরীতে অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠে আছেন। পাশাপাশি বিনাপ্রয়োজনে ঘোরাফেরা করলে জরিমানা ও ১৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখে শাস্তি দেয়া হচ্ছে।