ডিমলায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ

জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে ২৫ % বরাদ্দ ও করোনা দুর্যোগকালীন সময়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ৩ দফা দাবি নিয়ে অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ডিমলা উপজেলা শাখার আয়োজনে ২০ মে সকাল ১১ টায় নীলফামারী জেলা ডিমলা গোল চত্তরে ঘন্টাব্যাপী নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

উক্ত মানববন্ধনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ডিমলা উপজেলার সভাপতি জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জয়পুরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান রাশেদ, ডিমলা উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মহেন রায়, দপ্তর সম্পাদক আশিকুর ইসলাম প্রমুখ।

আরো পড়ুন :
১২ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালাতে পারে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান
বাড়িতে থাকা এই সময়ে সিঁড়ি ভাঙুন
যশোরে আইসোলেশনে থাকা এক নারীর মৃত্যু

বক্তারা বলেন, জুন মাস আসন্ন বাজেটের মাস। খুব দ্রুতই নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হবে বলার অপেক্ষা রাখে না, পুরো বিশ্ব আজ এক ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে আজ গোটা মানবজাতিকে এক রকম বন্দী জীবনযাপন করতে হচ্ছে। ফলে থমকে দাড়িয়েছে পৃথিবী, আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ আবাসন ব্যবস্থার বাইরে থাকায় তাদের বাসা/ মেস ভাড়া করে থাকতে হয়। এই করোনাকালীন সময়ে তারা পড়েছে বহুমখী সংকটে।

আমরা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা , গবেষণা ও স্বাস্থ্যখাতে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করে আসলেও জাতীয় বাজেটে কখনও এর প্রতিফলন দেখা যায় নি। সাত বছর আগে ২০১১- ১২ অর্থবছরে জাতীয় ছিল ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। সেখানে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল ১২ দশিম ১১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বাজেটের আকার বেড়ে হয়ে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। তাতে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কমে হয় ১১দশিম ৫৩ শতাংশ। তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখে গেছে, আটটি অর্থবছরের মধ্যে এক বছর বাদে সব সময়ই শিক্ষাখাতে বরাদ্দ জাতীয় বাজেটের ১০ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। যেখানে ইউনেস্কো বলেছেন মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়তে হলে অবশ্যই দেশের বাজেটের ২৫% ও জিডিপির ৬ ভাগ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ থাকা বাঞ্চনীয়।

একই সাথে যদি আমরা স্বাস্থ্যখাতে অবস্থা দেখি সেখানেও একই চিত্রই ফুটে উঠেছে। ২০১৯ – ২০ অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ ছিল ২৫, ৭৩২ কোটি টাকা অর্থাৎ মোট বাজেটের ৫%। ২০১৮ – ১৯ অর্থবছরে ছিল ২৩, ৩৮৩ কোটি টাকা, ২০১৭- ১৮ অর্থবছরে ২০ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা। বিপরীতে সামরিক খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ করা হয়েছে ৩২, ১০১ কোটি টাকা, ২০১৮- ১৯ অর্থবছরে ছিল ২৯,০৮৪ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সংশোধিত বরাদ্দ ছিল ২৬, ৪১৫ কোটি টাকা।

স্বাস্থ্য খাতে যে বেহাল দশা এই করোনা ভাইরাস উন্মোচন করেছে তা আজ সবার সামনে স্পষ্ট। একটি বিভাগীয় শহরেও পর্যাপ্ত আইসিইউ না থাকার ফলে এক জন ডাক্তারকে এখানে জীবন দিতে হয়। টেস্টিং যে পর্যাপ্ত না তা আমরা বুঝি যখন দেখি একনজন জাতীয় অধ্যাপক মারা যাবার পর তার রির্পোটে করোনা পজিটিভ আসে। আজ এই ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র যদি এই উপলব্ধিতে পৌঁছাতে না পারে, তাহলে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতার আর কোন অর্থ থাকবে না। তাই আসন্ন বাজেটে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের পক্ষ থেকে শিক্ষাখাতে ২৫% ও স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ করোনাকালীন সময়ে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগিতা ও বাসা/ মেস ভাড়া মওকুফ করা , সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক বছরের বেতন – ফি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সেমিস্টারের টিউশন ফি মওকুফ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

মে ২০, ২০২০ at ১৫:১৮:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আরআর/এএডি