ডিমলায় ৩ দফা দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট উপজেলা শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন

নীলফামারী জেলা, ডিমলা উপজেলার ডাঙ্গারহাটে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ডিমলা উপজেলা শাখার উদ্যোগে বুধবার সকাল ১১ টায় উপজেলা সভাপতি জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, জয়পুরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান রাশেদ, ডিমলা উপজেলার অর্থ সম্পাদক আশিকুর ইসলাম, সদস্য মেহেদী হাচান প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।

আরো পড়ুন :
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ লাখ ছাড়িয়েছে
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে ধূমকেতু ‘সোয়ান’
দৌলতপুরে এবার ঢাকা ফেরত পুলিশ সদস্য স্ত্রীসহ করোনায় আক্রান্ত

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা মহামারীতে দেশ এক সংকটকাল অতিক্রম করছে। শ্রমজীবী মানুষেরা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। ফলে তাদের আয়ের সমস্ত পথ বন্ধ। অর্থনৈতিক সংকটে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের জীবন বিপর্যস্ত।পরিবারের খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে সরকার সংক্রমন রোধ করতে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ আমরা জানতে পারছি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদ শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন-ফি প্রতিষ্ঠানে জমা দেবার নোটিশ জারি করছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন এহেনো সিদ্ধান্তে আমরা হতবাক হয়েছি৷ অপরদিকে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী অধিকাংশ শিক্ষার্থী যারা কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মেস/ ভাড়াকৃত বাসায় থেকে শিক্ষাগ্রহন করতো তারা মেস / ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। আমাদের দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের সন্তানেরা যারা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন সেই শিক্ষার্থীরা অধিকাংশয় টিউশনি/খণ্ডকালীন চাকুরী করে শিক্ষাজীবন পরিচালনা করেন৷ এই শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ পরিবার কর্মজীবী তাদের হাত চললে পেট চলে, করোনা পরিস্থিতিতে আজ তারা কর্মহীন হয়ে চরম আর্থিক সংকটে দিশেহারা হয়ে দিনাতিপাত করছে এবং শিক্ষার্থীদের নিজের টিউশনি বা খন্ডকালীন চাকরি না থাকায় কোন ক্রমেই এই শিক্ষার্থীদের পক্ষে মেস /বাসা ভাড়া দেওয় সম্ভব নয়। এমতাবস্থায় আমরা অনতিবিলম্বে এ সকল শিক্ষার্থীদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা ও মেস-বাসা ভাড়া মওকুফ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা এবং সরকারি বরাদ্দ দেয়ার জোর দবি জানাচ্ছি৷ কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি সরকার সেদিকে না গিয়ে, নিরবতা ভান করে মুনাফা লোভী মালিকদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন।

আবার কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস-পরিক্ষা নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে এ ক্ষেত্রে আমরা মনে করি আমাদের মত ধনবৈষম্যর সমাজ অর্থনীতির দেশে অনলাইনে ক্লাস-পরিক্ষা নেয়াতে আরও বৈষম্য বৃদ্ধি পাবে, গ্রামের একজন নিম্ন আয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীর ইন্টারনেট কানেকশন ও ব্যবহারের জন্য একটি ডিভাইজ এর নিশ্চয়তা কে দিবে, যদি না দেয়া হয়, তাহলে কি ভাবে অন লাইনে ক্লাস করবে। আমাদের দেশে ডিভাইসগুলো কতটুকু কার্যকর তা নিয়েই নানান প্রশ্ন রয়েছে। সে কারণে পর্যাপ্ত আয়োজন নিশ্চিত না করে,তাড়াহুড়া করে অন লাইনে ক্লাস-পরিক্ষা শুরু করা হলে তা শিক্ষার্থীদের চরম বৈষম্যের মধ্যে ফেলবে। তাই নেতৃবৃন্দ নিম্নোক্ত তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

দাবিসমূহ:
১। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এ বছরের বেতন-ফি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সেমিস্টারের টিউশন ফি মওকুফ করতে হবে
২। অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের বাসা-মেস ভাড়া মওকুফে প্রজ্ঞাপন ও রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ দিতে হবে
৩। সকলের জন্য পর্যাপ্ত আয়োজন নিশ্চিত করা ছাড়া অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া চলবে না।

মে ১৩, ২০২০ at ১২:৫৭:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আরআর/এএডি