পথ্য আমাদের বৈদ্য

পৃথিবীতে অনেক মানুষ অপুষ্টিতে ভোগে বড় হয়। দরিদ্র ঘরে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, অনেক শক্তিশালী হয়ে বেড়ে ওঠে, বেঁচে থাকে, প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশেষ করে আফ্রিকা দেশগুলিতে দেখে এসেছি। বড় হওয়া বেড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মতো কোনো পরিবেশে ছিল না তবুও তারা অনেক প্রতিষ্ঠিত। সম্প্রতি কক্সবাজারেও গৃহহারা সম্পদ হারা মায়ানমারের প্রতিষ্ঠিত অনেক ব্যক্তি এদেশে এসে পলিথিনের তাঁবুতে জীবন যাপন করছে এবং রোগ প্রতিরোধ করে প্রতিকূল অবস্থাও জীবন যাপন করছে।

প্রশ্ন হচ্ছে শরীরের নাম মহাশয় অনেক কিছুই সয়ে যায়। আমরা যারা ভালোভাবে বড় হয়ে সুযোগ-সুবিধা নিয়ে, স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে উঠি, তারা কিন্তু সর্দি লাগলে : এমবিবিএস ডাক্তার খুজি : ল্যাবএইড; বসুন্ধরার মতো বড় বড় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু উপরের মত যারা বেড়ে ওঠে তারা কিন্তু মরণের সময়ও সমস্ত ভালো চিকিৎসার সুযোগ সুবিধা পায় না। তাদের একমাত্র ভরসা হলো নিজের শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। নিদানের সম্বল বলেন আর গরীবের সম্মান বলেন এটাই একমাত্র ঔষধ এবং এটাই একমাত্র ডাক্তার। তাতে কিন্তু তারা জীবনে চলে ভালোভাবে বেঁচে থাকে অনেক বছর।

ধরা যাক করো না যদি ঔষধ এবং চিকিৎসা ব্যয়বহুল হত। সিঙ্গাপুর ছাড়া, নিউইয়র্ক ছাড়া চিকিৎসা পাওয়া যেত না। তাহলে কিন্তু সমস্ত পৃথিবীতে এক শ্রেণীর লোকজন আক্রান্ত হয়েও বিনা চিকিৎসায় মারা যেত। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের একশ্রেণীর মানুষের নিউ ইয়র্ক বা সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেওয়ার সামর্থ্য নেই। কিন্তু চাইলে সকল শ্রেণীর মানুষই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা বা ক্ষমতা গ্রহণ করার মত উপযুক্ত পরিবেশ দিয়ে বড় হতে পারে।

বিবর্তন বলেন পরিবর্তন বলেন গ্লোবালাইজেশন বলেন সমস্ত পৃথিবীতে একি অর্থনীতি করতে গেলে একই রোগ ছড়িয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ সমস্ত পৃথিবী একটি গ্রামের মত। আর তার পরিবর্তনে এখন চিন্তা ভাবনার সময় এসেছে ঔষধ ও চিকিৎসা নির্ভর না হয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং উপযুক্ত খাবার খেয়ে সুস্থ থাকার পদ্ধতি অবলম্বন করা।

উদাহরণস্বরূপ পৃথিবীর মধ্যবিত্তের একটি মানুষের কথা ধরা যাক। করোনার উপযুক্ত চিকিৎসা আছে। নিউইয়র্ক বা সিঙ্গাপুরের সফল চিকিৎসা পেতে ১০০০০ ডলার লাগবে। তখনো কিন্তু এই পর্যায়ের মানুষগুলি করোনা হতে সাবধানতা অবলম্বন করত। যাদের ওই মানের অর্থনৈতিক অবস্থা আছে তারা হয়তো সেই সাবধানতা অবলম্বন না করে তাদের মতো করে চলত। হার্টফেইল, স্ট্রোক, ক্যান্সার, হেপাটাইটিস, কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন, এরকম সব রোগ ওই একই ব্যয়বহুল তালিকা।

তাছাড়া বিশ্বব্যাপী নামিদামি হাসপাতাল আর ডাক্তারদের জটিল রোগের চিকিৎসা দিয়েও অধিক ব্যয়বহুল বলে তাদের নাম খুব একটা নেই।

তাহলে একটা জিনিস হয়তো আমরা সিদ্ধান্তে পৌছে যাই সেটা হল যে পৃথিবীর মানুষগুলো পরিবর্তিত আবহাওয়া ও পরিবেশের উপর ভিত্তি করে আমরা ঔষধ ডাক্তার নির্ভর না হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে নিজের উপর নির্ভর করি তাহলে জীবনের পথে অনেক ঝামেলা এড়িয়ে চলতে পারব। আর তাছাড়া উপায় তো নেই।কারণ ক্যান্সার এইডস করণা সহ অন্যান্য মরণঘাতী রোগের ঔষধ আবিষ্কার হচ্ছে না। কিছু ঔষধ থাকলেও অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

লেখক :
মোঃ ইমাউল হক, পিপিএম
পুলিশ পরিদর্শক নিরস্ত্র
ইন্টেলিজেন্স এন্ড মিডিয়া সেল
১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন
কক্সবাজার।

মে ১২, ২০২০ at ২০:৩৮:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ইএইচ/এএডি