মা একমাত্র বিনা সুদে ভালোবাসার ব্যাংক

আজ ১০ মে বিশ্ব মা দিবস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মা দিবস পালিত হবে। কিন্তু মা’কে ভালোবাসার জন্য কোনো আলাদা দিন, ক্ষণের প্রয়োজন হয় না। তবুও মা’কে শ্রদ্ধা রেখে দিবসটি পালন করা হয়। পৃথিবীর সহজতম শব্দ মা। বিশুদ্ধতম ভালোবাসা মায়ের ভালোবাসা। মায়ের ভালোবাসা পেতে প্রয়োজন হয় না ভালোবাসি বলার। সুখে, দুঃখে প্রতিটি সময় মায়ায়, স্নেহে, ভালোবাসায় যিনি জড়িয়ে রাখেন, তিনিই মা এই ছোট্ট নামেই সব মমতার মধু মাখা।

মা নামটি উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে হৃদয়ের অতল গহীনে যে আবেগ ও অনুভূতি রচিত হয়, তাতে অনাবিল সুখের আবেশ নেমে আসে। প্রতিক্ষণ-প্রতিদিন নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে সন্তানদের পৃথিবীতে চলার যোগ্য করে দেন যিনি, সেই নমস্য ‘মা’ আমার মমতাময়ী মায়ের নাম জাহানারা বেগম। মা নিজে কম খেয়ে আমাদের জন্য খাবার রেখে দেয়। অসুস্থ হলে সারা রাত ওষুধ নিয়ে ছুটাছুটি এবং ছটপট করে কখন সন্তান সুস্থ হবে। আমাদের পরিবারের শক্তিঘর বলব মা’কে কারন সকাল, দুপুর ও রাত আমাদেরকে খাবার খাইয়ে শক্তি জোগান দেন তিনি। বাড়ির আশে পাশে বিভিন্ন শাকসবজি উৎপাদন করিয়ে পুষ্টির জোগান দেন তিনি। পোশাক পরিষ্কার পরিছিন্ন রেখে আমাদের রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা করেন তিনি।

মা হল পৃথিবীর একমাত্র ব্যাংক, যেখানে আমরা আমাদের সব দুঃখ, কষ্ট জমা রাখি এবং বিনিময়ে নেই বিনাসূদে অকৃত্রিম ভালোবাসা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী অর্থাৎ মা জাতির অধিকার বরাবরই অধিকার খর্ব করা হয়। যার প্রমান কর্মক্ষেত্রে নারীরা বৈষম্যের শিখার হয়। সমাজে তাদের স্বাধীনভাবে চলাফেলার সুযোগ কম। এটাই শেষ নয় নারীরা ন্যায্য বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রেও নিশ্চয়তা কম আর গ্রামে মোড়লদের নানা কুসংস্কার কথার ফুলঝুরি শুনতে হয়। করোনা ভাইরাস এখন দুনিয়াজুরে রাজত্ব করছে।

কারও জীবন কেড়ে নিচ্ছে আবার কারও জীবন চরমদশায় ফেলে দিচ্ছে ফলে এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বে এক স্লোগানে করোনা বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। সেই স্লোগান ” লকডাউন” ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন। আর ঘরে অঘোষিত যোদ্ধার মত কাজ করে যাচ্ছে পৃথিবীর প্রতিটি মা। আমাদের দেশের শহীদ জননী জাহানারা ইমাম তার সন্তানকে যুদ্ধে পাঠিয়ে ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ হয়ে আছে। আমাদের মা জাতি এই সংকটময় মহাবিপদ থেকে আগলায় রেখে প্রতিনিয়ত সেবা যত্ন করেছে। তাই তো ভালোবাসার অপর নাম মা। নিজের জীবন মৃত্যুপথে ঢেলে দিয়ে হলেও সন্তান কে সুখে রাখে অথচ আমাদের সমাজে কিছু কুলাঙ্গার সন্তানের চরিত্র দেখে গায়ের লোম শিহরিত হয়।

বৃদ্ধ মা ‘কে রেখে আসে বৃদ্ধাশ্রমে। এটাই শেষ নয় রাস্তার ধারে ফুটপাতে, রেলস্টেশনে এমন কি অপরিষ্কার জায়গাও ফেলে রেখে চলে যায়। পৃথিবীতে এর চেয়ে অমানবিক কাজ আর হতে পারে না। এই অন্ধকারময় পথ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বৃদ্ধ বয়সে প্রতিট মানুষ শিশুর মত হয়। নিজের শক্তিসামর্থ্য থাকে না। তাদের রাগ অভিমান একটু বেশি হয়। করোনা ক্রান্তিকালে বৃদ্ধ মায়েদের নিজে সন্তানের মতো করে বিশেষ নজরে রেখে সেবাযত্ন করতে হবে। বিশ্ব মা দিবসে বিশ্বের সকল মায়েদের প্রতি অকৃতিম শ্রদ্ধা ভালোবাসা রইল।

লেখকঃ রাশেদুজ্জামান রাশেদ তৃতীয় বর্ষ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জয়পুরহাট সরকারি কলেজ। সাধারণ সম্পাদক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, জয়পুরহাট জেলা শাখা।

মে ১০, ২০২০ at ০৯:৪৩:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/আরআর/এএডি