শহীদ মিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের হট্টগোল

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদনের সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে বঙ্গবন্ধু পরিষদের শিক্ষক কর্মকর্তারা। ২১শের প্রথম প্রহরে বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এঘটনা ঘটে। বঙ্গবন্ধু পরিষদ নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের গ্রুপিং এর কারনে এই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ২১ শে ফেব্রুয়ারীর প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদনের জন্য সমবেত হন ইবির সর্বস্তরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন বিভাগ, বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন, সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। একে একে শ্রদ্ধাঞ্জলীও নিবেদন করতে থাকেন তারা। এসময় ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির পরে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করতে বেদীতে উঠেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ। এরপরেই বঙ্গবন্ধু পরিষদের অন্য একটি পক্ষকে নির্বাচন কমিশনের ব্যানের শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদনের জন্য নাম ঘোষণা করা হয়। এতেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। ইবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবুল আরফিন, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম জোহা, সাধারণ সম্পাদক মীর মোর্শেদুল আলমসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা অনুষ্ঠানের সঞ্চালক সহকারী রেজিস্ট্রার রাজিবুল ইসলামকে ঘিরে ধরে ধমকাতে থাকে। এসময় অধ্যাপক আরেফিন তাকে বলেন, ‘তুমি নাম গুলো ঘোষণা করছো কি ভাবে? কে তোমাকে এই লিস্ট করে দিয়েছে? তোমাকে উত্তর দিতে হবে।’ এসময় বেদীতে হট্টগোল শুরু হয়। ফলে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদনের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হয়।

এরপরই শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদনের জন্য এলোমেলো ভাবে বেদীতে উঠে পরে বিভিন্ন বিভাগ, সামাজিক সংগঠন গুলো। তবে প্রায় ২০ মিনিট পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয় কর্তৃপক্ষ। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধঞ্জলী নিবেদনের সময় এমন উদ্ভুত পরিস্থিতর প্রতিবাদ জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থরা। একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ইবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীন রাজনীতির বাজে পরিস্থিতির বহিঃপ্রকাশ নতুন কিছু নয়। তবে এবারে শহীদ মিনারের মত পবিত্র স্থানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা অন্তত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কাছে কাম্য নয়।’

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা নয়, আমরা জানতে চেয়েছিলাম কেন্দ্র থেকে দেয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের কমিটির পরেও নির্বাচন কমিশনের নামে ফুল দেয়ার জন্য কেন নাম ঘোষণা করা হলো? এদের নামটা কি ভাবে লিস্ট করা হলো? নির্বাচন কমিশনের নামে ফুল দিলে দুই থেকে তিনজন যাওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে প্রশাসন পন্থি শিক্ষকরা গিয়ে দাড়ায় গেছে।’

উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘শহীদ বেদীতে যে কোন কারনেই হোকনা কেন বিশৃঙ্খলার ঘটনা সমর্থন যোগ্য নয়। এটি অত্যন্ত দুঃখ জনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’