কাজী আরেফসহ পাঁচ জাসদ নেতা হত্যার ২১তম বার্ষিকীতে স্মরণসভা

কুষ্টিয়ায় দৌলতপুর উপজেলায় কাজী আরেফ আহমেদসহ পাঁচ জাসদ নেতা হত্যাকাণ্ডের ২১তম বার্ষিকী পালন করা হয়েছে। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার ফিলিপনগরে পিএম ডিগ্রি কলেজ মাঠে শহীদ ইয়াকুব আলী কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে এ উপলক্ষে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর সেখানে অবস্থিত শহীদ ইয়াকুব আলীর সমাধিতে জাসদ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।

পরে পাঁচ জাসদ নেতার স্মরণে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ ইয়াকুব আলী কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতি ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির জনসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপনের সভাপতিত্বে এ স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম স্বপন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. এজাজ আহম্মেদ মামুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শরিফ উদ্দিন রিমন, কৃষি ব্যাংক কুষ্টিয়ার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক শামসুল ইসলাম ও পিএম কলেজর অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান।

বক্তব্য রাখেন, তারাগগুনিয়া হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু তাহের, মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী, ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলুল হক কবিরাজ, সাবেক চেয়ারম্যান নুরুর রহমান, জেলা জাসদের সাংগাঠন সম্পাদক অসিত কুমার সিংহ রায়, জাসদ নেতা বশির উদ্দিন বাচ্চু, ভেড়ামারা উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী, শহীদ ইয়াকুব আলীর ভাই লিয়াকত আলী, দৌলতপুর উপজেলা জাসদের সভাপতি সহির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম নান্নু, শহীদ ইয়াকুব আলীর জ্যেষ্ঠপুত্র ইউসুফ আলী রুশো প্রমুখ।
আরও পড়ুন: দু’বাংলার মোহনায় ২১শে ফেব্রুয়ারী উদযাপন কমিটি’র প্রস্তুতি সভা

সভায় বক্তারা আলোচিত এ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক পাঁচ আসামিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে তাদের ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানান। এ সময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকার সর্বস্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। স্মরণসভা শেষে নিহত জাসদ নেতাদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

অন্যদিকে জেলা জাসদের উদ্যোগে রোববার বিকেলে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। কুষ্টিয়া পৌরসভার বিজয় উল্লাস চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত এ স্মরণসভায় জাসদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের কালিদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে চরমপন্থি সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে নির্মমভাবে নিহত হন জাসদ সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদসহ পাঁচ জাসদ নেতা। জাতীয় নেতা কাজী আরেফ আহমেদ প্রধান অতিথির বক্তৃতা শুরু করার পরপরই একদল সশস্ত্র চরমপন্থি চারদিক থেকে মঞ্চে উঠে এসে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তাকে নৃসংশভাবে হত্যা করে। ওই সময় দুর্বৃত্তরা মঞ্চে উপস্থিত জাসদ নেতৃবৃন্দকে লক্ষ্য করে ব্রাশফায়ার শুরু করলে গুলিতে নিহত হন আরো চার জাসদ নেতা। চরমপন্থি সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে নিহত নেতৃবৃন্দরা হলেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদ, কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদ নেতা শমসের আলী এবং তফসের মণ্ডল।

দেশদর্পণ/এসআরএস/এসজে