শিশুর মোবাইল আসক্তি কমাবেন যেভাবে

‘আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ’- এই কথার গুরুত্ব বা সারকথা কিন্তু অনেক গভীর। আমরা সবাই আমাদের ভবিষ্যৎকে অর্থাৎ আগামীর দিনগুলোকে উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত দেখতে চাই। কিন্তু শুধু চাইলেই তো হবে না। সেই চাওয়া অনুরূপ কাজও করতে হবে। ভালো ফল পেতে চাইলে ভালো বীজও বপন করতে হয়।

সেই বীজ থেকে ভালো গাছ হবে, তবেই তো পাওয়া সম্ভব ভালো ফল। অর্থাৎ সন্তানকে সুষ্ঠুভাবে লালন করতে হবে। তবে বর্তমানে সময়ের যে প্রান্তে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, সেখানে থেকে একটি শিশুকে সঠিকভাবে লালন-পালন করে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ।

কারণ, প্রযুক্তির নানা উৎকর্ষতার এই সময়ে শিশুরা হাত বাড়ালেই ধরতে পারছে নানা ধরনের গ্যাজেট। মা-বাবা কিংবা অভিভাবকের ব্যবহৃত স্মার্টফোনগুলো এর ভেতরে অন্যতম। বরং শিশুরা ফোন নিয়ে এতটাই কাড়াকাড়ি করে যে বড়রা ঠিকমতো ব্যবহারও করতে পারে না। পাশাপাশি শিশুদের পড়াশোনাও লাটে উঠছে।

শিশুরা এখন আর বাইরে গিয়ে খেলার সঙ্গে পরিচিত নয়। তারা খেলা বলতে বোঝে মোবাইলের স্ক্রিনে হরেকরকম খেলা। কিন্তু এই খেলার নেশা শিশুর কোনো উপকারে আসে না, বরং মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

মোবাইলের পর্দার দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে চোখের জ্যোতি কমে যায়। শুরু হয় মাথা ধরা, মাইগ্রেন ও পেশিতে ব্যথার মতো সমস্যা। যেসব ছেলেমেয়েদের মোবাইলের নেশা অ্যাডিকশনের পর্যায়ে চলে গিয়েছে, দেখা যায়, খাওয়ার সময়েও তারা মোবাইলে কিছু না কিছু দেখছে। এই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। এতে তার ওজন আচমকা বেড়ে যেতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই অভ্যাস ছাড়ান।
আরও পড়ুন: জরায়ু ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি যেসব নারীর

৮ বছরের কম বয়সের ছেলেমেয়েদের মোবাইল থেকে দূরে রাখুন। দিনের বেশিরভাগ সময় মোবাইল ঘেঁটে কাটালে তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ হয় না। শিশুদের মস্তিষ্কের বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে হওয়া উচিত। এর ফলে তাদের মধ্যে সংবেদনশীলতা বাড়ে, চিন্তার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

মোবাইল ফোনের নেশা ছাড়ানো সহজ কথা নয়। শিশু জেদ করতে পারে, অনেকসময় খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেয়। প্রথমে তাকে এ ব্যাপারে বোঝান। তারপর ধীরে ধীরে নেশা কমানোর চেষ্টা করুন।

যেসব উপায়ে শিশুর মোবাইলের নেশা ছাড়াবেন:

বাইরে বেরিয়ে খেলাধুলোয় যোগ দিতে জোর দিন। আউটডোর গেমসে যোগ দেয়ান। বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে উৎসাহ দিন।

টাইমটেবিল তৈরি করে দিন, তা মেনে চলতে বলুন। অবসর সময়ে হাতের কাজ, ছবি আঁকা এসবে জোর দিন।

রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ার অভ্যাস করান, বেশি রাত জাগা শিশুর শরীরের পক্ষে ভালো নয়। শোয়ার আগে ইষদুষ্ণ দুধ খাওয়ান।

শিশুর খাওয়াদাওয়ার দিকে নজর রাখুন। খাবারে পুষ্টি যেন ঠিকমত হয়। সবুজ শাকসবজি যেন বেশি করে খায়।

জাঙ্ক ফুড খাওয়া বন্ধ করুন। কোল্ড ড্রিঙ্কের বদলে দিন লাচ্ছি ও ফলের রস।

দেশদর্পণ/এসজে