পিআইও’র বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল, আহত ৫

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বিতর্কিত পিআইও নুরুন্নবী সরকারের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে জাতীয় পার্টির ঝাড়ু মিছিলে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ পিআইও’র ভাড়াতে লোকজন। এতে জাতীয় যুবসংহতি ও ছাত্র সমাজসহ অন্তত ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ছাইফুল ইসলাম নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্তরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির ব্যানারে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী পিআইও নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করে উপজেলা পরিষদ চত্তরে অবস্থান নেয় জাতীয় পার্টি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় দুর্নীতিবাজ পিআইও’র অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়য় নেতাকর্মীরা। কিন্তু হঠাৎ করেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এবং পিআইও’র লোকজন তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সুন্দরগঞ্জ পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি আবদুর রশিদ সরকার ডাবলু বলেন, পিআইও নুরুন্নবী’র পক্ষ অবলম্বন করে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা সুমন আন্দোলনকারীদের হাত থেকে প্লে কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে হামলা করে। পরে তার সঙ্গে আরও ১৫-২০ জন তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা পরিষদের তালাবদ্ধ প্রবেশ গেট খুলে ভিতরের প্রবেশের চেষ্টা করে। এসময় তারা পুলিশের উপস্থিতে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলার ঘটনায় গেটে থাকা বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষীকির ক্ষণগণনা (কাউন ডাউন) ভাঙচুরসহ ৪-৫ জন নেতাকর্মী গুরুত্বর আহত হয়। আহতরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন’।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভায় পুনর্বণ্টন

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান মণ্ডলের অভিযোগ, ঘটনার পর হামলাকারীরা জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যালয়ের চেয়ার-টেবিলসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এসময় তারা উপজেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি সুলতান সুজনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে নেতাকর্মীকে হুমকি দেয়। দুর্নীতিবাজ পিআইও’র পক্ষ এবং তাকে সুন্দরগঞ্জে বহাল রাখতে পরিকল্পিতভাবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আ’লীগের যুগ্ন আহবায়ক আশরাফুল আলম লেবুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগসসহ পক্ষের লোকজন এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ তার’।

এদিকে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের ক্ষণগণনার কাউন্টডাউন ভাঙচুরের প্রতিবাদে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম লেবুর নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। তবে, পিআইও’র পক্ষ অবলম্বন ও হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, পিআইওর বিরুদ্ধে মিছিল করে পরিষদের গেট ভাঙচুরের চেষ্টা চালায় এবং ক্ষণগণনার ঘড়ি ভাঙচুর করে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। বঙ্গবন্ধুকে অবমাননাকারীদের শাস্তিসহ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

তবে, বঙ্গবন্ধুর ক্ষণগণনার ঘড়ি ভাংচুরের ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানালেও অনাকাঙ্খিত এ ঘটনার জন্য ব্যক্তি স্বার্থকে দায়ী করছেন উপজেলা আ.লীগের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক সাজেদুল ইসলাম বলেন, বিতর্কিত পিআইও’র দুর্নীতি-অপকর্মের শাস্তিসহ অপসারণ দাবিতে সোচ্চার বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। জাতীয় পার্টির আন্দোলন কর্মসূচিতে পিআইও’র পক্ষ হয়ে যে হামলা ও বঙ্গবন্ধুর ক্ষণগণনার ঘড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে তার দায় দলের নয়’।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনের দ্রুত কার্যকর চায় রাবি ছাত্রলীগ

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল আলম রেজা বলেন, ‘ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারে পিআইও’র বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টির মিছিলে ছাত্রলীগ নেতা সুমনসহ পিআইও’র লোকজন যে হামলা চালিয়েছেন তা অত্যন্ত নিন্দানীয়। যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা সোচ্চার সেখানে দলের পরিচয়ে কেউ দুর্নীতিবাজের পক্ষ নিলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া দরকার’।

এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহিল জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলেও তাৎক্ষনিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ ঘটনাস্থল থেকে সাইফুল নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি’।

দেশদর্পণ/এসকেবি/এসজে