পাঁচলাইশে পাহাড় কাটছে প্রবর্তক সংঘ

পাঁচ থেকে ছয় জন শ্রমিক মনোযোগ সহকারে কাজ করে চলেছে। কারও হাতে কোদাল, কারও হাতে মাটি রাখার ঝুড়ি। কেউ মাটি কাটছে, আবার কেউ ঝুড়িতে করে মাটি বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবেই নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার রুপনগর কমিউনিটি সেন্টারের পাশে বড়ুয়া পাড়ায় কয়েকজন শ্রমিক পাহাড় কাটার মহোৎসবে মেতেছে।

নগরীতে ইট-কংক্রিটের জঙ্গল বানানোর নামেই চলছে উন্নয়ন! চলছে পাহাড় ও বৃক্ষনিধনের এই মহোৎসব। শ্রমিকদের পাহাড় কাটার নির্দেশ দিয়ে এই প্রতিযোগিতায় শামিল হয়েছে ‘প্রবর্তক সংঘ’ নামে ইসকন শ্রীকৃষ্ণ মন্দির কর্তৃপক্ষ। এদিকে পাহাড় কাটার খবর পেয়ে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন পরিদর্শনে যান পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এসময় শ্রমিকরা জানায়, পাহাড় কাটার নির্দেশনা দিয়েছে প্রবর্তক সংঘ। পাহাড় কাটার সত্যতা পাওয়ায় ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দির কর্তৃপক্ষকে ১২ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে হাজির হওয়ার নোটিশ দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) শুনানি শেষে মন্দির কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা লীলারাজ গৌর দাসের উপস্থিতিতে পাহাড় কাটার দায়ে প্রবর্তক সংঘকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসাইন।
আরও পড়ুন: আনসার-ভিডিপির সাহসিকতা সর্বজনস্বীকৃত: প্রধানমন্ত্রী

পাহাড় কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন খবর পেয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি পরিদর্শনে গেলে পাহাড় কাটার সত্যতা পাই। তখন শুনানিতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। শুনানি শেষে পাহাড় কাটার দায়ে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

এদিকে, পাহাড় কাটায় কর্মরত শ্রমিকদের দাবি রাস্তা উন্নয়নের জন্যই মূলত পাহাড় কাটা হচ্ছে। তবে এই বিষয়ে কিছুই জানেন না প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক দিনকড়ি চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি তো কিছুই জানি না। পাহাড় কোথায় কাটা হয়েছে? কত টাকা জরিমানা হয়েছে? আমি দেখছি বিষয়টি।প্রসঙ্গত, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু ব্যক্তির উদ্যোগেই প্রতিষ্ঠিত হয় প্রবর্তক সংঘ। স্বদেশি আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব মতিলাল রায় পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রবর্তক সংঘ। তাঁরই অনুসারী বঙ্কিম সেন চট্টগ্রামে এসে সতীর্থ ও সমাজের দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তায় নগরীর পাঁচলাইশের গোলপাহাড়ে গড়ে তোলেন এই প্রতিষ্ঠান।

দেশদর্পণ/এইচআর/এসজে