বসন্ত বাতাসে ভালোবাসা আছে মিশে

আগের দিন পয়লা ফাল্গুন। পরের দিন ভালোবাসা দিবস। পরপর দুই দিন নগরে দেখা যেত তারুণ্যের উদ্​যাপন। এবার বসন্তের প্রথম দিন আর ভালোবাসা দিবস একই দিনে, ১৪ ফেব্রুয়ারি উদযাপন হবে।

উৎসব ছিল পরপর দুই দিন। ১ ফাল্গুন, খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জির হিসাবে ১৩ ফেব্রুয়ারি, বসন্তবরণের প্রথম দিন। পরদিনই রং পাল্টে যেত। হাতে লাল গোলাপ। ভালোবাসার দিন বলে কথা, ১৪ ফেব্রুয়ারি—ভ্যালেন্টাইনস ডে।এবার বসন্তবরণ ও ভালোবাসা দিবস ঘটা করে পালন করা হবে এক দিনেই—১৪ ফেব্রুয়ারি। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে সংশোধনের কারণে এখন থেকে দুটি দিবসই ১৪ ফেব্রুয়ারি উদযাপন হবে।

বাংলা বর্ষপঞ্জি সংশোধনের কাজ করে বাংলা একাডেমির গবেষণা, সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগ।

এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির পরিচালক (গবেষণা, সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগ) মোবারক হোসেন বলছিলেন, পুরনো নিয়মে বৈশাখ থেকে ভাদ্র- এই পাঁচ মাস গণনা করা হতো ৩১ দিনে। আশ্বিন থেকে চৈত্র- সাত মাস হতো ৩০ দিনে। তবে ইংরেজি লিপইয়ারে ফাল্গুনে মাস ৩১ দিনে হতো। এখন নতুন নিয়মে বৈশাখ থেকে আশ্বিন- প্রথম ছয় মাস ৩১ দিনে হবে। কার্তিক, অগ্রাহায়ণ, পৌষ, মাঘ ও চৈত্র- এই ৫ মাস ৩০ দিনে হিসাব করা হবে। ফাল্গুন মাস হিসাব করা হবে ২৯ দিনে। ইংরেজি লিপইয়ারের বছর এক দিন বেড়ে ফাল্গুন হবে ৩০ দিনে।
আরও পড়ুন: তিন উৎসবকে সামনে রেখে জমজমাট ফুলের রাজ্যের ফুল বাজার

সংশোধনের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা করা হলো বিভিন্ন রকম দাবির পরিপ্রেক্ষিতে। নতুন ক্যালেন্ডারে আগামী ১০০ বছর মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস বাংলাবর্ষের যে তারিখে ঘটেছে, ইংরেজি ক্যালেন্ডারের সঙ্গে তার হেরফের হবে না।

বাংলা বর্ষপঞ্জি সংস্কার কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগের দিনটি ছিল বাংলা বর্ষপঞ্জির ৮ ফাল্গুন। কিন্তু এখন ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পালনের দিনটি বাংলা বর্ষপঞ্জির ৯ ফাল্গুন হয়। তাই ২০২০ সাল থেকে শহীদ দিবস ও আন্তর্জতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি হবে বাংলা সনের ৮ ফাল্গুন।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ছিল ১ পৌষ। কিন্তু এখন ১৬ ডিসেম্বরের দিন হয় ২ পৌষ। সংস্কারের কারণে এখন থেকে ১৬ ডিসেম্বর হচ্ছে ১ পৌষে।

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সঙ্গে বাংলা বর্ষপঞ্জির তারিখগুলোর সমন্বয় করার উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানকে সভাপতি করে একটি কমিটি করা হয়। সেই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এসব সংস্কার আনা হয়।

দেশদর্পণ/এসজে