কৃষকের লাশ ফেরতে বিএসএফের গড়িমসি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি কৃষক সোলাইমান মোল্লার (৪৮) লাশ তিন দিনেও ফেরত দেয়া হয়নি। লাশ ফেরত দিতে বিএসএফ গড়িমসি করায় নিহতের পরিবার উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে।

গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এ উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের ছলিমের চর সীমান্ত এলাকায় নোম্যান্স ল্যান্ডের ১৫৭/২ (এস) সীমানা পিলার সংলগ্ন বাংলাদেশি ভূখণ্ডে সোলাইমান মোল্লা, রুবেল ও সাহাবুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন স্থানীয় কৃষক নিজ জমিতে সরিষা কাটার জন্য গিয়েছিলেন। সে সময় ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানার মুরাদপুর ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন।

এতে সোলাইমান মোল্লা পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। তার সঙ্গে থাকা অপর কৃষকরা কোনোমতে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান। পরে গুলিবিদ্ধ কৃষক সোলাইমান মোল্লাকে বিএসএফ সদস্যরা টেনেহিঁচড়ে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যান। তাকে ভারতের মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবশেষে গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মারা যান সোলাইমান মোল্লা।

এ নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের উচ্চপর্যায়ে দফায় দফায় চিঠি চালাচালি হলেও নিহত সোলাইমান মোল্লার লাশ ফেরত দিতে বিএসএফের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিতিতে বাংলাদেশি পুলিশের কাছে তার লাশ ফেরত দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছে না।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিজিবির ৪৭ ব্যাটালিয়নের (কুষ্টিয়া) সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, আজ সোমবার উপজেলার বাংলাবাজার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠকের কথা রয়েছে। বিএসএফের ১৪১ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সাফিয়া বিন খানসি ও বিজিবির ৪৭ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল রফিকুল আলমের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিতব্য এ বৈঠকের মাধ্যমে কৃষক সোলাইমান মোল্লার লাশ ফেরত দেয়া হতে পারে বলে বিজিবি সূত্র জানিয়েছে।

নিহত সোলাইমান মোল্লার বাড়ি দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের মরারচর গ্রামে। তিনি কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বিএসএফের গুলিতে তার মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা শোকের পাশাপাশি চরম দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তিনদিন পেরিয়ে গেলেও বিএসএফ মরদেহ ফিরিয়ে না দেয়ায় উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে পরিবারটি।