কিস্তির টাকার জন্য মারপিট, গ্রাহকসহ আহত ৩

জয়পুরহাট জালার কালাই উপজেলার ঋণগ্রহিতা ও তার পরিবারকে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে গ্রাম উন্নয়ন কর্ম (গাক) নামে একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের বিরুদ্ধে। শনিবার রাত ৮টার দিকে কালাই পৌর শহরের সোনালী ব্যাংক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- ঋণগ্রাহক রহেদুল ইসলাম, তার স্ত্রী মনিষা বেগম এবং মা মোমেনা বেগম। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

রহেদুল পরিবারসহ কালাই উপজেলার পৌর শহরের সোনালী ব্যাংক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। ঋণের কিস্তি নিতে গাক-এর উপজেলা ব্যবস্থাপক আব্দুল ওহাব, মাঠকর্মী আনছার আলীসহ চারজন তার বাসায় যান। সেখানে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তারা রহেদুল ইসলামকে মেঝেতে ফেলে মারধর করেন। তাকে রক্ষা করতে এলে তার মা মোমেনা বেগম ও স্ত্রী মনিষা বেগমকেও তারা মারধর করেন।

তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে ব্যবস্থাপক আব্দুল ওহাব কর্মীদের নিয়ে উপজেলার ডাকবাংলোতে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন।
আরও পড়ুন: যাদুকাটা নদীর ৩০হাজার শ্রমিকের রুজি বন্ধে গভীর চক্রান্ত

রহেদুলের ভাবি ফাতেমা বেগম বলেন, ‘সমস্যার কারণে রহেদুল কিস্তির টাকা সময় মতো পরিশোধ করতে পারেননি। এজন্য সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু গ্যাক সংস্থার লোকজন বাড়িতে এসে রহেদুলকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং মারধর করেন। আমরা এর বিচার চাই।’

রহেদুলের মা মোমেনা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘মাত্র ৬৫০ টাকা কিস্তির জন্য ওরা আমাদের নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে। অনেক হাত-পা ধরেছি তারা কোনো কথায়ই শোনেনি।’

আহত রহেদুল বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আমার নামে ২৬ হাজার টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হলেও বড় ভাই এবং অন্য সদস্যদের বকেয়া দেখিয়ে ২২ হাজার টাকা কেটে নিয়েছেন। তারপরও আমি ৬৫০ টাকা হারে সাপ্তাহিক কিস্তি দিয়েছি। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে গত দেড় মাস কিস্তি দিতে পারিনি। ফেব্রুয়ারি মাসটা সময় চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার কোন কথা না শোনে তারা মারধর করে। বাঁচাতে এসে আমার মা ও স্ত্রীও আহত হয়।

গাক’র শাখা ব্যবস্থাপক আব্দুল ওহাব বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘রহেদুল ঋণ নিয়ে টাকা না দিয়ে কয়েক মাস থেকে পালিয়ে আছেন। তার খোঁজ পেয়ে আমরা দু’জন তার বাড়িতে কথা বলতে যাই। সেখানে গিয়ে উল্টো তাদের আক্রমণের শিকার হয়েছি। আমরা তাকে মারপিট করিনি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে রহেদুল এবং তার পরিবার ঋণের টাকা না দেওয়ার ফন্দি এঁটেছে। বরং প্রতিবেশীদের ভুল বুঝিয়ে আমাদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা দ্রুত পালিয়ে রক্ষা পেয়েছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নুর আলম রিকো বলেন, ‘আহতদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।’

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দেশদর্পণ/এএলএম/এসজে