চারজনকে কুপিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যার ঘটনায় ২ মামলা

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় চারজনকে কুপিয়ে হত্যার পর পর আত্মহত্যার ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে। রবিবার রাতে বড়লেখা থানায় হত্যা ও অপমৃত্যর দুটি মামলা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন বড়লেখা থানার ওসি ইয়াসিনুল হক।

এর আগে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় শাহবাজপুর ইউনিয়নের পাল্লাথল চা বাগানে স্ত্রী ও শাশুড়িসহ চারজনকে কুপিয়ে হত্যার পর পর আত্মহত্যা করেছেন নির্মল কর্মকার (৩২)। এ সময় পালিয়ে রক্ষা পেয়েছে স্ত্রীর আগের পক্ষের মেয়ে চন্দনা (৮)। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন একই পরিবারের আরও এক নারী।

নিহতরা হলেন- নির্মল কর্মকারের স্ত্রী জলি বক্তা, তার মা লক্ষ্মী ব্যানার্জি, ভাই বসন্ত বক্তা ও তার মেয়ে শিউলি বক্তা। পুলিশ ও এলাকাবাসীর বলছেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, উপজেলার সীমান্তবর্তী পাল্লাথল চা বাগানের বাজার টিলার বাসিন্দা বিষ্ণু বক্তার মেয়ে বাগান শ্রমিক জলি বক্তাকে (২৮) প্রায় ছয় মাস আগে বিয়ে করেন নির্মল কর্মকার।

জলির আগের স্বামীর ঘরের চন্দনা নামে ৮ বছরের একটি মেয়েশিশুও তাদের সঙ্গে থাকত। রোববার ভোরে নির্মল ও জলির মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে নির্মল ধারালো দা দিয়ে জলিকে কোপাতে শুরু করলে তিনি দৌড়ে মা লক্ষ্মী ব্যানার্জির (৪৭) ঘরে গিয়ে আশ্রয় নেন।
আরও পড়ুন: প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি

নির্মল সেখানে ঢুকে জলি, তার মা লক্ষ্মী ব্যানার্জি, ভাই বসন্ত বক্তা ও ভাইয়ের স্ত্রী কানন বক্তা এবং তাদের মেয়ে শিউলি বক্তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়।

এর পর ঘাতক নির্মল কর্মকার দা দিয়ে নিজের গলায় কোপাতে কোপাতে বসন্তের ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।

পরে স্থানীয়রা এসে গুরুতর আহত কানন বক্তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে নিহত জলির সাবেক স্বামীর ঘরের মেয়ে চন্দনা ঝগড়া শুরুর পরই পালিয়ে যাওয়ায় নির্মলের হাত থেকে রক্ষা পায়।

পাল্লাথল চা বাগান শ্রমিক পঞ্চায়েতের সভাপতি কার্তিক কর্মকার বলেন, ঘাতকসহ একই পরিবারের পাঁচজনের লোমহর্ষক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসী স্তম্ভিত। এ ঘটনায় উপজেলাজুড়ে শোকের ছায়া বিরাজ করছে। তিনি বলেন, ঘাতক নির্মল কর্মকার অন্য এলাকার। সে প্রায় দুই বছর ধরে এ এলাকায় বসবাস করছে। ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে কোপানোর সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে একে একে সবাই নির্মলের হাতে খুন হন।

বড়লেখা থানার ওসি (তদন্ত) মো. জসীম বলেন, বেলা ২টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কিনা পুলিশ তা অনুসন্ধান করছে।

দেশদর্পণ/এসজে