বিষমুক্ত সবজি চাষে সংসারে সচ্ছলতা!!

নড়াইলে বিষমুক্ত সবজি চাষে সংসারে সচ্ছলতা।রাজ কুমার পালের বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের চরবিলা গ্রামে। বাড়ির সামনের উঠানসহ ৫০ শতাংশ জমিতে শাকসবজি চাষ করেছেন। এই জমিতে শসা, আলু, শিম, ঝিঙে, টমেটো, ডাঁটাশাক, পালংশাক, পুঁইশাক, লালশাক, ঢ্যাঁড়স ও বাতাবি লেবু চাষ করা হয়েছে। চাষাবাদে ব্যবহার করা হয়েছে জৈব সার। বিষমুক্ত সবজি হিসেবে রাজ কুমার পালের সবজি বিশেষ কদরও পাচ্ছে। রাজ কুমার পাল (৫২) ভ্যান চালিয়েছেন। কখনো মাটিকাটা শ্রমিকের কাজ করেছেন। আবার কখনো পরের জমিতে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। তবু তাঁর সংসারে অভাব লেগেই ছিল। অবশেষে সবজি চাষ করে তাঁর সংসারে সচ্ছলতা এসেছে। গত বছর থেকে বিষমুক্ত সবজি চাষ শুরু করেন রাজ কুমার। তবে ওই বছর তিনি কিছুটা লোকসানে পড়েছিলেন। চলতি মৌসুমে তিনি লাভের দেখা পেয়েছেন। ৮ হাজার টাকা ব্যয় করে এ মৌসুমে উচ্চফলনশীল জাতের সবজি ফলিয়েছেন। গত ৫০ দিনে সবজি বিক্রি করে ঘরে তুলেছেন ২০ হাজার টাকা। আরও প্রায় ৩০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি হবে।।

রাজ কুমার পাল জানান, প্রতিদিন ভোরে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে জমি থেকে টাটকা সবজি তুলে পরিষ্কার করেন। পরে বাইসাইকেলে করে ১৫ কিলোমিটার দূরে শহরের বাজারে বিক্রি করতে যান। গত বছর পাইকারি দরে বিক্রি করতে গিয়ে ১০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছিল। এবার তিনি নিজেই বাজারে নিয়ে সবজি বিক্রি করছেন । এতে তিনি দামও বেশি পাচ্ছেন। গত বছরের লোকসান এবার উঠে আসবে। সবজি চাষে রাজ কুমার পালের সংসারে সচ্ছলতা এসেছে। কৃষিকাজে তাঁকে সহায়তা করেন তাঁর স্ত্রী। এ দম্পতির দুই ছেলে কলেজে পড়েন। সাফল্য আসায় আরও বেশি জমিতে সবজি চাষের পরিকল্পনা করছেন রাজ কুমার পাল।
আরও পড়ুন: ভুরুঙ্গামারীতে ‘বুরো বাংলাদেশ’ এর উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ

তিনি বলেন, ‘টাকা সঞ্চয় করে আগামী বছর কিছু জমি কিনব। বেশি জমিতে সবজি চাষ করলে আরও বেশি লাভ হবে।’ রাজ কুমার পালের সাফল্য দেখে গ্রামের আরও কয়েকটি পরিবার বিষমুক্ত সবজি চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। তাঁর প্রতিবেশী ইদ্রিস মোল্লা বলেন, ‘রাজ কুমার পরিশ্রমী চাষি। তাঁর দেখাদেখি আমরাও বিষমুক্ত সবজি চাষ শুরু করেছি। তাঁর কাছ থেকে সবজি চাষ করার কলাকৌশল শিখেছি।’ প্রতিবেশী রমেশ পালও একই কথা বলেন।

শাহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাজ কুমার অনেক কষ্ট করে ছেলে দুটোকে মানুষ করছেন। শুনেছি, তিনি এলাকায় বিষমুক্ত সবজি চাষ করে শহরের বাজারে বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাঁর কার্যক্রমে গ্রামের অনেকে এখন বিষমুক্ত সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। জেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে উপজেলায় ১৫ জন কৃষক বিষমুক্ত সবজি চাষাবাদ করছেন। বিষমুক্ত সবজি বিক্রির জন্য শহরে একটি নির্ধারিত দোকান রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানানো হবে।

দেশদর্পণ/ইউআর/এসজে