রাবি’র একাদশ সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেনা শিক্ষকদের একাংশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান প্রশাসনের বিতর্কিত কর্মকান্ড, মনস্তাত্বিক দ্বন্দ্ব, শিক্ষকদের অনাগ্রহ, প্রশাসনের বিভাজন, নিবন্ধন জটিলতাসহ নানাবিধ কারণে একাদশ সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছে না প্রায় অর্ধেক শিক্ষক। এ নিয়ে ক্যাম্পাস ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সমাবর্তনে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের ব্যক্তিগত বিষয়। অন্যদিকে অংশ না নেওয়া শিক্ষকরা বলছেন, বর্তমান প্রশাসনের বিতর্কিত কর্মকান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় এক হাজার তিন শত শিক্ষক রয়েছেন। যাদের মধ্যে মাত্র ৬৫৮ জন শিক্ষক এবারের একাদশ সমাবর্তনের অংশ নিচ্ছেন। বাকি বড় একটি অংশ রয়ে গেছে নিবন্ধনের বাহিরে। অন্যদিকে ২০১৫ ও ২০১৬ সালের গ্রাজুয়েটদের মধ্যে থেকে অর্ধেকেরও কম নিবন্ধন করেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করেছে অনেকেই।

আরও পড়ুন:
ভুয়া নাম ব্যবহার করে দুদকে অভিযোগ
মৎস্যজীবী লীগের নেতৃত্বে সাইদুর ও আজগর

বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আবদুল হামিদ আগমন করা স্বত্ত্বে অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষক কেন অংশ গ্রহণ করছেন না এমন প্রশ্নে সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মো.ফখরুল ইসলাম বলেন, বর্তমান প্রশাসনের মধ্যে এক ধরণের বিভাজন রয়েছে। এতে একটি অংশ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকান্ডে সন্তুষ্ট অন্যপক্ষ অসন্তুষ্ট। প্রশাসনের এহেন অভ্যন্তরীণ দ্বন্দে¦র কারণে অনেকে অংশ নিচ্ছে না বলে মনে করেন তারা।

প্রশাসনের অভ্যন্তরীণকে দায়ী করে ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক ড.আমিরুল ইসলাম কণক বলেন, বর্তমানে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকান্ডে সৃষ্ট নানা বিতর্কের কারণে শিক্ষকদের মধ্যে বড় রকমের একটি বিভক্তি দীর্ঘদিন যাবৎ লক্ষ্য করছি। যার ফলে অনেক বিষয়ের সাথে মত বিরোধ দেখা গেছে শিক্ষকদের একটি বড় অংশের। এর প্রভাব পড়েছে একাদশ সমাবর্তনেও।
এদিকে প্রথমবারের মত অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষকদের নিবন্ধন জটিলতাকে দায়ী করে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো.আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখেছি অন্যান্য বার সমাবর্তনে প্রতিটি বিভাগে একটি করে ফর্ম পাঠানো হতো। এতে যারা অংশ গ্রহণে আগ্রহী তারা নিদির্ষ্ট সময়ে তা পূরণ করত। কিন্তু এবারের সমাবর্তনে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষকদেরকে নিবন্ধন করতে হয়েছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক রয়েছেন যারা অনলাইনে অভ্যস্ত নয় বা ব্যবহার করেন না। যার ফলে নিবন্ধনের নির্ধারিত সময় সর্ম্পকে অনেকেই অবগত ছিলেন না।

নিবন্ধন জটিলতার বিষয়ে সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, এবাররের সমাবর্তনে এই প্রথম বারের মত নিবন্ধন অনলাইনে হওয়ার কারণে অনেক শিক্ষকই বিষয়টি সম্পর্কে পুরোপরি অবগত ছিলেন না। যার ফলে একটি অংশ রয়ে গেছে নিবন্ধনের বাহিরে। তবে আমাদের উচিৎ সব কিছুর উর্ধ্বে আসন্ন সমাবর্তনকে গুরুত্ব দিয়ে এটি সফল করা।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জনসংযোগ বিভাগের প্রশাসক প্রফেসর ড. প্রভাষ কুমার কর্মকার বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকই বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছে। যার ফলে শিক্ষকদের অংশ গ্রহণ গত বারের চেয়ে এবার একটি কম মনে হচ্ছে। প্রত্যক গ্রাজুয়েটদের কাছে সমাবর্তন একটি কাঙ্খিত দিন। এখানে যোগ দেয়া বা না দেয়া একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি প্রফেসর এম আব্দুস সোবহানের নিকট মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

নভেম্বর ২৯, ২০১৯ at ১৭:১৭:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এসএস/এআই