কোচিংয়ে যাওয়ার নামে শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে!

কোচিংয়ে যাওয়ার নাম করে শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে। শিক্ষকতার আড়ালে জঙ্গি সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষকদের মাধ্যমে তারা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যায়।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) আমেনা বেগম। নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীর উলাই’য়াহ বাংলাদেশ এর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধানসহ ১৫ জন সদস্যকে আটকের বিষয়ে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিএমপি।

আটকৃতরা হলেন, হিযবুত তাহরীরের আঞ্চলিক প্রধান আবুল মোহাম্মদ এরশাদুল আলম (৩৯), আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ (৩০), মো. ইমতিয়াজ ইসমাইল (২৫), মো. নাছির উদ্দিন চৌধুরী (২২), মোহাম্মদ নাজমুল হুদা (২৭), মো. লোকমান গনি (২৯), মো. করিম (২৭), আব্দুল্লাহ আল মুনিম (২২), কামরুল হাসান প্রকাশ রানা (২০), মো. আরিফুল ইসলাম (২০), মো. আজিম উদ্দিন (৩১), ফারহান বিন ফরিদ প্রকাশ রাফি (২৩), মো. আজিমুল হুদা (২৪), ওয়ালিদ ইবনে নাজিম (১৫) ও মো. সম্রাট (২২)।

এদের মধ্যে হিযবুত তাহরীরের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধান আবুল মোহাম্মদ এরশাদুল আলম চট্টগ্রামের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ও কলেজের শিক্ষক বলে জানিয়েছে পুলিশ। আবুল মোহাম্মদ এরশাদুল আলম বাঁশখালী উপজেলার কালীপুর ইউনিয়নের গুনাগরী এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি বায়েজিদ চক্রেসো কানন আবাসিক এলাকায় বসবাস করেন।

অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম জানান, আটক ১৫ জন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীর উলাই’য়াহ বাংলাদেশ এর সক্রিয় সদস্য। তাদের নেতা আবুল মোহাম্মদ এরশাদুল আলম একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ও কলেজের শিক্ষক। এরশাদুল মেধাবী শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে তাদের সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করেন। যেসব শিক্ষার্থীরা বিএনসিসি কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছেন তাদেরকে মূলত বেশি টার্গেট করে থাকে তারা।

তিনি আরো বলেন, এসব জঙ্গিরা ইসলামের নামে এসব কর্মকাণ্ড চালালেও মূলত তারা সংগঠনের যুক্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের অনৈতিক শিক্ষা দেন। সংগঠনের প্রয়োজনে মোবাইল ক্রয়, রিচার্জের টাকা না থাকলে বাসা থেকে টাকা চুরির পরামর্শও দেয় তারা। যেসব শিক্ষার্থী তাদের সংগঠনে যুক্ত হয় তারা বাসা থেকে কোচিংয়ে পড়তে যাওয়ার কথা বলে বের হয়। বাবা-মা কে মিথ্যা বলেই তারা সংগঠনের কাজে যায়।

আমেনা বেগম বলেন, বাবা-মায়ের উচিত তাদের সন্তানের ওপর নজর রাখা। কোথায় যায়, কার সঙ্গে মিশে সেদিকে নজর রাখা। আটক হওয়া জঙ্গিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আমেনা বেগম। তাদের কাছ থেকে সংগঠনের ২ লাখ ৮২ হাজার টাকা, হিযবুত তাহরীরের তথ্যসহ দুইটি ল্যাপটপ ও ডিভাইস, একটি মোটর সাইকেল, হিযবুত তাহরীরের প্রচারপত্র, গঠনতন্ত্র, ট্রেনিং ম্যানুয়েল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন:
১১ দফা দাবিতে রাজশাহীর পাটকল শ্রমিকদের কর্মসূচি ঘোষনা
হবিগঞ্জের বন থেকে ১৩ টি রকেট লঞ্চার উদ্ধার

সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির উপ- কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মুহাম্মদ আবদুর রউফ, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পংকজ বড়ুয়া, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) নোবেল চাকমা, সহকারী কমিশনার (চকবাজার জোন) মুহাম্মদ রাইসুল ইসলামসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নভেম্বর ২৩, ২০১৯ at ২০:২৫:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এমজে/এআই