সারাদেশে লবণের দাম বৃদ্ধির গুজবে লবণ কেনার হিড়িক

লবণে মেতছে দেশ সারাদেশে চলছে লবণ নিয়ে হৈচৈ। দেশে প্রতি মাসে ভোজ্য লবণের চাহিদা কম-বেশি ১ লাখ মেট্রিক টন। অন্যদিকে লবণের মজুদ আছে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টন। সে হিসাবে লবণের কোনো ধরণের ঘাটতি বা সংকট হবার প্রশ্নই ওঠে না।

একটি স্বার্থান্বেষী মহল লবণের সংকট রয়েছে মর্মে গুজব রটনা করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় লবণের দাম অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ ধরণের গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

মোল্লা সল্টের মহাব্যবস্থাপক আবদুল মান্নান বলেন, তিনি এখন কক্সবাজারে রয়েছে। সেখানে চাষিদের কাছেই চার লাখ টনের মতো লবণ মজুত আছে। তিনি আরও বলেন, বাজারে লবণের দাম নেই। লবণের চাহিদা কম। এ কারণে অনেক চাষি এখনো নতুন মৌসুমের লবণ চাষ শুরু করেননি।

বাজারে এখন বিক্রি কোম্পানির সবচেয়ে ভালো মানের লবণের প্যাকেটের গায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) লেখা ৩৫ টাকা। আর সাধারণ লবণের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২৫ টাকা। পরিতোষ কান্তি সাহা এর বেশি দামে লবণ না কিনতে পরামর্শ দেন ক্রেতাদের।

এদিকে শিল্প-মন্ত্রণালয় বলেছেন লবণ নিয়ে গুজবে কান দিবেন না । লবণ সংক্রান্ত যে কোনো তথ্যের প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এর নম্বর হচ্ছে: ০২-৯৫৭৩৫০৫ (ল্যান্ড ফোন), ০১৭১৫-২২৩৯৪৯  (সেল ফোন)।

আমাদের দর্পন ডেস্ক’র প্রতিনিধি থেকে পাওয়া তথ্য:

জয়পুরহাটের, পাঁচবিবিতে
হঠাৎ করেই লবণের দাম বৃদ্ধির গুজবে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দোকানে দোকানে লবণ ক্রেতাদের ভির লক্ষ্যনীয়। প্রয়োজন ছাড়াই মানুষ দাম বৃদ্ধির আশংকায় অতিরিক্ত লবণ ক্রয় করছে। সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীরা লবণের দাম বৃদ্ধি করে দিয়েছে। এদিকে সন্ধ্যায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে লবণের দাম বৃদ্ধির গুজবে কান না দেওয়ায় জন্য উপজেলা সদরে মাইকিং করা হয়। বলা হয়,লবণ সংকটের বিষয়টি সম্পূর্ন গুজব। যদি কোন দোকানদার প্রয়োজনের অতিরিক্ত দাম নেয় তাহলে তাৎক্ষণিক প্রশাসনকে অবহিত করার জন্য বলা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার পাঁচবিবির হাট বার হওয়ায় বৈকালে ভ্যানযোগে বিভিন্ন দোকান থেকে লবণ স্থানান্তর করার সময় বেশ কিছু লবণের বস্তা বহনকারী ভ্যান আটক করে পাঁচবিবি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
মাগুরা মহম্মদপুরে বিদ্যুৎ স্পর্শে গৃহবধুর মৃত্যু
রাণীশংকৈলে ফেন্সিডিলসহ মহিলা আটক

নাটোর, লালপুর
দেশে লবনের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে এমন গুজবে নাটোরের লালপুরের ওয়ালিয়া বাজারে বিকেল থেকে লবন কেনার ধুম পড়েছে। এই সুযোগে হঠাৎ করেই এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বেশী দামে লবন বিক্রি করতে শুরু করেছে। এমন খবরে বাজার নিয়ন্ত্রনে নেমেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মূল বানীন দ্যুতি। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকেল ৫টার সময় উপজেলার ওয়ালিয়া বাজারে বাজার মনিটরিংএ আসে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মূল বানীন দ্যুতি। এসময় দোকানে মূল্য তালিকা না থাকায় সাহাদ আলী নামের এক ব্যবসায়ীকে ৫০০ টাকা জরিমানা করেন পাশাপাশি অধিক মূল্যে লবন বিক্রয় না করতে ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মূল বানীন দ্যুতি। লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মুল বানীন দ্যুতি বলেন,‘লবনের কোন ঘাটর্তি নেই, এইটা একটি গুজব। যদি কেউ লবনের অধিক দাম নেই এবং এই ধরনের গুজব ছড়াই আমরা তা প্রতিরোধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’ উল্লেখ্য, বাজার মনিটরিংএর পর থেকে প্রতিকেজি প্যাকেট জাত লবন ৩৫ ও খোলা লবন ২০ টাক কেজিতে বিক্রয় হচ্ছে।

বগুড়া,মহাস্থান
মঙ্গলবার সকাল থেকে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা সদর সহ ১২টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় সর্ব স্তরের মানুষের মাঝে লবণ কেনার হিড়িক। প্রতিবেদক নুরনবী রহমান জানান, ২০০ টাকা হবে লবণের কেজি’ এমন গুজাবে উপজেলায় গুজবটি ছড়িয়ে পড়লে পাইকারি ও খুচরা দোকানে লাইন দিয়ে খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের লবণ কিনতে দেখা গেছে।তবে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিংয়ে নামতে হয়েছে।সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দোকান ব্যবসায়ীরা ৩০ টাকা কেজি লবণ ৮০ টাকা কেজি খোলা লবণ ১৬ টাকা কেজি থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি করার খবরটি গোটা উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর কবির এর নেতৃত্বে পৌর এলাকা সহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ভোক্তা অধিকার আইনের আওতায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিশেষ অভিযান চালায়। অভিযান

 

যশোর চৌগাছা
চৌগাছায় মঙ্গলবার বিকালে লবণ নিয়ে রীতিমত হৈচৈ পড়ে গেছে। পেঁয়াজের ঝাঝ কাটতে না কাটতেই লবনের দাম বেড়ে যাওয়ার খবরে সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বাজারে লবন কিনতে আসা জগদীশপুর গ্রামের শিহাব আলী বলেন, বিকালে খবর পাই লবনের দাম বেড়ে গেছে। খবর পেয়ে দ্রুত চৌগাছায় এসে ২ কেজি লবন কিনি।

খোলা লবন ১৫ টাকার স্থলে ৩০ টাকা আর প্যাকেট লবন ৪০ টাকার জায়গায় ৬৫ টাকা কেজি দরে কিনতে হয়েছে। স্কুল শিক্ষক আজম আশরাফুল বলেন, লবন কিনতে যেয়ে প্যাকেট ও খোলা দুই লবনের দামই দোকানি বেশি চেয়ে বসে। এ সময় দোকানদারের সাথে রীতিমিত কথাকাটি হয় আমার। পরবর্তীতে জানতে পারি লবনের দাম বেড়ে গেছে।

কিন্তু ১ দিনে কেজিতে ১৫ থেকে ২৫ টাকা বৃদ্ধি পাওয়া একটি অস্বাভাবিক ঘটনা। উপজেলার পাতিবিলা বাজার থেকে জৈনক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে জানান, খোলা লবণ সকালে ২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আর বিকেলে সেই একই লবণ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চৌগাছা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক ইবাদত হোসেন বলেন, আমি শুনেছি দোকানে হঠাৎ করেই লবনের ক্রেতা বেড়ে গেছে।

গুজবে ক্রেতার ভিড় বলে আমার মনে হচ্ছে। তবে আমার জানা মতে লবনের কোন দাম বাড়েনি আগের দামেই লবন বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, এটি একটি গুজব ছাড়া কিছুই নই। দেশে লবনের কোন ঘাটতি নেই। কোন ব্যবসায়ী অধিক দামে লবন বিক্রি করলে প্রমান পেলে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

১৯ নভেম্বর, ২০১৯  at ১৯:৩৯:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/দেপ্র/এজে