জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় পাচ্ছেন নরেন বিশ্বাস পদক

বাক্‌ শিল্পাচার্য নরেন বিশ্বাস ১৯৪৫ সালের ১৬ নভেম্বর গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে যোগ দেন। আমৃত্যু সেখানেই তিনি অধ্যাপনা করেছেন। আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলনের শুরু থেকেই তিনি যুক্ত ছিলেন। আমৃত্যু আবর্তনে উচ্চারণের ক্লাস নিয়েছেন। আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, থিয়েটার স্কুল, শব্দরূপ, গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে উচ্চারণের ক্লাস নিয়ে তিনি বাংলা ভাষা ও উচ্চারণের বিকাশে রেখেছেন অবদান।

তাঁকে স্মরণ করে ১৯৯৯ সাল থেকে কণ্ঠশীলন চালু করেছে নরেন বিশ্বাস পদক। এ বছর কণ্ঠশীলনের নরেন বিশ্বাস পদক পাচ্ছেন আবৃত্তি ও অভিনয়শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।

আজ শনিবার শিল্পকলা একাডেমির আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এ পদক প্রদান অনুষ্ঠান হবে। অনুষ্ঠানে দেশের বরেণ্য আবৃত্তিকারেরা আবৃত্তি করবেন। কণ্ঠশীলনের পক্ষ থেকে থাকবে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের লেখা কবিতা ও গদ্য আবৃত্তি ও পাঠ। কণ্ঠশীলন সূত্রে জানা গেছে, আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মুস্তাফা মনোয়ার। অতিথি থাকবেন সেলিনা হোসেন ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় জন্মেছেন ১৯৪৬ সালের ২৮ জুলাই। সাতক্ষীরার ঈশ্বরীপুরে তাঁর জন্ম। পড়াশোনা ঈশ্বরীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, নকীপুর এইচসি হাই ইংলিশ স্কুল, কলকাতার আনন্দমোহন কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন। ছাত্রজীবনে ছিলেন বামপন্থী। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয় বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। কলকাতায় ছিলেন যখন, তখন সংগীত, নাটক, আবৃত্তিতে আগ্রহী হয়ে কাজী সব্যসাচীর সংগঠন অগ্নিবীণার সদস্য হন।

সাহচর্য পান নাট্যপুরোহিত শম্ভু মিত্রের। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সাল থেকেই তাঁর আবৃত্তিচর্চা চলতে থাকে। নিজেকে আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৭৫ সালে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে সম্মেলক আবৃত্তির সূচনা করেন। ১৯৭৭ সালে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে একক আবৃত্তির অনুষ্ঠান করেন।

আরো পড়ুন :
পেঁয়াজের দাম পহারের উপরে
আর্জেন্টিনার কাছে হারল ব্রাজিল

দেশে ও বিদেশে আবৃত্তি করেছেন অজস্রবার। শিক্ষক হয়ে তরুণদের আবৃত্তির কাছে টেনে নিয়েছেন। কণ্ঠ দিয়েছেন অনেক প্রামাণ্যচিত্রে। আবৃত্তির পাশাপাশি অভিনয়েও রেখেছেন পারদর্শিতার চিহ্ন। বেতার, মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। বাংলাদেশের ভিন্নধারার অধিকাংশ চলচ্চিত্রেই অভিনয় করেছেন। আজ সন্ধ্যায় তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে কণ্ঠশীলনের নরেন বিশ্বাস পদক।

১৯৯৯ সালে প্রবর্তিত নরেন বিশ্বাস পদক প্রথমবার পেয়েছিলেন নাজিম মাহমুদ (মরণোত্তর)। পরের বছর ২০০০-এ পেয়েছিলেন গোলাম মুস্তফা। বিভিন্ন সময়ে নরেন বিশ্বাস পদক পেয়েছিলেন নিখিল সেন, আশরাফুল আলম, সন্‌জীদা খাতুন, শামসুর রাহমান, নিরঞ্জন অধিকারী, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, খান সারওয়ার মুরশিদ, সৈয়দ হাসান ইমাম, আসাদুজ্জামান নূর, খালেদ খান যুবরাজ, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, ফেরদৌসী মজুমদার, আলী যাকের, বিপ্লব বালার মতো গুণী ব্যক্তিত্বরা।

১৬ নভেম্বর, ২০১৯  at ১১:০৮:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/প্রআ/এজে