ট্রেন দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন এক দম্পতি

মুজিবুর রহমান ও কুলসুম আরার পরিবারের আহাজারি। গতকাল কসবার বায়েক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে। প্রথম আলো বাড়ি ফিরতে ট্রেনে চেপেছিলেন মুজিবুর রহমান (৫০) ও তাঁর স্ত্রী কুলসুম আরা বেগম (৪৮)। কিন্তু তাঁদের ফিরতে হলো না ফেরার দেশে। গত সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হন মুজিবুর–কুলসুম দম্পতি। তাঁরা উদয়ন এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন।

দুর্ঘটনায় নিহত ১০ জনের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বায়েক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় রাখা হয়। মা–বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে স্কুলমাঠে ছুটে এসেছিলেন দুই ভাই কাওসার (২৮) ও সবুজ (২৪)। এসে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন তাঁরা।

মুজিবুর–কুলসুমের তিন ছেলের মধ্যে কাওসার বড়। সবুজ ঢাকায় একটি আইসক্রিম কারখানায় কাজ করেন। আর ছোট ছেলে ইয়াসিন (১৮)। তাঁদের বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার রাজারগাঁও উত্তর ইউনিয়নের রাজারগাঁও গ্রামে।

কাওসার বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাঁর মা–বাবা উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে শ্রীমঙ্গল থেকে চাঁদপুরে ফিরছিলেন। সোমবার রাত আটটার দিকে শ্রীমঙ্গল থেকে ট্রেনে চেপেছিলেন তাঁরা।

আরো পড়ুন :
ভুরুঙ্গামারীর গছিডাঙ্গা দলবাড়ি জামে মসজিদ নিয়ে বিরোধের অবসান
মমতার পোস্টারে কাদা, দুধ-গোলাপ দিয়ে সাফাই দলের নেতা-কর্মীদের

বলে চলেন কাওসার, রাত আটটার দিকে মায়ের সঙ্গে সর্বশেষ মুঠোফোনে কথা হয় তাঁর। মা বলেছিলেন, তাঁরা রওনা হয়েছেন। ছেলেকে দুশ্চিন্তা করতে বারণ করলেন। এর আগের দিন বাবার সঙ্গেও কথা হয়েছিল তাঁর। বাবা তাঁকে বলেছিলেন, মেজ ছেলে টাকাপয়সা বেশি খরচ করে ফেলেন। খরচাপাতি কমানোর জন্য বোঝাতে হবে তাঁকে।

কাওসারের চাচা আইয়ুব বলেন, তাঁদের চার ভাইয়ের মধ্যে মুজিবুর ছিলেন সবার বড়। তিনি ঢাকা থেকে প্রসাধনসামগ্রী কিনে শ্রীমঙ্গলে বিক্রি করতেন। ২৫ বছর ধরে শ্রীমঙ্গল স্টেশন এলাকার কাছে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। আর ফেরি করে প্রসাধনসামগ্রী বিক্রি করতেন। স্ত্রী কুলসুম ও দুই ছেলে চাঁদপুরে গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। এক সপ্তাহ আগে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে শ্রীমঙ্গল গিয়েছিলেন কুলসুম। গতকাল তাঁরা দুজন একসঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন।

১৩, নভেম্বর, ২০১৯  at ১১:১৭:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/দেপ্র/এজে