বিনিয়োগের আগে মাথায় রাখতে হবে যেসকল বিষয়গুলো

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে একজন নতুন বিনিয়োগকারীকে অবশ্যই কিছু ‍গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে। তাহলেই হয়ে উঠতে পারবেন একজন সফল বিনিয়োগকারী।

যেসকল বিষয়গুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে সেগুলো হল:

১. অন্ধভাবে বিনিয়োগ নয়: বিনিয়োগের সময় চোখ বন্ধ রাখলে চলবে না। অন্ধভাবে কোনো শেয়ার কেনা মানেই আপনি কোনো বিনিয়োগ করছেন না। বিনিয়োগ তাই- যা বুঝেশুনে নেওয়া হয়। যা আপনাকে স্বস্তিতে রাখে।

২. সময় জ্ঞান থাকতে হবে: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের আগে সময় জ্ঞান জরুরি। ধরুন, আপনি একটি বাড়ি কেনার জন্য অর্থ সঞ্চয় করছেন; তাহলে মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনা করতে পারেন। আবার যদি আগেভাগে বিনিয়োগ করতে চান, তবে সেটা হতে পারে দীর্ঘমেয়াদী। এখন আপনাকে নিতে হবে বিনিয়োগের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।

৩. গবেষণাকে গুরুত্ব দেওয়া: অনেকেই আছেন যারা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গবেষণাকে গুরুত্ব দেন না। বিনিয়োগ করার কথা তাই বিনিয়োগ করেন বা বাজারে বড়ভাইদের কথা মতো বিনিয়োগ করেন। বিনিয়োগকারীকে তাই সব সময় গবেষণাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। কারণ, কোম্পানির গবেষণাই বলে দেয় ওই কোম্পানি, তার পণ্য, ব্যবসা, আয় ও ভবিষ্যৎ। ধরুন, আপনি কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে চান; তাহলে ওই কোম্পানি সম্পর্কে এবং তার ব্যবসায়িক পরিকল্পনা সম্পর্কে জানুন। এরপর সিদ্ধান্ত নিন কি করবেন।

৪. মুনাফা প্রত্যাশা ও ঝুঁকির মধ্য ভারসাম্য: বিনিয়োগে যেমন মুনাফা প্রত্যাশা থাকবে, তেমনি ঝুঁকিও থাকবে। অবশ্যই এ দুইটার মধ্যে ভারসাম্য বিবেচনায় নিতে হবে; যাতে কোনো ক্রমে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেও আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা থাকে।

আরও পড়ুন:
কোন যুক্তিতে মসজিদের জায়গায় মন্দির: সাবেক বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়
মেসির হ্যাটট্রিকে রিয়ালকে হটিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা

৫. অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা: আপনার সহ্য ক্ষমতা যতটুকু; ততটুকু ঝুঁকি নিতে পারেন। এর বেশি নয়। মার্কেটের শেয়ার দর উঠা-নামাকে সহ্য করতে না পারলে সেক্ষেত্র আপনাকে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে ব্লু-চিপ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে পারেন। কারণ এ ধরণের কোম্পানিতে শেয়ার দরের ওঠানামা তুলনামূলক কম থাকে।

৬. সব ডিম এক ঝুড়িতে নয়: কখনও সব ডিম এক ঝুড়িতে রাখা ঠিক নয়। কারণ ঝুড়িটা ছিদ্র হলে সব ডিম পড়ে ভেঙ্গে যেতে পারে বা সব অর্থ লোকসান হতে পারে। বিনিয়োগে বহুমুখীকরণ হলে এ ধরণের ক্ষতি থেকে পোর্টফোলিওকে মুক্ত রাখা সম্ভব। আপনি যদি কয়েকটা কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করেন; তবে কোনো কোম্পানিতে লোকসান হলে অন্যটাতে লাভ হবে। তাতে আপনার পোর্টফোলিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আর একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে যদি ক্ষতিগ্রস্ত হন তবে আপনার সব অর্থই চলে যেতে পারে।

৭. দাম কমলেই শেয়ার কেনা নয়: কোনো কোম্পানির শেয়ারের দর কমলেই তা কিনতে হবে এমন নীতি পরিহার করতে হবে। কারণ, দাম কমলেই যে ওই শেয়ার কিনে আপনি লাভবান হবেন- এমন নয়। আপনাকে কেন দর কমল, ভবিষ্যতে তা কি পরিমাণ বাড়তে পারে, কেন বাড়বে সে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে।

৮. ট্যাক্সের কথা মাথায় রাখতে হবে: আপনার বিনিয়োগকৃত শেয়ারে মুনাফার উপর সরকার কতটুকু ট্যাক্স আরোপ করছে- সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা ভালো।

৯. লেনদেনের ফি মাথায় রাখা: আপনাকে বিনিয়োগে ব্রোকারেজ হাউজের ‘ফি’র কথা মাথায় রাখতে হবে। এটাকে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। আবার যেসব হাউজ বেশি ফি নিচ্ছে সেটাও মাথায় থাকতে হবে। কারণ তুলনামূলক কম ফি আপনার বিনিয়োগের রিটার্নকে এগিয়ে দিতে পারে।

নভেম্বর ১০, ২০১৯ at ১২:৩৩:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/সনি/এআই