জেলার সদর উপজেলায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রথমে অপহরণ ও পরে কথিত মাওলানা দিয়ে বিয়ে এরপর একটি ঘরে আটকে রেখে ৫ দিন ধরে কয়েক বন্ধু মিলে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করায় নিরাপত্তাহীনতায় বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীসহ তার পরিবার। লজ্জা, অপমান, ভয়, আতঙ্ক এবং শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে নিজ বাড়িতে দুশ্চিন্তা নিয়ে প্রহর গুনছেন স্কুলছাত্রী ও তার পরিবার।
শনিবার সদর থানার ওসি মাহফুজ আলম বলেন, রবিবার নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে। মেয়েটি সদরের তিস্তা গার্লস স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী।
এর আগে গত বুধবার রাতে ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে আজিজুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করলেও শনিবার পর্যন্ত পুলিশ ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
মামলার আসামিরা হলেন গোকুন্ডা ইউনিয়নের মোলাটারী এলাকার মৃত আবদুল খালেকের ছেলে আজিজুল ইসলাম (২২), কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘরিয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের সুলতান বাহাদুল এলাকার মো. আলমের ছেলে আতিকুর রহমান (২৩), গোকুন্ডা ইউনিয়নের কবিরাজটারী এলাকার জাহেদুলের ছেলে আরিফুল (২৪), একই ইউনিয়নের মোলাটারী এলাকার ছামাদ মিয়ার ছেলে রানা (২০) ও নেছার উদ্দিনের ছেলে জেখারুল ইসলাম (২১)। এ ছাড়া ওই মামলায় অজ্ঞাত আরো ২-৩ জনের নাম রয়েছে।
নির্যাতিত স্কুলছাত্রী জানায়, তার এলাকার কলেজছাত্র আপেলের কাছে প্রাইভেট পড়ত সে। তার মাধ্যমেই মুন্সিটারীর বখাটে যুবক আজিজুলের সঙ্গে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে আজিজুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
গত ১৫ অক্টোবর বিয়ে করবে বলে তাকে ঢাকায় নিয়ে যায় আজিজুল। সেখানে মৌলভী দিয়ে বিয়েও করে সে। পরে তাকে তিস্তায় নিয়ে তার বাড়িতে না উঠিয়ে ওই ইউনিয়নের বড় মসজিদের পাশে বাংলালিংক টাওয়ারের একটি ঘরে নেয়।
এরপর কথিত হুজুর দিয়ে সাজানো বিয়ের পর টাওয়ারের ভেতর টিনের একটি ঝুপড়ি ঘরে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে আজিজুলের বন্ধুরা ধর্ষণ করে। এভাবেই টানা ৫ দিন সেখানে অচেতন অবস্থায় তাকে ধর্ষণ করা হয়। যদিও ধর্ষকদের কাউকে ওই ধর্ষিতা ঠিকমতো চিনতে পারেনি। তারপরও তাদের দেখলেই চিনতে পারবে বলে জানায় সে।
ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে চাপা থাকলেও শনিবার ঘটনাটি সাংবাদিকদের নজরে আসে। ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী ও তার পরিবার মিডিয়ার মুখোমুখি হয়। পরে মিডিয়ার সাহস পেয়ে ফাঁস করে দেয় বখাটেদের সব অপকর্ম। এর পর পরই ধর্ষকরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
মামলার মূল আসামি আজিজুলের মা জানান, তার ছেলে একেবারেই নির্দোষ। তার বন্ধু আপেল, মিঠু, আরিফের খপ্পরে পড়ে তার ছেলের এই পরিণতি। সে এ রকম কোনোদিনই ছিল না। কয়েকদিন থেকেই তার সঙ্গে পরিবারের কোনো যোগাযোগ নেই।
নভেম্বর ০৩, ২০১৯ at ১৩:১৫:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/ভোকা/এএএম