পুজার চাঁদা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ: আহত ৪, আটক ৫

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গা পূজার ধার্য্যকৃত চাঁদার টাকা আদায় নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পক্ষের ৪ জন আহত হয়েছে। আহতরা হলেন, দক্ষিন বাইশারী এলাকার বাসিন্দা শশ বিন্দুর ছেলে বিজয় ধর (৪২), বিধান ধর (৩০), মৃত বজেন্দ্র ধরের পুত্র সজল ধর (৪৫) ও বিরেন্দ্র কর্মকারের ছেলে রাজধন কর্মকার (৩০)।

এর মধ্যে বিজয় ধরকে আশংকাজনক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার বাইশারী বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী উধয়ন ধর জানান, রাত পৌনে ১১টার দিকে মোটর সাইকেল যোগে দুই সহোদর বিজয় ধর ও বিধান ধর বাড়ী যাওয়ার পথে বাইশারী বাজারের ত্রিমহনী চত্বরে এসে দাঁড়ালে মন্দির কমিটির সভাপতি সাধন ধর ও সাধারন সম্পাদক সুমন চৌধুর বটন দু’জনকে শার্টের কলার ধরে টেনে হেচড়ে বাজারের ভিতরে নিয়ে আসে।

ঐ সময় আরো ৪/৫ জন সনাতন ধর্মের লোক তাদের সাথে যোগ দিয়ে কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই দুুই সহোদরকে মারধর করতে থাকে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সভাপতি-সম্পাদকের লোকজন ইট ও লোহার রড দিয়ে বিজয় ধরের মাথায় আঘাত করে। এতে বিজয় ধর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী ইনচার্জ এসআই মাইনুদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে এসে ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে আটক করে।

আরও পড়ুন:
অজ্ঞাত শিশুর মরদেহ উদ্ধার
শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় রাবিতে মানববন্ধন

আটককৃতরা হলেন, দক্ষিন বাইশারী হরি মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাধন ধর (৫২), সাধারন সম্পাদক সুমন চৌধুরী বটন (৪০), দক্ষিন বাইশারী গ্রামের বাসিন্দা সুবল হরি পুত্র মিটন দে (২৮), সুজন দে (৩৫), বীরেন্দ্র কর্মকারের পুত্র রাজধন কর্মকার (৩০)। স্থানীয়রা আহতদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে বাইশারী বাজারে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।

আহত সহোদর বিধান ধর জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ ৫ হাজার টাকা চাঁদার জন্য মন্দির কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক তাদের চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। কিন্তু ১ হাজার টাকা দিতে চাওয়ায় মন্দির কর্তৃপক্ষ ক্ষেপে যায় এবং দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করে আসছে। পূজা শেষ হলে মন্দির কর্তৃপক্ষ অন্যান্য লোকজনদের নিয়ে তাদেরকে মারধরের জন্য কয়েক দফা বৈঠক করে।

সর্বশেষ শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার সময় সকলে মিলে পরিকল্পিত ভাবে এ ঘটনা ঘটায়। উক্ত ঘটনায় ৫জনসহ আরো অজ্ঞাতনামা কয়েক জনের বিরুদ্ধে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

আটক মন্দির কমিটির সভাপতি সাধন ধর জানান, তাদের ধার্য্যকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ার ঘটনা সত্য। তবে আমরা কেউ ঘটনা ঘটাইতে চাইনি। তারাই আমাদের উপর প্রথম হামলা করে। এসময় এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে যায়।

বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী ইনচার্জ এসআই মাইনুদ্দিন ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমান আটককৃতরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের হাজত খানায় রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার পক্রিয়া চলছে।

বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে নিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করেন এবং উভয় পক্ষকে ঘটনাটি স্থানীয় ভাবে নিস্পত্তির পরামর্শ দেন। তবে বিজয় ধরের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় হামলার শিকার পরিবার তা মানতে রাজী হয়নি।

অক্টোবর ১৯, ২০১৯ at ১৫:৩২:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/তএইচ/আজা