প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ম্যানেজিং কমিটির

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রিফায়েতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হোসনেয়ারা খাতুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অন্য সদস্যরা। তিনি বিদ্যালয়ের ৭ লক্ষাধিক টাকা নয়ছয় করে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগে জানানো হয়।

ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত সদস্যরা জানান, তারা নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই বিদ্যালয়ে অনেক অনিয়ম দুর্নীতি হয়ে আসছে। তাদের না জানিয়ে সেই ধারাবাহিকতায় প্রধান শিক্ষিকা হোসনেয়ারা খাতুন বিদ্যালয়ের সব কাজ নিজে করছেন।

তিনি বিদ্যালয়ের সবখাতের অর্থ নিজের মতো করে তুলে তার ইচ্ছাখুশি মতো খরচ করছেন। পরে বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত সভাপতি ফারুক আলম পান্নার নজরে আসে। পান্না বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে প্রধান শিক্ষিকা হোসনেয়ারা খাতুনের কাছে এসব অর্থের হিসাব চান। কিন্তু প্রধান শিক্ষিকা হিসাব দিতে ব্যর্থ হন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফারুক আলম পান্না জানান, প্রধান শিক্ষিকা ২০১৯ সালের বিদ্যালয়ের কোনো আয়-ব্যয়ের হিসাব তাকে দেননি। সব ব্যয় তিনি নিজে করেছেন। ফারুক আলম পান্না বলেন, বিদ্যালয়ের ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৯৩৭ টাকার কোনো হিসাব প্রধান শিক্ষিকা দিতে পারেননি।

তার এই দুর্নীতি তদন্তের জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট অর্থ কমিটি করে দেয়া হয়েছিল। তবে সেই কমিটির রিপোর্ট এবং প্রধান শিক্ষিকার কার্যক্রমের সাথে কোনো মিলই খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রধান শিক্ষিকা হোসনেয়ারা খাতুন ভুয়া ভাউচারে নয়ছয় করে দুর্নীতির মাধ্যমে এই টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে সভাপতি ফারুক আলম পান্নার অভিযোগ।

আরও পড়ুন:
এক কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
সিরাজগঞ্জে ইলিশ মাছ ধরায় ৭ জেলের কারাদন্ড

এদিকে এ অভিযোগের সত্যতা অনুসন্ধানে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক সাংবাদিকদের দেখে ভড়কে যান। তিনি প্রথমে তার স্বামী ঠিকাদার বাবুকে ফোন করে তাড়াতাড়ি স্কুলে আসতে বলেন। এ ছাড়া তিনি সাংবাদিকদের সামনে একের পর এক বিভিন্ন জায়গায় ফোন দিতে থাকেন। এ সময় তার মধ্যে অস্থিরতা চোখে পড়ে। প্রায় আধাঘণ্টা পর তিনি সাংবাদিকের সাথে কথা বলেন।

সাংবাদিকরা প্রধান শিক্ষিকার কাছে তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ৭ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির দেয়া অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চান। জবাবে প্রধান শিক্ষিকা হোসনেয়ারা খাতুন নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক রাশেদ মাহামুদ খান যে ভাবে বলেছেন, সে ভাবেই আমাকে চালাতে হয়েছে। সহকারী প্রধান শিক্ষক জোর করে আমার কাছ থেকে বিভিন্ন ভাউচারের মাধ্যমে টাকা নিয়েছেন। এ কারণে আমি সঠিক হিসাব দিতে পারিনি।

পরে এ ব্যাপারে সহকারী প্রধান শিক্ষক রাশেদ মাহামুদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, এটা কীভাবে সম্ভব। প্রধান শিক্ষিকার কথা সঠিক নয়, তিনি ভুলভাল বলে নিজের দায় এড়াতে চাচ্ছেন বলে রাশেদ মাহামুদ মন্তব্য করেন।

বিষয়টি সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রধান শিক্ষিকা হোসনেয়ারা খাতুনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অন্য সদস্যরা।

অক্টোবর ১৬, ২০১৯ at ২২:৫০:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এসআরএস/এএএম