স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধূর আত্মহত্যা

রাজশাহীতে স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মোসাঃ শিউলী (১৯) নামের এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নগরীর উপকন্ঠ চক-কাপাসিয়া কুসিপাড়া এলাকার একটি বাগানে গলায় ওড়না পেচিয়ে আমগাছের ডালের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ওই গৃহবধূ।নিহত গৃহবধু কাটাখালী থানাধিন কুসিপাড়া এলাকার মোঃ আমিনুলের কন্যা।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতেই পুলিশ ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। গৃহবধূর মা শেফালী জানায়, গত ৯মাস পূর্বে পারিবারিক ভাবে একই থানার মাহেন্দার মোড় এলাকার ভ্যান চালক মোঃ নসির ছেলে শুভ’র সাথে শিউলির বিবাহ হয়।

বিয়ের ১মাস পর থেকে গৃহবধূ শিউলির শশ্বর বাড়ির লোকজন ও তার স্বামী তাকে বিভিন্ন অজুহাতে শারিরিক ও মানুষিক ভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার (১২ অক্টবর) বিকালে শিউলিকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্যাতন করলে সে তার বাবার বাড়ি চলে আসে। এরপর থেকে তার স্বামী তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। গত মঙ্গলবার শিউলো মুঠোফোনে একাধিকবার তার স্বামী শুভ’র সাথে কথা বলে।

শুভ তার স্ত্রী শিউলীকে বলে, আমার মায়ের কিছু ঋণ ছিলো সে কারনে তোকে বিবাহ করেছিলাম। যৌতুকের টাকায় মায়ের ঋণ পরিশোধ করেছি। তোকে আমার আর প্রয়োজন নাই। শিউলির মা আরো বলেন, ইতি পূর্বে আমার মেয়েকে মারধর করে একাধিকবার তাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা তাকে বুঝিয়ে তার স্বামির বাড়িতে পাঠিয়েছি।

আরও পড়ুন :
রাজশাহী নগর ও জেলা পুলিশের অভিযানে আটক-৮৩
২০ গ্রাম হেরোইনসহ ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ী আটক

গত মঙ্গলবার সন্ধার পর শিউলী তার স্বামী শুভ’র সাথে কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে শিউলি বাড়ি ফিরছেনা দেখে আমার স্বামী-সন্তানসহ আশপাশের প্রতিবেশিরা অত্মীয় স্বজনদের নিকট খোঁজ করতে থাকে। এমন সময় শিউলীর স্বামী শুভ আমার ছেলে আসাদুলকে ফোন করে বলে তোর বোন বিষ খেয়েছে এবং পাশের আমবাগানে গলায় ফাঁস দিয়ে মরে ঝুলে আছে।

এ সময় জামাই শুভ’র দেয়া তথ্য মতে আমবাগানে গিয়ে দেখা যায় শিউলী আমগাছের ডালের সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঝুলে আছে।
পরে পুলিশকে খবর দিলে কাটাখালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে গৃহবধূ শিউলীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। জামাই শুভ’র এলাকার একাধিক স্থানীয়রা বলেন, বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে মারধর হৈচৈ লেগেই ছিলো।

কাটাখালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জিল্লুর রহমান জানান, গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে রামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (১৬্১০্১৯) বিকালে ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। গৃহবধূর মরদেহ তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা রুজু হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওসি।

অক্টোবর ১৬, ২০১৯ at ১৯:৪৬:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/কাএল/আজা