৭ম বিয়ে করে রেকর্ড করলো শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তার টপি

সপ্তম বারের মতো বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তার টপি। রাবেয়া আক্তার নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলার উত্তর রামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের মেয়ে ও জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার নিশ্চিন্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তিনি নিজে কাউকে তালাক না দিলেও দূর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি প্রত্যেকবার তালাকপ্রাপ্ত হয়েছেন।

গত রবিবার (৬ অক্টোবর) একই উপজেলার গোলাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুবকর সিদ্দিককে তার ৭ম স্বামী হিসেবে এই বিয়ে করেন।

৫ বোন ও ২ ভাইয়ের মধ্যে সে সবার ছোট। বড় ভাই খোরশেদ আলম হান্নান নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার উত্তর রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং মেজভাই লিটন ধামুইরহাট উপজেলায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

পরিবার এবং প্রতিবেশী সূত্রে জানা যায়, স্কুল শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তার টপি দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে কিশোরী বয়সে তার মেজ ভাই লিটনের শ্যালক রুবেলকে ভালোবেসে ১ম বিয়ে করেন। বিয়ের পরে সাফল্যের সাথে এসএসসি পাসও করেন টপি। কলেজে ভর্তির কিছু দিন পরে বেপরোয়া আচরণের জন্য রুবেল তার স্ত্রী রাবেয়া আক্তার টপিকে তালাক দেন।

এরপর কলেজে পড়াশোনা অবস্থায় তিনি ২য় বারের মতো বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। বিয়ে করেন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ইমন নামের জনৈক বিজিবি সদস্যকে। বিয়ের কিছুদিন পরে বিজিবি সদস্য ইমন স্ত্রীর চারিত্রিক সমস্যার কারণে তাকে তালাক দিলে টপি বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহায়তায় পুনরায় তাকে বিয়ে করেন এবং ৩য় বারের মতো বিয়ের পিঁড়িতে বসেন।

এর কিছু দিন পরে ওই বিজিবি সদস্য তাকে আবারও তালাক দিলে রাবেয়া আক্তার (আদালতের মাধ্যমে) ইমনের কাছ থেকে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা দেনমোহর আদায় করেন।

আরো পড়ুন:
অযত্ম ও অবহেলায় উলিপুরের পান্ডুল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র
ব্যাংক ভাড়া ও হিসাব-নিকাশের মিটিং ডেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক কমিটি গঠন

ইতোমধ্যে রাবেয়া আক্তার গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান।

অতঃপর ২০১৭ সালের ২৫ জুন ৩ লক্ষ টাকা দেনমোহরে তিনি ৪র্থ বারের মতো বিয়ে করেন জয়পুরহাট সদর উপজেলার পূর্বপারুলিয়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে স্বাস্থ্য সহকারী সোহেল রানাকে। সোহেল রানার এটি ২য় বিয়ে।

ভালোই চলছিল সোহেল রানা এবং টপির সংসার। দুজনে এক ছাদের নিচে বসবাস করলেও হঠাৎ করে একদিন টপি জানতে পারেন যে সোহেল রানা বিয়ের ৩ মাস পরেই তাকে (১২ সেপ্টেম্বর ‘১৭ তারিখে) গোপনে তালাক দিয়েছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ায় ১০ লক্ষ টাকা দেনমোহরে পুনরায় তাদের বিয়ে হয়, যেটি টপির ৫ম বিয়ে এবং সোহেলের ৩য়।

কিন্তু বিধিবাম এবারেও স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত হন তিনি। জয়পুরহাট আদালতে মামলা করেও এ বিয়ে এবং সংসার রক্ষা করতে পারেনি রাবেয়া আক্তার টপি। অবশেষে জয়পুরহাট সদর থানায় বসে থানা পুলিশের সহায়তায় ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তালাকনামা গ্রহণ করে সোহেল রানার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রত্যাহার করেন টপি।

এরপর তিনি ৬ষ্ঠ বিয়ে করেন ঢাকায় কর্মরত সাগর নামের একজনকে। নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল -২ এর একটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিনের জন্য ঢাকায় গিয়ে পরিচয় হয় রেলপথ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত একেএম সাগরের সাথে। সাগরের ঢাকার ভাড়া বাসায় কয়েকদিন থেকে হাইকোর্ট থেকে জামিনের কাজ শেষ করে নিজের বাসায় ফিরে আসেন টপি। এ সময় সাগরের সাথে ঢাকায় অবস্থান কালে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন টপি।

টপি পূর্বে কখনো বিয়ে করেনি এমন কথা বিশ্বাস করে সাগর ঢাকার বাসাতেই তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরে টপি এবং সাগর প্রত্যেক সপ্তাহে ঢাকা-জয়পুরহাট এবং জয়পুরহাট-ঢাকা দুজন দুজনের বাসায় যাতায়াত করতেন। বিয়ের কিছু দিন পরে রাবেয়া আক্তার টপির বহু বিবাহের ঘটনা জানতে পেরে সাগর তাকে তালাক দেয়। তবে বিয়ের কাবিননামায় সাগর তার ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করায় রাবেয়া আক্তার তার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার পদক্ষেপ নিতে পারেননি।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে রাবেয়ার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি সাংবাদিকের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। পরবর্তীতে তাকে ফোন দিলেও কল ধরেননি তিনি।

অক্টোবর ১৪, ২০১৯ at ১২:২১:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এসআরএস/এএএম