মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ চিকিৎসায় তৈরি হলো রোবট

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোকের চিকিৎসায় ব্যবহার উপযোগী রোবট তৈরি করেছেন গবেষকেরা। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) গবেষকেদের তৈরি সুতার মতো পাতলা রোবট মস্তিষ্কে পাতলা শিরার মধ্যে দিয়ে যেতে পারে। চুম্বক শক্তিতে এ রোবট নড়াচড়া করানো যায়। আইএএনএসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গবেষণা–সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স রোবটিকস’ সাময়িকীতে। নিবন্ধে বলা হয়েছে, চুম্বক শক্তিতে নিয়ন্ত্রিত ডিভাইসটি একদিন স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে।

এমআইটির সহযোগী অধ্যাপক সুহানে জাহো বলেছেন, যদি দেড় ঘণ্টার মধ্যে ‘একিউট স্ট্রোক’ চিকিৎসা করা যায়, তবে তাঁর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। এ সময়ের মধ্যে যদি রক্ত চলাচলের বাধা দূর করার মতো কোনো ডিভাইস ব্যবহার করা যায়, তবে তা রোগীর মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি ঠেকানো যায়। একটা আশা থাকে।

আরো পড়ুন:
জগদীশচন্দ্র বসু আর মার্কনির রেডিও আবিষ্কার বিতর্ক কি সমাধান হলো?
বুয়েটে পড়েও কিছু শিক্ষার্থী অমানুষ, পাষন্ড ও কুলাঙ্গার হতে পারে

এখনকার চিকিৎসকেরা মস্তিষ্কের জমাট বাঁধা রক্ত দূর করতে পাতলা তার রোগীর মূল শিরার ভেতর দিয়ে প্রবেশ করান এবং ম্যানুয়ালি তারটি ঘুরিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্কের শিরায় নেন। এ ক্ষেত্রে এক্স–রে নিয়ন্ত্রিত ফ্লুরোস্কোপ ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতি শরীরের জন্য ধকলের। এ কাজে বিশেষভাবে দক্ষ সার্জনের প্রয়োজন পড়ে।

এমআইটির গবেষকেরা রোবটিক সুতা তৈরিতে নমনীয় ভাঁজযোগ্য ও স্প্রিংয়ের মতো কার্যকর নিকেল টাইটেনিয়াম অ্যালয় ব৵বহার করেছেন। এতে বিশেষ চৌম্বকীয় উপাদানও যুক্ত করা হয়েছে। এই চৌম্বকীয় কভারটিকে হাইড্রোজেল যুক্ত করেছেন। এতে এটি পিচ্ছিল ও সংঘর্ষহীন পৃষ্ঠ হিসেবে কাজ করে। তবে এতে চৌম্বকীয় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় না। পরে গবেষকেরা মস্তিষ্কের অনুরূপ সিলিকন রেপ্লিকা তৈরি করে ডিভাইসটি পরীক্ষা করেছেন।

গবেষকেরা বলছেন, তাঁদের তৈরি রোবট সুতার কোরটির জায়গায় অপটিক্যাল ফাইবারও ব্যবহার করা যায়। মস্তিষ্কের রক্ত জমাট বাঁধা অঞ্চলে রোবটটি পৌঁছালে লেজার সক্রিয় করে অপটিক্যাল ফাইবার রক্ত চলাচলের বাধা দূর করতে পারে।

রোবটটি আরও পরীক্ষা–নিরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন গবেষকেরা।

অক্টোবর ১২, ২০১৯ at ১০:৫৯:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/প্রআ/এএএম