রাত পোহালেই এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা

রাত পোহালেই এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীসহ সারাদেশের ১৯টি কেন্দ্রের ৩২টি ভেন্যুতে সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস প্রথম বর্ষ ভর্তির এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠিত এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় সরকারি চার হাজার ৬৮টি ও বেসরকারি ছয় হাজার ৩৩৬টিসহ ১০ হাজার ৪০৪টি আসনের বিপরীতে মোট ৭২ হাজার ৯২৮ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন। গত বছরের চেয়ে এ বছর ৭ হাজার ৯ জন বেশি পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন।

১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যায় ২০, রসায়নে ২৫, জীববিজ্ঞানে ৩০, ইংরেজিতে ১৫ এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাধারণ জ্ঞানে ১০ নম্বর থাকবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের কাছে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাত ৮টায় সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সুষ্ঠু ও সুন্দর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এবারের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণে সার্বিক প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।’

দুপুর থেকে ঢাকার বাইরের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে সংশ্লিষ্ট কলেজের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে প্রশ্নপত্র সিলগালা করে পুলিশি পাহারায় পাঠানোর কাজ শুরু হয়। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ১৪টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে ৯টিতে প্রশ্নপত্র ট্রেজারিতে পৌঁছে গেছে। বাকিগুলোও রাতে পৌঁছে যাবে। সকালবেলা ট্রেজারি থেকে পুলিশি পাহারায় প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পৌঁছাবে। রাজধানীর পাঁচটি কেন্দ্রে সকালবেলা পুলিশি পাহারায় সরাসরি প্রশ্নপত্র পৌঁছে দেয়া হবে।

আরও পড়ুন:
‘বঙ্গবন্ধু: জীবন থেকে চিত্রপটে’ আর্টক্যাম্প শুরু হচ্ছে
মানবাধিকার সমিতির সভায় আবরার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা

মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিশেষ ধরনের সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে প্রশ্নপত্র বহনকারী প্রতিটি যানবাহনের গতিবিধি মনিটরিং করা হচ্ছে। কোথাও গাড়ি থামলেই এখানে সংকেত বেজে উঠছে। যেখানে প্রশ্ন রাখা আছে সে সিলগালা বাক্স কেউ খোলার চেষ্টা করলেই তাতে সংকেত বেজে উঠবে।’

এবার মাস দেড়েক আগে থেকেই মেডিকেল কোচিং বন্ধ ছিল। কেউ যেন প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ছড়াতে না পারে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর বলে জানান স্বাস্থ্য মহাপরিচালক। তিনি বলেন, আমাদের একটাই লক্ষ্য- সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করা।

জানা গেছে, এ বছর পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তরপত্রে কোনো সেলাই থাকবে না। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ভর্তি পরীক্ষায় মোট আট পৃষ্ঠার সেলাই করা প্রশ্ন ও উত্তরপত্র থাকত। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রথমবারের মতো এবার এক পাতার (দুই পৃষ্ঠার) মধ্যে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র ছাপিয়েছে।

এবার বিশেষ ধরনের সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে প্রশ্নপত্র বহনকারী প্রতিটি যানবাহনের গতিবিধি মনিটরিং করা হচ্ছে

এবার এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের জন্য এক সেট করে প্রশ্ন প্রণয়ন করা হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন হবে ভিন্ন। ১০০টি প্রশ্ন থাকলেও কোন প্রশ্ন কোথায় বা কত নম্বরে থাকবে তা কোনো পরীক্ষার্থী বুঝতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, মাত্র এক পাতার প্রশ্ন ও উত্তরপত্র কোনো প্রেসে ছাপা হয়নি। অত্যন্ত কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে অধিদফতরের নিজস্ব উদ্যোগে এ দুই পৃষ্ঠার প্রশ্ন ও উত্তরপত্র ছাপানো হয়েছে।

আগে সেলাই করে আট পৃষ্ঠার প্রশ্ন ও উত্তরপত্র করায় সময় বেশি লাগত, কাগজের জন্য খরচও বেশি হতো। তবে এবার এক পাতার প্রশ্ন ও উত্তরপত্রে খরচও কম হয়েছে এবং দ্রুত ছাপানো গেছে। এ ছাড়া সেলাই খুলে পৃষ্ঠা হারানোর কোনো ঝুঁকিও থাকবে না।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তা জানান, পরীক্ষার দিন অংশগ্রহণকারী সব পরীক্ষার্থীকে সকাল সাড়ে ৯টার আগে কেন্দ্রে প্রবেশপত্র এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষার প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড এবং রিফিল দেখা যায় এমন কালো বলপেনসহ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। সাড়ে ৯টার পর কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। এ ছাড়া ঘড়ি ও মোবাইলসহ যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

অক্টোবর ১০, ২০১৯ at ২৩:২৯:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/জেএন/এএএম