তারুণ্য ধরে রাখতে যা খাবেন

অ্যান্টিএজিং খাবারগুলোর মাধ্যমেই মূলত সুন্দর তারুণ্য উজ্জ্বল দেহ ও ত্বক পাওয়া সম্ভব। যখনই আমাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার, ভালো ফ্যাট, অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদানগুলো এবং প্রয়োজনীয় পানি থাকবে তখন আমাদের শরীরের ত্বক, যার মাধ্যমে সেটার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ যে কোনো সমস্যা প্রথমে ত্বকের মাধ্যমেই প্রকাশ পায়। শুধু খাবারের মাধ্যমেই ত্বকের অনেক ধরনের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব সেটা বিভিন্ন লোশন, ক্রিম, মাস্ক বা সিরামের ব্যবহার করেও সম্ভব না।

গবেষকদের মতে, নিস্তেজ ত্বক ও বলিরেখা দূর করে তারুণ্য ধরে রাখতে সবচেয়ে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর উপায় হচ্ছে ফল ও শাকসবজি খাওয়া। আমাদের প্রতিদিনের খাবারে রাখতে হবে এসব খাবারগুলো। তাই জেনে নিতে হবে কিছু অ্যান্টিএজিং ফল ও সবজির সম্পর্কে।

পাকা পেঁপে : বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও মিনারেলে ভরপুর খাবারটি ত্বকের বলিরেখা ও কুঁচকে যাওয়া প্রতিরোধ করে। ভিটামিন এবিসিই এবং কে, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম সমৃদ্ধ পেঁপে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর ফ্রি র‌্যাডিকেলকে ধ্বংস করে ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। পেঁপেতে থাকা পাপাইন নামক উপাদান ত্বকে বয়সের ছাপ পড়াকে বিলম্বিত করে। নিয়মিত পেঁপে খেলে বা ত্বকে ব্যবহার করলে মরা কোষ দূর করে ত্বককে করে তুলবে ঝলমলে উজ্জ্বল। তাই প্রতিদিন সামান্য লেবুর রস দিয়ে একবাটি পেঁপে খেতে পারেন বা চটকে নিয়ে মুখে মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

আরও পড়ুন :
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: সমাজসেবা অধিদপ্তর বাংলাদেশ
১৫ নভেম্বর মুক্তি পাচ্ছে ‘মেকআপ’

পালংশাক : আয়রন, লুটেইন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ সি ই ও কে সমৃদ্ধ পালংশাকও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর যা পুরো শরীর আর্দ্র রাখে। এর উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বককে মসৃণ ও মজবুত রাখে। এছাড়া ভিটামিন এ চুলের গোড়াকে শক্ত ও উজ্জ্বল করে। তাই প্রতিদিনের খাবারে পালংশাক রাখা উচিত।

বাদাম : অনেক ধরনের বাদাম বিশেষ করে কাঠবাদাম হচ্ছে ভিটামিন ই এর একটি বড় উৎস যা আমাদের ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুকে মেরামত করতে, আর্দ্রতা ধরে রাখতে এবং সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এছাড়া আখরোট বা ওয়ালনাটে থাকে আমাদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ওমেগা ও ফ্যাটি এসিড যা ত্বকের কোষকে মজবুত করে।

মিষ্টি আলু : বেশ সহজলভ্য এ খাবারটিতে ভিটামিন সি এবং ই থাকে যা আমাদের ত্বককে ক্ষতিকর ফ্রি র‌্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে এবং ত্বককে করে তুলে উজ্জ্বল ও দীপ্তিময়। এছাড়া লাল মিষ্টি আলুতে থাকে ভিটামিন এ যা ত্বকের ইলাস্টিসিটি ধরে রাখে, নরম ও তারুণ্যোজ্জ্বল করে।

আনার : আয়রন, ভিটামিন সি এবং বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এ ফলটি অনেক দেশেই ভেষজ ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার হয়ে থাকে। এটি ফ্রি র‌্যাডিকেলকে ধ্বংস করে এবং আমাদের দেহের অভ্যন্তরীণ সংবেদনশীলতা কমাতেও সাহায্য করে। এছাড়া এ ফলটিতে punicalagins নামক একটি যৌগ থাকে যা আমাদের ত্বকের কোলাজেনকে সংরক্ষণ করে আমাদের ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়াকে বিলম্বিত করতে সাহায্য করে।

জলপাই : টক এই ফলটি অনেকেরই প্রিয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না এতে অবিশ্বাস্য রকমের পলিফেনল ও অন্য ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট আছে যা আমাদের ডিএনএ কে প্রতিরক্ষা দেয় এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।

মাশরুম : ভিটামিন ডি খুব কম খাবারেই থাকে যার মাঝে মাশরুম একটি। আমাদের দেশে ভিটামিন ডি এর অভাব অনেকের মাঝেই দেখা দিচ্ছে। ভিটামিন ডি ছাড়া ক্যালসিয়াম আমাদের দেহে শোষণ হয় না। আবার ক্যালসিয়ামের অভাবে অস্টিওপেরোসিস, ভঙ্গুর হাড়, হাড় বাঁকা হয়ে যাওয়া বা হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই তারুণ্য ধরে রাখতে সুস্থ হাড় থাকাও আমাদের জন্য জরুরি। তাই প্রতিদিনের খাবারে মাশরুম রাখতে পারেন।

গাজর : অ্যান্টিএজিং গুণাগুণ সমৃদ্ধ আর একটি সবজি হচ্ছে গাজর। সহজলভ্য এ সবজিটিতে থাকে অনেক বেশি পরিমাণ ভিটামিন এ, এটি আমাদের ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত কোলাজেনকে পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনে সাহায্য করে যা আমাদের ত্বকের কোষের পুনর্গঠন ও ইলাস্টিসিটি ধরে রাখার কাজ করে। এর ক্যান্সার প্রতিরোধের গুণাগুণও আছে।

টমেটো : রান্না করা টমেটো লাইকোপিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর যা আমাদের ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। যদিও রান্না করার আগেও টমেটোতে লাইকোপিনের উপস্থিতি থাকে, তবে রান্না করাটা সহজে হজম হয়। তাই টমেটো স্যুপ রাখা যায় নাশতা হিসেবে। মুখেও লাগাতে পারেন যা ত্বককে টান টান রাখতে সাহায্য করে।

অক্টোবর ০৯, ২০১৯ at ১৫:৪৯:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/যুত/আজা