লালপুরে বন্যায় কৃষিতে ৫ কোটি টাকা লোকসান

নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদীতে পানি কমতে শুরু করায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে তবে পানি কমতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি বন্যাদুর্গত এলাকায়। উপজেলার লালপুর সদর, বিলমাড়ীয়া, ঈশ্বরদী ও দুয়ারিয়া এই চারটি ইউনিয়নের সবকয়টি চর ডুবে যাওয়ায় চলতি মৌসুমের সবজি, আখসহ চাষ করা সকল ফসল নষ্ট হয়েগেছে।

এতে প্রায় ৫ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় উপজেলা কৃষি বিভাগ। তবে গবাদি পশু নিয়ে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে চরাঞ্চলে মানুষেরা। মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে নুরুল্লাপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায় পদ্মার তীরবর্তী একটি স্থানে ৩০-৪০টি গরু বাঁধা রয়েছে।

স্থানীয় সাজেদা বেগম ও ঝুরিমন নামের দুইজন মাঝ বয়সি মহিলা বলেন, ‘আমাদের বাড়ি চরের মধ্যে ছিলো, বন্যায় আমাদের বাড়ি ডুবে যায় গরু-বাছুর নিয়ে উপরে কোন রকমে একটু ঠাঁই নিয়েছি। চর ডুবে যাওয়ায় গরু-বাছুরের খাবার নেই কোন রকমে আধপেট খেয়ে পশু গুলি বেঁচে আছে।

আরও পড়ুন :
ঢাবির মুহসীন হলে অভিযানে পিস্তল ও ইয়াবাসহ দুই ছাত্রলীগ নেতা আটক
সুনামগঞ্জে ৪শাতাধিক প্রতিমার বিসর্জন

তারা আরো বলেন, শুনেছি সরকার নাকি অনেক সহযোগিতা করে আমরা তো কোনদিনই কিছু পেলাম না। কথা হয় বিলমাড়ীয়া চর এলাকার সবজি চাষী নাদের আলী, কাহার আলী, আইদুল, ইয়াজুল হকের সঙ্গে তারা বলেন, পদ্মার পানিতে আমাদের জমিতে চাষ করা আগাম সবজি নষ্ট হয়েগেছে। এখন বউ-বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।

এদিকে বন্যা দুর্গতদের জন্য খোলা ৩টি আশ্রয়কেন্দ্র থেকে চরাঞ্চলের আশ্রিত মানুষেরা নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে চরাঞ্চলের অধিকাংশ বাড়ি বন্যামুক্ত না হওয়ায় চরাঞ্চলের গবাদি পশু নিয়ে এখনো উপরে অবস্থান করছে অনেকে পরিবার এতে বন্যাদুর্গতদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।

এদিকে বন্যা কবলিতদের মাঝে সরকারী ভাবে ত্রাণ বিতরণ হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে জানালেন ক্ষতিগ্রস্থরা। লালপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান গবাদি পশুর খাদ্য সঙ্কট ও দুর্ভোগের কথা স্বিকার করে তিনি বলেন, লালপুর উপজেলার মোট আমিষের ১.১৪ শতাংশই চরাঞ্চল থেকে আসে।বন্যা কবলিত গবাদি পশুদের রক্ষায় উপজেলা প্রাণীসম্পদ থেকে বিভিন্ন প্রকার রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে।

লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, আকস্মিক বন্যায় লালপুর উপজেলার চারটি চরে চলতি মৌসুমে চাষ করা সকল ফসল নষ্ট হয়ে গেছে এতে কৃষি ক্ষেত্রে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি নিরুপন করা হয়েছে।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি বলেন, চরাঞ্চরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদের তালিকা কৃষি অফিসের মাধ্যমে করা হয়েছে। আমরা সরকারী সহযোগিতার চেষ্টা করছি। সরকারী যে কোন সহযোগিত পেলে চরাঞ্চলের চাষীদের মাঝে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯ at ২১:৩৫:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আকে/এআরটু/আজা