বেনাপোল চেকপোস্টে বিজিবি‘র বিরুদ্ধে তল্লাশীর নামে হয়রানির অভিযোগ

বেনাপোল চেকপোস্টে তল্লাশীর নামে বিজিবি‘র বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এতে ভারত থেকে আসা প্রায় সকল পাসপোর্টযাত্রীই বিরক্ত। কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের পরও যাত্রীদের দু’দফায় পড়তে হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র টেবিল চেকপোস্টের সামনে। যুক্তিসংগত কারণে তল্লাশীর আইন থাকলেও হাতড়ানো হয় প্রতিটি ব্যাগ। টেনে-হেঁচড়ে পাসপোর্ট যাত্রীদের হয়রানী করা হচ্ছে। কখনও মালামাল ফেলে রাখা হয় মেঝেতে।

আরও পড়ুন:
দুই ইয়াবা সুন্দরী ১১ শ পিচ ইয়াবাসহ আটক
টিউলিপ যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের তালিকায়

বেনাপোলের বিজিবি চেকপোস্টে মেঝের চারিদিকে ব্যাগ ছড়িয়ে ছিটিয়ে চেকিং নিত্যদিনের ঘটনা। ব্যাগ-লাগেজ মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ওলট পালট করে চলে তল্লাশী। ভারত থেকে বেনাপোল হয়ে দেশে আসা পাসপোট যাত্রীরা ইমিগ্রেশন কাস্টমসের থেকে বেরিয়েই আবার বিজিবির টেবিল চেকপোস্টের মুখোমুখি হয়। চলে প্রতিটি ব্যাগ, লাগেজ হাতিয়ে তল্লাশী। তাদের ইউনিফর্মে নেই কোন নেমপ্লেট। আইনি সুরক্ষা চাইলে ক্যাম্পে নেয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, তিন কিলোমিটার সামনেই একই বাহিনীর চেকপোস্ট। আবারও প্রতিটি লাগেজ হাতড়ে চলে আবারও তল্লাশী। ভারত থেকে আসা পাসপোট যাত্রীদের ভাষায় এই তল্লাশীর ধরন অসম্মানজনক।

যাত্রীদের কথায় যাওয়ার আগে একটু আইনে চোখ বোলানো যাক-
২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর কাস্টমস আইন ১৯৬৯ এর সেকশন (৬) এর বলে বিজিবিকে আটটি ধারার ক্ষমতা দেয়া হয়। যদিও এসব চেকপোস্ট চলছিলো তার আগে থেকেই। আইনের ১৫৮ ধারা অনুযায়ী যুক্তিসংগত কারণে তল্লাশীর কথা বলা হলেও বিজিবি সদস্যরা সবার লাগেজেই যুক্তিসংগত কারণ খুঁজে পান। আবার ১৫৯ ধারায় গেজেটেড কাস্টমস কর্মকর্তা অথবা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তল্লাশীর কথা বললেও যাত্রীকে সেই সুরক্ষা দেন না দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যরা। ভ্রমণ, চিকিৎসাসহ নানা কারণে ভারত থেকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ হাজার যাত্রীর যাতায়াত বেনাপোলে। যাদের মতে একই সংস্থার দু’দফা এমন তল্লাশী রীতিমতো মানহানীকর।

এক যাত্রী বলেন, ‘একই সংস্থার দুইবার তল্লাশীর কোন যৌক্তিকতা নাই।’ আরেক যাত্রী বলেন, ‘ওইখান থেকে বের হবার পর অনেকের কাছে অবৈধ জিনিস থাকতে পারে। কিন্তু চেকিং পদ্ধতিটা আরও উন্নত করা দরকার। তাদের আচরণ ভালো করা দরকার।’

কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসেন চৌধুরী বলেছেন, চলতি তল্লাশীর ধরন যাত্রীসেবার অন্তরায়। ক্ষোভ আছে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার খাতিরে কেউ যদি অভিযোগ করতে চায় তাহলের তারও একটা নীতিমালা থাকা দরকার।’

ইন্দো বাংলা চেম্বার সভাপতি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘এটা আর কতোদিন ? আমরা বিরক্ত। নো-ম্যন্সল্যান্ড থেকে তিন জায়গায় চেকিং। এটার কোন যুক্তি নাই। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে যে কোন ব্যক্তিকে তল্লাশী করতে পারে।’

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল আজিজ বলেন, সমস্যা সমাধানে এরই মধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। সে কারণেই আমরা লাগেজ স্ক্যানার বসিয়েছি। এছাড়াও আমরা চেকপোষ্টে সন্দেহভাজন যেসব ট্রাক বা বাস থাকবে সেগুলোকে আমরা চেক করব। এছাড়া অন্যসব গাড়ী আমরা চেক করব না।

অক্টোবর ০৫, ২০১৯ at ১৫:৫২:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আকে/এসকেবি/আজা