শারদীয় দূর্গা পূজার প্রস্তুতি পর্ব শেষ

দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসব হলো হিন্দু দেবী দুর্গার পূজাকে কেন্দ্র করে প্রচলিত একটি উৎসব। দুর্গাপূজা সমগ্র হিন্দুসমাজেই প্রচলিত। তবে বাঙালি হিন্দু সমাজে এটি অন্যতম বিশেষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। আশ্বিন বা চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে দুর্গাপূজা করা হয়।

আশ্বিন মাসের দুর্গাপূজা শারদীয়া দুর্গাপূজা এবং চৈত্র মাসের দুর্গাপূজা বাসন্তী দুর্গাপূজা নামে পরিচিত। শারদীয়া দুর্গাপূজার জনপ্রিয়তা বেশি। বাসন্তী দুর্গাপূজা মূলত কয়েকটি পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সনাতন ধর্মালম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজার আর মাত্র কয়েকদিন বাকী।

যশোরের চৌগাছায় ৪৪টি পূজা মন্ডবে দূর্গা পূজার সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। শারদীয় দূর্গা উৎসবকে ঘিরে মেতে উঠেছে উপজেলার সনাতন ধর্মালম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের শিশু, তরুণ, যুবক ও বৃদ্ধারা। উপজেলার মন্ডবগুলোতে প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ হয়েছে। প্রতিমা শিল্পীরা তাদের মেধা ও প্রজ্ঞাদিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে মা দেবী দুর্গার মূর্তি। শেষ তুলির আঁচড় দিয়ে মাকে সাজাতে মহাব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের চৌগাছা উপজেলা সভাপতি অধ্যক্ষ বলায় চন্দ্র পাল জানান, হিন্দুধর্ম বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সম্প্রদায়। হিন্দুদের বৃহত্তম উৎসব হওয়ার জন্য তাই ভারতের মতো বাংলাদেশে গ্রাম ও শহরে কয়েক হাজার দুর্গাপূজা আয়োজিত হয়।

আরো পড়ুন:
দুমকিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু!
ফেন্সিডিলসহ আটক ২

তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের চৌগাছা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ফুলসারায় ৩টি, পাশাপোলে ৩ টি, সিংহঝুলীতে ২টি, ধুলীয়ানীতে ১টি, চৌগাছায় ৪টি, পাতিবিলায় ২টি, জগদিশপুরে ৪টি, হাকিমপুরে ৪টি, নারায়নপুরে ২টি, স্বরুপদহে ৭টি, সুখপুকুরিয়ায় ৬টি ও পৌর এলাকার ৯ টি ওয়ার্ডে ৬ টি মিলে মোট ৪৪ টি পূজা মন্ডবে প্রতিমা স্থাপন করে দূর্গা পূজার সকল প্রস্ততি ইতি মধ্যে শেষ হয়েছে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের চৌগাছা উপজেলা সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ মিশ্র জয় জানান, দূর্গা পূজার আনন্দকে উপভোগ করতে সরকার প্রতিমা তৈরীর জন্য প্রতি মন্ডবে ৫শ কেজি চাউল বরাদ্দ দিয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ হাজার টাকা।

উপজেলার কেন্দ্রীয় কালি মন্দীরে সরকারি অনুদান দেওয়া হয়েছে ৫শ কেজি চাউল। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছর ও পৌর এলাকার কালিতলা কালিমন্দির, সরদার পাড়া শশ্মানঘাট মন্দির, ঋষিপাড়া বড় মন্দির, নিরিবিলি পাড়া সার্বজনিন কালি মন্দিরে শারদীয় দূর্গা পূজা ব্যাপক উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে পূজা উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মালম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের জামাই-মেয়েদের মধ্যে বইছে হাঁসি-আনন্দের ফোঁয়ারা।

তারা নতুন পোষাক কিনে আত্মীয়-স্বজন বাড়ীতে বেড়াতে এসেছে। চৌগাছা পৌর শহর নানা রকম ব্যানার, রঙ্গীন লাইটিং ও তোরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে। বিশেষ করে ধর্মীয় উৎসবের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে পারিবারিক ও অন্যান্য সামাজিক সম্মিলন, কেনাকাটা ও উপহার প্রদান, উপবাস, মণ্ডপ দর্শন, আলোকসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রতিমা বিসর্জন ইত্যাদির মাধ্যমে এই বড় শারদীয় দূর্গা পূজার উৎসবটি আমরা পালন করে থাকি।

উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা ইসতিয়াক আহমেদ জানান, উপজেলার ৪৪টি পূজা মন্ডবের জন্য সরকারি ভাবে মন্ডব প্রতি ৫শ কেজি হারে ২২ হাজার কেজি চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহদাকার শারদীয় দূর্গা পূজার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থির ব্যাপারে চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ রিফাত খান রাজিব জানান সনাতন ধর্মালম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা পালনে সারা চৌগাছা কঠোর নিরাপত্তার চাঁদরে ঢেকা থাকবে। নিরাপত্তা প্রদান করতে ইতি মধ্যে আমরা সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।

অক্টোবর ০১, ২০১৯ at ১৪:৩৩:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/মোমই/এএএম