নুসরাত হত্যা মামলার রায় ২৪ অক্টোবর

ফেনীর আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায় ঘোষণার জন্য ২৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত। রোববার বিকালে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ দিন ধার্য করেন।

রোববার সকাল থেকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আসামিপক্ষের আইনজীবীদের অভিযোগ খণ্ডন করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের যুক্তিতর্ক শেষে তা খণ্ডনের জন্য রোববার দিন ধার্য করেন আদালত। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট হাফেজ আহমেদ এ তথ্য জানান।

আদালতে আসামিদের অপরাধ প্রমাণ হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘সোমবার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলার সার্বিক আইনি ব্যাখ্যা দেয়া হয়। আশা করি, আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী মাহফুজুল হক বলেন, ‘মামলায় দুর্বল সাক্ষী ও বেশকিছু অসঙ্গতি’ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি আসামিরা খালাস পাবেন।

মামলার বাদী ও নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, নুসরাতকে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। তাই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশা করছি।

আদালত সূত্র জানায়, ২৯ মে এ মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (পিবিআই)।

আরো পড়ুন:
ক্যাসিনো সেলিমের ‘প্রধান হাউজে‘ অভিযান
যশোর পৌরসভায় যুক্ত হচ্ছে আরো ছয় ইউনিয়ন

চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামির মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ৩০ মে মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ১০ জুন আদালত মামলাটি আমলে নিলে শুনানি শুরু হয়।

২০ জুন অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত। ২৭ ও ৩০ জুন মামলার বাদী নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানকে জেরার মধ্য দিয়ে বিচার কাজ শুরু হয়। এরপর ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দেন আদালতে।

প্রসঙ্গত, সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান ওরফে রাফিকে গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষা কেন্দ্রে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন থেকে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়। পুলিশ ও পিবিআই এ মামলায় ২২ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে ১২ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পাঁচজনকে চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়।

এর আগে গত ২৭ মার্চ নিজ কক্ষে ডেকে নুসরাতকে শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজউদৌলা। এ ঘটনায় নুসরাতের মা বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করলে পুলিশ সিরাজউদৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। ওই মামলা তুলে না নেয়ার কারণে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় নুসরাতকে।

অক্টোবর ০১, ২০১৯ at ০০:০৮:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/নস/এএএম